ইন্সুরেন্স কোম্পানীসহ জনস্বার্থ সংস্থাগুলির আর্থিক বিবরনী আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিবেদন স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে প্রস্তুত করা বাধ্যতামূলক
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে। তাই বীমা খাতে আর্থিক প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিবেদন স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী করা অপরিহার্য। ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট, ২০১৫ -এর অনুসারে জনস্বার্থ সংস্থাগুলির আর্থিক বিবরনী আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিবেদন স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে প্রস্তুত করা বা্ধ্যতামূলক। দ্য ইনস্টিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অফ বাংলাদেশ দেশের প্রধান অ্যাকাউন্টেন্সি সংস্থা হিসেবে এই স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী প্রস্তুত করতে সাহায্য করে আসছে। বাংলাদেশে এই স্ট্যান্ডার্ড -এর সফল বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে আইসিএবি।
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ রবিবার ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত “আইএফআরএস -বীমা চুক্তি: ওভারভিউ, ইমপ্লিমেন্টেশন চ্যালেঞ্জস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড” শীর্ষক সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা এইসব মতামত প্রদান করেন্ ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ জয়নুল বারী, চেয়ারম্যান, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মোঃ শাহাদাত হোসেন এফসিএ, সভাপতি-আইসিএবি এবং অধিবেশন পরিচালনা করেন মোঃ হুমায়ুন কবির এফসিএ, কাউন্সিল সদস্য ও সাবেক সভাপতি- আইসিএবি । সমাপনী বক্তব্য রাখেন আইসিএবি সহ-সভাপতি ফৌজিয়া হক এফসিএ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়াসেকুল হক রিগন, এমএসসি (এমবিএস, ইউকে), এফসিএ (আইসিএবি), এসিএ (আইসিএইডব্লিউ), পার্টনার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, চার্টার্ড। আইসিএবি সিইও শুভাশীষ বসু সূচনা বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে লাইফ ও নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পরিচালকগণ অংশগ্রহণ করেন এবং তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
বীমা উন্নয়ণ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা অধিক গুরুত্ব দিয়ে আইএফআরএস ১৭ পরিপালনে কাজ করবে। যতে করে আগামী বছর এই স্ট্যান্ডার্ড কার্যকর হওয়ার পরপরই বাংলাদেশের ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীগুলো আন্তর্জাতিক একাউন্টিং মান অনুসারে তাদের আর্থিক বিবরনী তৈরি করতে পারে।
মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, আইএফআরএস ১৭ পরিপূর্ণ পরিপালন করতে বীমা উন্নয়ণ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করবে। এটি তৈরিতে আইসিএবি, এফআরসি সহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সহযোগীতা কামনা করেন তিনি।
আইএফআরএস ১৭ পরিপূর্ণ পরিপালন করতে পারলে ইন্স্যুরেন্স খাতে স্বচ্চতা, জবাবদিহিতা বাড়াবে এবং এতে করে জনগণের আস্থা অর্জনে কোম্পানীগুলো সক্ষ্যম হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। দেশে ২০১০ সালে বীমা আইন হয়েছে। বীমা উন্নয়ণ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা এই আইন পরিপালনে বিধিমালা তৈরিতে কাজ করছে। তবে আইএফআরএস ১৭ ইন্স্যুরেন্স খাতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে সাহায্য করবে, তিনি মনে করেন। এর পনিপালনে এ চ্যালেঞ্জ আছে। সকলে মিলে কর্মপরিকল্পনা করে তা সমাধান করতে হবে।
আইসিএবি সভাপতি মোঃ শাহাদাত হোসেন এফসিএ বলেন, বীমা কোম্পানিগুলো আর্থিক বাজারে বড় বিনিয়োগকারী। সুতরাং, বীমাকারী এবং ব্যাংকের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংযোগ দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতার সুরক্ষা হিসাবে বিবেচিত হয়। তিনি বলেন, এই সেক্টরে অ্যাকাউন্টিং মান স্বচ্ছতা বৃদ্ধি সহ টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ডস বোর্ড আইএফআর এস বীমা চুক্তি” জারি করেছে যা ১ জানুয়ারী ২০২৩ থেকে বার্ষিক রিপোর্টিং তৈরিতে কার্যকর হবে।
তিনি আরও বলেন, আইএফআরএস ১৭ বীমাকারীদের আর্থিক অবস্থান এবং কর্মক্ষমতার স্বচ্ছতা এবং অন্যান্য বীমাকারীদের সাথে তাদের আর্থিক বিবরণীর তুলনামূলকতা বৃদ্ধি করবে। এই ধরনের তথ্য আর্থিক বিবৃতি ব্যবহারকারীদের জন্য একটি ভিত্তি দেয় যা সত্তার আর্থিক অবস্থান, আর্থিক কর্মক্ষমতা এবং নগদ প্রবাহের উপর বীমা চুক্তির প্রভাব মূল্যায়ন করে বলে তিনি মন্তব্য করেন।