আজ: বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ইং, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২১ মে ২০২২, শনিবার |

kidarkar

গ্যাস বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী: এফবিসিসিআই’র সভাপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: কোভিড মহামারি এবং রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বেড়েছে। একই সঙ্গে শিপিং ও পরিবহন ব্যয় বাবদও বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। যে কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় রাপ্তানিমুখী খাতের জন্য বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে তা অর্থনীতির জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে বলে মনে করে এফবিসিসিআইর সভাপতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।

শনিবার এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আপাতত গ্যাস এবং বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলেন এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বিদ্যুতের প্রস্তাবিত ট্যারিফ বৃদ্ধির আবেদনে দাম বাড়ানোর অর্থনৈতিক প্রভাব পূর্ণাঙ্গরুপে বিশ্লেষণ করা হয়নি। যে কারণে বিইআরসি আইন অনুযায়ী এই আবেদন ত্রুটিপূর্ণ। তাই এই আবেদন বিবেচনা করা উচিত নয়। কোভিড মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। এ কারণে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো যৌক্তিক হবেনা বরং বিদ্যুৎ খাতের তহবিল থেকে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেন সভাপতি। আপাতত গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব স্থগিত করে বিরাজমান বৈশ্বিক সংকটময় পরিস্থিতি প্রশমিত হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার সুপারিশ করেন মোঃ জসিম উদ্দিন। এতে সাধারণ জনগনের স্বস্তির পাশাপাশি শিল্পখাতের সক্ষমতা বজায় থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এসময় তিনি বলেন, ওভার ক্যাপাসিটি, কম দক্ষতা সম্পন্ন তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিদ্যুৎখাতের বড় সমস্যা। দাম না বাড়িয়ে এসব সমস্যার সমাধান ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান সভাপতি।

একই সঙ্গে সরবরাহ মূল্য বিদ্যমান হারে বজায় রেখে বাড়তি ব্যয় সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে সমন্বয় করার প্রস্তাব করেন মোঃ জসিম উদ্দিন। এছাড়াও জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় আমুল সংস্কার, অনিয়ম, অপচয়, অবৈধ সংযোগসহ যাবতীয় অপব্যবস্থার নিরসন, অদক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করা, অতিরিক্ত ৩০% রিজার্ভ বিদ্যুতের সংস্থান করে অতিরিক্ত উৎপাদন বন্ধ করে অহেতুক খরচ কমিয়ে আনা, ক্যাপাসিটি চার্জ বাতিল করে অলস উৎপাদনকারীকে অর্থ পরিশোধ বন্ধ করা, ভর্তুকি প্রাপ্ত জ্বালানি খাতের ওপর শুল্ক মূসক প্রত্যাহার বা প্রয়োজনে ন্যূনতম শুল্ক আরোপ করা, সকল খাতের জন্য গ্যাসের সাধারণ হার নির্ধারণের সুপারিশ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

এসময় তিনি এসডিজি-৭ অনুযায়ী সুলভ, উন্নত নিরবচ্ছিন্ন ও টেকসই জ্বালানি ও বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে ২০ বছর মেয়াদী রোডম্যাপ প্রণয়নের আহ্বান জানান।
এফবিসিসিআই’র পরিচালক ও বিসিআই সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, বর্তমান ডলার সংকটের এই সময়ে স্থানীয় শিল্পের সক্ষমতা বেশি প্রয়োজন। এমন মুহুর্তে বিদ্যুতের দাম বাড়ালে বেশিরভাগ টেক্সটাইল কারখানা মুখ থুবড়ে পড়বে। যা কর্মসংস্থান ও অর্থনীতির জন্য আত্মঘাতী হবে।
এফবিসিসিআই পরিচালক ও বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতেই এই সংকটময় মুহুর্তে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মেদ হাতেম জানান, রপ্তানিখাত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। এমন অবস্থায় বিদ্যুতের দাম বাড়লে এই প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে।
সংবাদ সম্মেলেন আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মানোয়ার হোসেন, নাসিব এর সভাপতি মীর্জা নুরুল গণী শোভন ও রিহ্যাবের সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন।

এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সহ-সভাপতি মোঃ আমিন হেলালী, সালাহউদ্দিন আলমগীর, মোঃ হাবীব উল্ল্যাহ ডন ও অন্যান্য পরিচালকবৃন্দ।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.