বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ
এ জেড ভূঁইয়া আনাস: আমদানি ব্যয় যে হারে বাড়ছে সে তুলনায় রপ্তানি ও রেমিট্যান্স থেকে বৈদেশিক মুদ্রার আয় কম হওয়ায় রিজার্ভ কমতে থাকে প্রতিনিয়ত। গত আগস্টে রিজার্ভ বেড়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেলে গত ৯ মে রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৪৪ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলারে। আর ১০ মে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) প্রায় ২২৪ কোটি ডলার পরিশোধের পর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৪১.৯৫ বিলিয়ন ডলারে।
বড় আমদানি ব্যয় পরিশোধের কারণে কমে যাওয়া রিজার্ভ আবারও ছয় কার্যদিবসের মধ্যে আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ আবার ৪২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। রিজার্ভে নতুন করে ২ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার যুক্ত হওয়ায় ‘বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২.২১ বিলিয়ন ডলারে।’ তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএ’র হিসাব পদ্ধতি অনুসরণ করলে দেশের রিজার্ভ আরও কমে আসবে। যদিও সংস্থাটির হিসাব পদ্ধতি অনুসরণ না করে বিদ্যমান নিয়মেই হিসাব চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন মতে, রিজার্ভ থেকে দায় পরিশোধের পর কিছু অর্থ যোগ হয়েছে। প্রায় ছয় কার্য দিবস পরে রিজার্ভে ২.৬ মিলিয়ন ডলার যুক্ত হয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২.২১ বিলিয়ন ডলারে। এ রিজার্ভ দিয়ে আগামী ছয় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ বেড়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাঁড়িয়েছিলো। চলতি মাসের ৯ তারিখে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) পরিশোধের পর রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৪৪.১১ বিলিয়ন ডলারে। আকু প্রায় ২২৪ কোটি ডলার পরিশোধের পর ১০ মে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৪১.৯৫ বিলিয়ন ডলারে।
এদিকে চলতি মে মাসের প্রথম ১২ দিনে বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিটেন্স এসেছে ৮৩৬ দশমিক ১৯ মিলিয়ন বা ৮৩ কোটি ৬১ লাখ ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় (এক ডলার সমান ৮৭.৫০ পয়সা ধরে) ৭ হাজার ৪১৬ কোটি টাকা। মে মাসে দৈনিক গড়ে ৬৯.৬৮ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে। এসময়ে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব (১০৫ কোটি ১১ লাখ ডলার) থেকে, যা মোট রেমিটেন্সের ২০.৭৮ শতাংশ। এর পর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ১৬.২৮ শতাংশ, যুক্তরাজ্য ১১.৩৩ শতাংশ, আরব আমিরাত ৮.৯২ শতাংশ এবং কুয়েত থেকে ৭.৮৩ শতাংশ রেমিটেন্স এসেছে।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে রিজার্ভ নিয়ে আইএমএফ’র হিসাব পদ্ধতি মাো হবে না। সংস্থাটির হিসাব পদ্ধতি অনুসরণ করলে দেশের রিজার্ভ প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার কমে ৩৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে দাঁড়াবে। রিজার্ভের নিট ও গ্রস আলাদা হিসাব হয়। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের নিট হিসাব থেকে ইডিএফসহ অন্যান্য তহবিল বাদ যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জাানান, ১৯৮৯ সাল থেকে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলে অর্থ জোগান দিয়ে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যেখানে ওই সময় থেকে রিজার্ভের গ্রস হিসাবে দেখানো হচ্ছে। এর আগে এ পদ্ধতি নিয়ে আইএমএফ প্রশ্ন তোলেনি। আমাদের বিদ্যমান পদ্ধতি অনুসারেই রিজার্ভ হিসাবায়ন অব্যাহত থাকবে বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের এ কর্মকর্তা।
২০২১ সালের অক্টোবরে আইএমএফ’র একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে। পরে সংস্থাটির পক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংকে সেফগার্ড অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিলো। সেখানে রিজার্ভ হিসাবায়নে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের তারতম্য উল্লেখ করে চলতি বছর ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিরসনের সুপারিশ করা হয়। রেসিডেন্ট টু নন-রেসিডেন্ট অনুসারে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের হিসাবায়ন, সংকলন এবং রিপোর্ট পদ্ধতি সংশোধন করতে বলে সংস্থাটি।
আইএমএফ’র মতে, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইটিএফসি) আমানত রয়েছে যা রিজার্জে দেখানো হচ্ছে। রিজার্ভ হিসেবে এটি বিবেচিত হবে না। তবে গত বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আইএমএফ’কে চিঠি দিয়ে প্রাথমিকভাবে রিজার্ভের হিসাবায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন না আনার সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
Next Sri Lanka
টাকার মান কমেছে রিজার্ভ যদি বেড়ে থাকে তাহলে সরকার টাকার মান কমালো কেন?
টাকার মান কমেছে রিজার্ভ যদি বেড়ে থাকে তাহলে সরকার টাকার মান কমালো কেন? মনে হয় এটা সুভঙ্করের ফাঁকি। জাতির সাথে প্রতারণা করছে কর্তৃপক্ষ।