আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৫ জুলাই ২০২২, মঙ্গলবার |

kidarkar

দেশের প্রথম ডিজিটাল ক্রস-বর্ডার এলসি পাঠালো স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ সম্প্রতি দেশের প্রথম সম্পূর্ণ কাগজহীন ডিজিটাল ক্রস-বর্ডার এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) ট্রান্সমিশন সম্পন্ন করেছে। কাগজহীন এই এলসি ইস্যুর প্রথম আবেদন সম্পূর্ণ করে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর ক্লায়েন্ট হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ।

দেশের আমদানি নীতি আদেশের সাম্প্রতিক সংশোধনীর মাধ্যমে এই লেনদেন সম্ভব হয়েছে, যেখানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত নতুন আদেশ আনুযায়ী, গ্রাহকরা ব্যাংকের অনলাইন পোর্টাল ব্যবহার করে এলসি’র জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং এক্ষেত্রে আবেদন পত্রের কোন স্বাক্ষরিত ফিজিক্যাল কপি জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এর ফলে এলসি আবেদন প্রক্রিয়া আরও সহজ, দ্রুত ও কার্যকরী হবে এবং দেশে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহজতর হবে।

এই প্রসঙ্গে, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর সিইও নাসের এজাজ বিজয় বলেন, “অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে ও উত্পাদনশীলতা আরও উন্নত করার জন্য বাণিজ্য ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমদানি নীতি আদেশের এই যুগোপযোগী সংশোধনীর জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, আমদানি-রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রক, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ। এই সংশোধীত নীতি দ্বারা এখন অনলাইনে এলসি আবেদনের অনুমতি প্রদান সম্ভব, যা দেশের ডিজিটাল বাণিজ্যের জন্য একটি মাইলফলকস্বরূপ। ডিজিটাল এলসি আবেদনের ফলে আমাদের গ্রাহকরা বিভিন্ন নতুন সুবিধাও পাবেন।” তিনি আরও বলেন, “এর আগেও আমরা এই আমদানি নীতি সংশোধনের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিকট অনুরোধ জানাই এবং এখন তা মঞ্জুর করায় আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। গ্রাহকরা এখন আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্ম স্ট্রেইট-টু-ব্যাংক এবং ডিজিটাল ট্রেড কাউন্টার ব্যবহার করে বিশেষ সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।”

হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড-এর সিএফও জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “আমরা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড কর্তৃক জানতে পারি যে, আমদানি নীতি আদেশ সংশোধিত হয়েছে এবং এখন থেকে ব্যাংকের গ্রাহকরা অনলাইনের মাধ্যমে এলসি ইস্যু করতে পারবে। এটি সত্যিই আনন্দের সংবাদ, কারণ এখন ব্যাংকে এলসি’র জন্য আবেদন করা আরও সহজ হবে এবং স্বাক্ষরকারীদের সশরীরে উপস্থিত থাকারও প্রয়োজন হবে না। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর অনলাইন ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্ম স্ট্রেইট-টু-ব্যাংক-এ এলসি আবেদন করতে পেরে আমরাও ভীষণ আনন্দিত। এটি ব্যবহার করা খুবই সহজ এবং আমরা অল্প সময়ের মধ্যেই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড ও আবেদন করতে সক্ষম হই। একইসাথে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর ডিজিটাল ট্রেড কাউন্টারের মাধ্যমে আমরা সম্পূর্ণ লেনদেন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে পেরেছি, যা সত্যিই দুর্দান্ত ছিল। এটি নিঃসন্দেহে আমাদের দৈনন্দিন কাজ সহজতর করবে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের কর্মীদের ডিজিটাল এলসি আবেদনের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-কে অসংখ্য ধন্যবাদ। পাশাপাশি যুগোপযোগী এই সংশোধনীর জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, আমদানি-রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রক, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে বিশেষ ধন্যবাদ। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে সহজতর করতে এই পরিবর্তনটি আবশ্যক ছিল।”

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এশিয়া’র ডিজিটাল চ্যানেলস ও ডেটা অ্যানালাইটিকস-এর কো-হেড এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর স্ট্যানলি সিয়া বলেন, “বাণিজ্য ব্যবস্থা আধুনিকীকরণের জন্য বাংলাদেশের বাজার এর অপার সম্ভাবনার কারণে সর্বদাই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড কর্তৃক অগ্রাধিকার পেয়ে এসেছে। আমরা দীর্ঘদিন যাবত এই আমদানি নীতি আদেশের সংশোধনীর অপেক্ষায় ছিলাম। আমার বিশ্বাস, এই পরিবর্তন বাংলাদেশের বাণিজ্যকে বিশ্বব্যাপী আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে ইতিবাচক ও বৃহৎ একটি পদক্ষেপ। আমাদের লক্ষ্য একটি বিশ্বমানের ডিজিটাল-ফার্স্ট ও ডেটাচালিত আর্থিক পরিষেবা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যার দ্বারা বিশ্বব্যাপী আমাদের গ্রাহকদের সেবা নিতে পারবেন। আমাদের বাংলাদেশি গ্রাহকদের ডিজিটাল ট্রেড প্রক্রিয়াকে আরও সহজতর করতে এবং উদ্ভাবন চালিয়ে যেতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের ডিজিটাল সল্যুশন রেঞ্জ গ্রাহকদের বাণিজ্যিক অভিজ্ঞতাকে আরও সহজ করে তোলে। এর মাধ্যমে গ্রাহকরা অনলাইনে পণ্য অর্ডার করতে পারবেন এবং সেক্ষেত্রে ব্যাংকের অনলাইন ড্রপ-অফ কাউন্টার, ডিজিটাল ট্রেড কাউন্টার ব্যবহার করতে পারবেন। অনলাইন বাণিজ্য সুবিধার মধ্যে রয়েছে ডকুমেন্ট-হ্যান্ডলিং টাইম কমানো, রিয়েল টাইম লেনদেন ট্র্যাকিং এবং নিরাপদ ও পরিষ্কার কর্মপ্রবাহ।

দীর্ঘ ১১৭ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রম পরিচালনাকারী স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-ই দেশের একমাত্র বহুজাতিক ব্যাংক। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবহন এবং নগর উন্নয়নে বিনিয়োগ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে দেশের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে ব্যাংকটি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। গত বছর, সকল প্রকার আমদানি-রপ্তানি অর্থায়নের এবং বিদেশী ব্যাংক দ্বারা বিদ্যুৎ উৎপাদনের অর্থায়ন ও এসএমই ঋণ নিশ্চিতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। একইসাথে কার্ডের মাধ্যমে ব্যয় ও ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং অসংখ্য উদ্ভাবনী পণ্য বাজারে আনার মাধ্যমে রিটেইল ফাইন্যান্সিংয়ে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে ব্যাংকটি। বিগত বছরগুলোয় বাংলাদেশে প্রথম গ্রীন বন্ড, প্রথম গ্রীন জিরো-কুপন বন্ড, প্রথম কার্বন নিরপেক্ষ ক্রেডীট কার্ড, প্রথম নির্ভরতা-ভিত্তিক ব্যাংকিং সল্যুশন, প্রথম টেকসই ট্রেড ফাইন্যান্স লেনদেন-এর মতো অসংখ্য ‘প্রথম’-এর সূচনায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড।

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.