বাগদাদে রাজনৈতিক সহিংসতায় ২০ জন নিহত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরাকের রাজধানী বাগদাদে রাজনৈতিক সহিংসতায় ২০ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির অন্যতম প্রধান রাজনীতিক এবং শিয়া নেতা মোকতাদা আল-সদর রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার পর সেখানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সহিংসতায় নিহত ২০ জনই মোকতাদা আল-সদরের সমর্থক বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে সহিংসতার সময় সোমবার (২৯ আগস্ট) বাগদাদের উচ্চ-নিরাপত্তা বলয় গ্রিন জোনকে লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণের ঘটনাও ঘটে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
ইরাকে প্রায় ১০ মাস আগে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও রাজনৈতিক বিরোধের কারণে এখন পর্যন্ত দেশটিতে নতুন সরকার গঠন করা সম্ভব হয়নি। মোকতাদা আল-সদরের দল সদর মুভমেন্টের কিছু দাবির কারণে সরকার গঠনে বিলম্ব হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে মোকতাদা সদর সোমবার এক বিবৃতিতে রাজনীতি থেকে চিরতরে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দেন। এমনকি নিজের সকল রাজনৈতিক কার্যালয় ও সেগুলোর কার্যক্রমও বন্ধের ঘোষণা দেন তিনি।
তার দাবি, তিনি কখনোই নেতৃত্ব এবং ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের দাবিদার ছিলেন না। তাই চিরদিনের জন্য রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। অবশ্য নয় বছর আগেও একবার রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন সদর। তবে পরে আবারও তিনি রাজনীতিতে ফিরে আসেন।
এএফপি বলছে, বাগদাদজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর কমপক্ষে সাতটি শেল উচ্চ-নিরাপত্তা বলয় গ্রিন জোনের মধ্যে পড়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি নিরাপত্তা সূত্র সোমবার গভীর রাতে জানিয়েছে। বাগদাদের এই অংশে সরকারি বিভিন্ন ভবন এবং কূটনৈতিক মিশন রয়েছে।
অবশ্য গ্রিন জোনে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গুলি চালানো এবং গোলাবর্ষণের পেছনে কারা ছিল তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়। নিরাপত্তা সূত্রটি বলেছে, সদরের সমর্থকরা বাইরে থেকে গ্রিন জোনে গুলি চালায় এবং এর প্রতিক্রিয়ায় ভেতরের নিরাপত্তা বাহিনী কোনো ‘জবাব দেয়নি’।
এদিকে বাগদাদের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে প্রাথমিকভাবে একজন এএফপি সংবাদদাতা জানিয়েছিলেন, সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর মোকতাদা আল-সদরের ১৫ সমর্থককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া গুলিবিদ্ধ এবং টিয়্যার গ্যাসের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়াসহ এদিন ৩৫০ জন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।
পরে নিহতের সংখ্যা ২০ বলে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে নিশ্চিত করেছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সহিংসতার সময় সদরের অনুগত এবং প্রতিদ্বন্দ্বী শিয়া ব্লকের সমর্থকদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। সদর-বিরোধী প্রতিদ্বন্দ্বী শিয়া ব্লকের দলগুলো ইরানপন্থি বলে পরিচিত।
ইরানপন্থি এই সমন্বয় ফ্রেমওয়ার্ক ‘রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর আক্রমণ’ চালানোর নিন্দা করেছে এবং একইসঙ্গে সদরের সমর্থকদের ‘সংলাপে’ বসারও আহ্বান জানিয়েছে।
পরে স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ৭টা থেকে দেশব্যাপী কারফিউ ঘোষণা করে ইরাকের সামরিক বাহিনী।