বাণিজ্য ঘাটতি ২ লাখ ১৫ হাজার কোটিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে গত নয় মাসে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪৯০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি অর্থে যার পরিমাণ (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা) ২ লাখ ১৫ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
আমদানিতে জোয়ারের পাশাপাশি বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্য, জ্বালানিসহ সব ধরনের পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাণিজ্য ঘাটতি এতো পরিমাণ বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরের এই নয় মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৫ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার। আর পুরো অর্থবছরে এই ঘাটতি ছিল ২২ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। সে হিসেবে গত অর্থবছরের পুরো সময়ের (১২ মাস, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন) চেয়েও ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি। আর জুলাই-মার্চ সময়ের চেয়ে বেশি প্রায় ৬৪ শতাংশ।
জুলাই-মার্চ সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ ১৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে ১৪ দশমিক শূন্য সাত বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক মাত্র ৫৫ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ঘাটতি ছিল।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই কোনো বছর বা অর্থবছরে এত বিশাল অঙ্কের বাণিজ্য ঘাটতির মুখে পড়েনি বাংলাদেশ। আর এর ফলে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যেও (ব্যালান্স অফ পেমেন্ট) বড় ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক রোববার বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায় ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে ৬ হাজার ১৫২ কোটি ৪০ লাখ (৬১.৫২ বিলিয়ন) ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরের এই নয় মাসে ৪২ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল।
অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে ৩৬ দশমিক ৬১ বিলিয়নন ডলার আয় করেছেন রপ্তানিকারকরা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩২ দশমিক ৯২ শতাংশ বেশি।
এ হিসাবেই অর্থবছরের নয় মাসে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।