প্রতিষ্ঠার পর থেকে পায়রা বন্দরে ব্যয় ৬৭৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা
প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত পায়রা বন্দরে অনুদান ও রাজস্ব বাজেটের আওতায় মোট ব্যয় হয়েছে ৬৭৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এই টাকার সিংহভাগই ব্যয় করা হয়েছে রাজস্ব খাতের অবকাঠামো নির্মাণ/উন্নয়নে। এ পর্যন্ত মোট ৮৯০টি (২৪৬টি বৈদেশিক ও ৬৪৪টি দেশীয়) জাহাজ বন্দরে ভিড়েছে। এ থেকে মোট রাজস্ব আয় হয়েছে ৫৮১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৪৮তম বৈঠকে এসব তথ্য জানানো হয়।
এর আগে সংসদীয় কমিটি পায়রা বন্দর স্থাপন এবং চালু করতে এ পর্যন্ত কী পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে এবং এর বিপরীতে কতটুকু অর্জন হয়েছে তা কমিটিকে জানানোর সুপারিশ করেছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, পায়রা বন্দর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রকল্পের আওতায় ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত মোট ৫,২২৮.৫৯ কোটি টাকা মূলধন হিসেবে বিনিয়োগ করা হয়েছে। উক্ত অর্থের মধ্যে মোট ১,৭৮৯.১৪ কোটি টাকা ৫,৩৯০ একর ভূ-সম্পত্তি অর্জনে ব্যয় করা হয়েছে। এর বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় তিনগুণ। দীর্ঘমেয়াদে বরাদ্দের এই ভূ-সম্পত্তির মূল্য আরও বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।
তাছাড়া প্রায় ৩৫০০ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে পুর্নবাসন ও প্রশিক্ষণে ব্যয় হয়েছে ৯০৫ কোটি টাকা। অবশিষ্ট ২,৫৩৪.৪৫ কোটি টাকার মধ্যে ৫.২০ কিলোমিটার দীর্ঘ ৪ লেন সংযোগ সড়ক নির্মাণ বাবদ ৩০৫.৭১ কোটি টাকা ব্যয় হয় যা বন্দরসহ স্থানীয় সব জনসাধারণ ব্যবহার করছে। তাছাড়া বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৮টি সহায়ক জলযান ক্রয় বাবদ ২৮০.৭৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয় যা প্রতিনিয়ত ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আয় হচ্ছে।
বাকি ১,৯৪৭.৯৭ কোটি টাকা ক্যাপিটাল ও মেইনটেনেন্স ড্রেজিং এবং মূল বন্দরের টার্মিনাল, ইয়ার্ড, সার্ভিস জেটি, ওয়্যারহাউজ ইত্যাদিসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে বিনিয়োগ করা হয়েছে। নির্মাণ শেষে এগুলোর যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে বন্দরভিত্তিক উল্লেখযোগ্য রাজস্ব আয় অর্জন করা সম্ভব হবে।
বৈঠকে পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেল থেকে ঢাকা পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ নৌ পথকে নিয়মিত ড্রেজিং করে লাইটার জাহাজ চলাচলের উপযোগী করার মাধ্যমে বন্দর থেকে ঢাকা, মুক্তারপুর, পানগাঁও ও আশুগঞ্জ কন্টেইনার ডিপোসহ সমগ্র বাংলাদেশের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের সুপারিশ করা হয়।
এছাড়া পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প এবং এর বাস্তবায়ন অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
কমিটির সভাপতি মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য মাহফুজুর রহমান, এম আব্দুল লতিফ, ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, মো. আছলাম হোসেন সওদাগর এবং এস এম শাহজাদা বৈঠকে অংশ নেন।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্মসচিব, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।