মূলধন ঘাটতিতে ১২ ব্যাংক
এ জেড ভূঁইয়া আনাস: ব্যাংকিং খাতের এক-চতুর্থাংশের বেশি সংখ্যক ব্যাংক ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত হিসাবে দেশের সরকারি বেসরকারি ১২ ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্র্রায়ত্ত ৫টি, বেসরকারি ৫টি ও বিশেষায়িত খাতের দুটি ব্যাংক রয়েছে। ব্যাংকগুলোর ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। আগের প্রান্তিকে ১০ ব্যাংকের প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি ছিল।
জানা গেছে, আন্তর্জাতিক নীতিমালার আলোকে ব্যাংকগুলোকে মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাসেল-৩ নীতিমালার আলোকে ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ অথবা ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে যেটি বেশি- সে পরিমাণ মূলধন রাখতে হচ্ছে। কোনো ব্যাংক এ পরিমাণ অর্থ সংরক্ষণে ব্যর্থ হলে মূলধন ঘাটতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের জোগান দেওয়া অর্থ ও মুনাফার একটি অংশ মূলধন হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। কোনো ব্যাংক মূলধনে ঘাটতি রেখে তার শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে পারে না।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও যোগসাজশের মাধ্যমে বের করা ঋণ যথাসময়ে ফেরত আসছে না। ফলে নির্দিষ্ট সময় পর এসব ঋণের বড় অংশই খেলাপি হয়ে পড়ছে। এর বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। বাড়তি অর্থ জোগাতে হাত দিতে হচ্ছে মূলধনে। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে সংকট।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুনে মূলধন সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে রাষ্ট্র্রায়ত্ত ৫টি, বেসরকারি ৫টি ও বিশেষায়িত খাতের দুটি ব্যাংক রয়েছে। আগের প্রান্তিকে মূলধন সংকটে থাকা ১০ ব্যাংকের মধ্যে ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত ৫টি, বেসরকারি ৩টি ও বিশেষায়িত ২টি।
গত জুন শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা। এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে নতুন করে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ১১ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। শুধু পরিমাণের দিক থেকেই নয়, শতাংশ হিসাবেও এ সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। গত মার্চে খেলাপি ঋণের হার ছিল ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ, যা জুনে বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। অন্যদিকে, জুন শেষে ঋণমান অনুযায়ী প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে ৯ ব্যাংক। এ তালিকায় ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ও বেসরকারি ৫টি। এসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা।