পঞ্চগড়ে নৌকাডুবির ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩২
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার ঘাট এলাকায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও নারী উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে আরও অনেকে।
পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাহবুবুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার ভাটিতে দেবীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দুটি এবং আরও ৩৫ কিলোমিটার ভাটিতে দিনাজপুরের খানসামা ফায়ার সার্ভিস দল করতোয়ার জিয়া ব্রিজের কাছে আরও এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া ঘটনাস্থলের কাছাকাছি জালিয়াপাড়া এলাকা থেকে আরও একজনের লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। পরে আরও তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, নৌকাডুবির ঘটনায় গতকাল ২৫ এবং সোমবার সকালে এক শিশুসহ আরও সাত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদের মধ্যে ৩১ জনকে শনাক্ত করা গেছে। তাদের মধ্যে নারী ১৬, শিশু ১০ ও পুরুষ ৫ জন। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। ঘটনাস্থলের আশেপাশে দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবরি দলের তিনটি ইউনিট।
গতকাল বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের বরদেশ্বরী মন্দিরে (নদীর অপরপাড়ে) মহালয়া উপলক্ষে এক ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। এই ধর্মসভায় যোগ দিতে জেলার বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজন শ্যালো মেশিনচালিত নৌকাযোগে যাচ্ছিল। দুপুরের দিকে নদীর মাঝপথে অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে নৌকাটি উল্টে গিয়ে ডুবে যায়। সাঁতার জানা যাত্রীরা তীরে উঠে আসতে পারলেও সাঁতার না জানা নারী ও শিশুরা পানিতে ডুবে যায়। তাদের চিৎকারে এলাকার লোকজন ছুটে এসে অনেককে উদ্ধার করে। পরে জেলা, উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন এবং ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়।
মহালয়া উপলক্ষে এদিন অধিক মানুষের সমাগম ঘটে। চারটি নৌকা পারাপারের জন্য চলাচল করলেও অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে বিপুল সংখ্যক মানুষ নদী পার হতে অপেক্ষায় থাকে। ফলে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নৌকায় উঠলে মাঝ নদীতে নৌকা ডুবে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার সাথে সাথে উপস্থিত জনতা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে উদ্ধার অভিযান চালায়। মৃত ব্যক্তি সৎকারের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যেককে ২০ হাজার এবং আহতদের প্রত্যেককে ১০ হাজার করে টাকা প্রদানের ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক।