আজ: রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩ইং, ১৯শে চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ৯ই রমজান, ১৪৪৪ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, সোমবার |


kidarkar

ইতিহাস গড়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলার বাঘিনীরা


স্পোর্টস ডেস্ক :

ভারতের মতো শক্তিশালী দলকে যখন গ্রুপ পর্বে হারিয়েছিল, তখনই বলা যায় চ্যাম্পিয়নের অঘোষিত মুকুটটি পরে নিয়েছিল বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা। বাকি ছিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা। এই আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার সর্বশেষ বাধা ছিল স্বাগতিক নেপাল। যাদের এর আগে সাফ ফুটবলে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ।

কিন্তু যে দলটি ফাইনাল পর্যন্ত আসার পথে চার ম্যাচে গোল দিয়েছে ২০টি, সে দলটির সামনে ফাইনালে কে খেলছে সেটা যেন কোনো বিষয়ই ছিল না। যদিও ফাইনালে আসার আগ পর্যন্ত কোনো গোল হজম করেনি বাংলাদেশ এবং নেপাল কেউই। আবার দুই দেশের সামনেই ছিল ইতিহাস গড়ার সুযোগ- প্রথমবারের মতো নারী সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন।

ফাইনালে শিরোপা লড়াইয়ে এসে শক্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন বাংলাদেশের মেয়েরাই। পুরো ম্যাচে উপভোগ্য ফুটবল উপহার দিয়েছে দুই দলই; কিন্তু গোলের খেলায় সাবিনাদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি স্বাগতিক নেপাল। শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলে তাদের হারিয়েই নারী ফুটবলে ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো নারী সাফের শিরোপা জিতলো সাবিনা-কৃষ্ণারা।

নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকেল সোয়া ৫টায় শুরু হয় ফাইনালের শিরোপা লড়াই। প্রথমার্ধেই ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল সাবিনা খাতুনরা। দ্বিতীয়ার্ধে এসে প্রথমে একটি গোল হজম করে তারা। ম্যাচ পরিণত হয় ২-১ এ। এর কিছুক্ষণ পর আবারও গোল করে বাংলাদেশ এবং শিরোপা জয় নিশ্চিত করে নেয়।

বদলি খেলোয়াড় শামসুন্নাহার জুনিয়র এবং কৃষ্ণা রানী সরকারের গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ প্রাধান্য নিয়ে খেলেই প্রথমার্ধে ২ গোল দেয়।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করে স্বাগতিক নেপাল। যার ধারাবাহিকতায় ৭০ মিনিটে একটি গোল পরিশোধ করে ফেলে নেপাল। আনিতার দারুণ এক শট জড়িয়ে যায় বাংলাদেশের জালে।

তবে ২-১ গোলকে নিরাপদ মনে করেননি বাংলাদেশের মেয়েরা। যে কারণে আরও একটি গোল আদায়ের লক্ষ্যে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে খেলতে থাকে তারা। খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ৭৭তম মিনিটেই গোল আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। কৃষ্ণা রানী সরকারের দ্বিতীয় গোলে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ৩-১ ব্যবধানে।

প্রচুর বৃষ্টিতে দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামের মাঠ কাদায় ছুপছুপ। যে মাঠে ভালো ফুটবল খেলা কঠিন। এই প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশের মেয়েরা দারুণ ফুটবল খেলে বিজয়ের দিকে এগিয়ে যায়।

১৪ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় শামসুন্নাহার করেন প্রথম গোল। ব্যথা পেয়ে ১০ মিনিটে সিরাত জাহান স্বপ্না মাঠের বাইরে চলে গেলে তার পরিবর্তে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন মাঠে নামান শামসুন্নাহারকে।

আগের ম্যাচে স্বপ্না ব্যথা পেয়ে মাঠ ত্যাগ করলে কোচ মাঠে নামিয়েছিলেন রিতুপর্ণা চাকমাকে। কিন্তু ফাইনালে কোচ কৌশল পরিবর্তন করে মাঠে নামান শামসুন্নাহারকে। সেই শামসুন্নাহারই হয়ে গেলেন সুপার সাব। মনিকা চাকমার পাশ থকে দারুণ প্লেসিংয়ে ১৪তম মিনিটে গোল করেন তিনি।

গোল হজমের পর নেপাল ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে। কিছু সময় তারা বাংলাদেশের ওপর প্রভাব বিস্তারও করে। দুইবার ভালো দুটি সুযোগও আদায় করে নেয় স্বাগতিকরা।

win win

৩৫ মিনিটে আনিতার ফ্রি-কিক গোলরক্ষক রূপনা চাকমা ডান দিকে ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে দলকে রক্ষা করেন। ওই কর্নার থেকেই গোলমুখে জটলা হলে গোল প্রায় হজমই করে ফেলেছিল বাংলাদেশ; কিন্তু গোললাইন থেকে বল ক্লিয়ার করে দলকে বাঁচান মাসুরা পারভীন।

৪১ মিনিটে বাংলাদেশ ব্যবধান দ্বিগুণ করে কৃষ্ণা রানী সরকারের গোলে। নেপালের একটি ভুল পাস থেকে বলে পেয়েছিলেন সাবিনা। তিনি একটু ফাঁকায় দাঁড়ানো কৃষ্ণাকে পাস দিলে কোনো ভুল করেননি তিনি। নেপালের জালে বল পাঠিয়ে আনন্দ ছড়িয়ে দেন ডাগআউটে।

বাংলাদেশ একাদশ
রূপনা চাকমা, সাবিনা খাতুন, শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার, আঁখি খাতুন, মাসুরা পারভীন, মনিকা চাকমা, সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্ডা, কৃষ্ণা রানী সরকার ও সিরাত জাহান স্বপ্না (শামসুন্নাহার)।


আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.