দুই-তিন মাসে বাজার স্থিতিশীল হওয়ার সম্ভাবনা নেই : দেবপ্রিয়
নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী দুই-তিন মাস নয়, ২০২৩ কিংবা ২০২৪ সালের আগে দেশের চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভালো হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, যারা বলছেন, আগামী দুই-তিন মাসে মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে, এটা ঠিক না। বরং সরকারের কর্মকর্তাদের এসব চটজলদি বক্তব্য বাজার আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘ইআরএফ ডায়ালগ’ অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামে সঞ্চালনায় ডায়ালগে উপস্থিত ছিলনে ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী।
এক প্রশ্নের জবাবে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো বলেন, বিশ্বব্যাপী এখন মূল্যস্ফীতি। মন্দা বাজারে বেড়েছে তেলের দাম, খাদ্যের সংকট বাড়ছে। বাড়ছে ডলারের দাম, কমেছে টাকার মান। অথচ সরকার এগুলো কমাতে যে সমন্বিত উদ্যোগ দরকার তা করছে না।
তিনি বলেন, ধনী গরিবের বৈষম্য আরও বেশি বাড়ছে। এতদিন যেটা ছিল ভোগ-বৈষম্য, এখন সেখান থেকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং রাজনৈতিক বৈষম্য আরও বেশি বাড়ছে। এখন সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে চাপে আছে, সংকটে নেই— উল্লেখ্য করে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এই চাপকে অস্বীকার করে, অবহেলা করে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত না নিলে এই চাপ সংকটে পরিণত হবে।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, সরকার রাজনৈতিক ঘাটতি ঢাকতে দৃশ্যমান প্রকল্প হাতে নেয়। গত কয়েক বছরে সরকারের পক্ষ থেকে ভৌত অবকাঠামোতে যে পরিমাণ ব্যয় করা হয়েছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সে পরিমাণ মনোযোগ দেয়া হয়নি। ২০টি মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নের পর তা রক্ষণাবেক্ষণ করতে হলে আমাদের দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন হবে। আর এজন্য আমাদের শিক্ষা খাতের যেমন প্রয়োজন রয়েছে তেমনি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে স্বাস্থ্য খাতের।
দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামোর সার্বিক উন্নয়নের বিভিন্ন বিচ্যুতি তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, ডিএফআইয়ের মাধ্যমে প্রাথমিক লুণ্ঠন হয়েছিল, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার হল লুণ্ঠন করার দ্বিতীয় উৎস। অনেক ক্ষেত্রে অস্তিত্ববিহীন কোম্পানিকেও পুঁজিবাজারের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ তরল টাকা দেওয়া হয়েছিল। এরপর ১৯৯৬ সালে আইপিওর মাধ্যমে জ্ঞান মানহীন কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করা হয়। যার ফলে পুঁজিবাজারেও বিচ্যুতি ঘটেছে। এখনও অনেক কোম্পানি বাজারে আছে বা ছিলো যারা বিনিয়োগকারীরদের অর্থ লুণ্ঠন করে চলে গেছে। আমি নাম বলবো না এখনও এসব প্রতিষ্ঠানে অনেকের বিনিয়োগ রয়েছে। এসব বিচ্যুতির কারণেও দেশের অর্থনীতির ঘুরে দাড়ানোর পথে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাড়িয়েছে।