অর্থবছরের প্রথম মাসেই বাণিজ্য ঘাটতি ১৮,৮১৯ কোটি টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক: আমদানিতে লাগাম টানলেও কমছে না বাণিজ্য ঘাটতি। কারণ তুলনামূলকভাবে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বাড়েনি। ফলে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) ১৮ হাজার ৮১৯ কোটি টাকার বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। রোববার (৪ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই মাসে ৫৮৬ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। এর বিপরিতে রপ্তানি হয়েছে ৩৮৮ কোটি ডলারের পণ্য। ফলে ১৯৮ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি এক ডলার ৯৫ টাকা ধরে) এর পরিমাণ ১৮ হাজার ৮১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। যা গত অর্থবছরের (জুলাই) একই সময়ের চেয়ে ৬২ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেশি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পণ্য আর সেবা আমদানি ব্যয়ের বিপরীতে রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্সের জোগান সেভাবে না বাড়ায় ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে।
জুলাই মাসে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার। মূলত বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয়।
আমদানি বাড়ায় বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (কারেন্ট একাউন্ট ব্যালান্স) ঘাটতির মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। জুলাই মাসে এই ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩২ কোটি ১০ লাখ ডলার। অথচ গত বছরের একই সময়ে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক ২৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার ছিল।
মহামারির মধ্যেও গত জুলাই মাসে ২০৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আগের বছর পাঠিয়েছিলেন ১৮৭ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১২ শতাংশ। অর্থনীতির সূচকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থায় ছিল এই সূচক। সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যেও ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। জুলাই মাস শেষে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১০৮ কোটি ডলার। অথচ গত বছরের মাসে ঘাটতি ছিল ৩১ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে বৈদেশীক বিনিয়োগ বেড়েছে ৩০ শতাংশ। গত জুলাই মাসে ৩৯ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছেন বিদেশী উদ্যোক্তারা। তবে গত বছরের একই সমেয় এর পরিমান ছিল ৩০ কোটি ডলার।
তথ্য মতে, ২০২১-২০২২ অর্থবছর শেষে ৩৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায় বাণিজ্য ঘাটতি। এ বাণিজ্য ঘাটতি আগের রেকর্ডকে পেছনে ফেলে দেয়। একই অর্থবছরে দেশের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যেও ইতিহাস সর্বোচ্চ সাড়ে ১৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঘাটতি হয়েছিলো। আমদানি পণ্যের পরিমাণ এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে অতিমাত্রায় ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণেই অর্থবছর শেষে এমন দুই রেকর্ডের চাপে পড়ে দেশ।