পাকিস্তানে বাসে আগুন লেগে ১২ শিশুসহ নিহত ১৮ জন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ সিন্ধের রাজধানী ও দেশটির বৃহত্তম শহর করাচিতে একটি বাসে আগুন লেগে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১২ জনই অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশু।
বুধবার রাতের দিকে করাচি শহরের বাইরে ঘটেছে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা। প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা এএফপিকে জানিয়েছেন, মহাসড়কে বাসটি স্বাভাবিকভাবেই চলছিল; হঠাৎ তারা বিকট শব্দে বিস্ফোলণের শব্দ শোনেন এবং দেখতে পান— বাসটিতে আগুন ধরে গেছে।
সিন্ধুর প্রাদেশিক সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা বিনোদ কুমার এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। বন্যার পানি নামতে শুরু করায় তারা করাচি থেকে নিজেদের গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন বলে এএফপিকে জানিয়েছে তিনি।
বিনোদ বলেন, ‘১২ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুসহ এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১৮ জন। বাসটির যাত্রীরা সবাই বন্যার করণে নিজেদের গ্রামের বাড়ি ছেড়ে করাচিতে আত্মীয় স্বজনের বাড়ি এবং শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন। গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় পানি নামতে শুরু করায় বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলেন তারা।’
ওই এলাকার পুলিশ কর্মকর্তা হাশিম ব্রোহি বলেন, ‘বাসটি প্রদেশের উত্তরদিকে যাচ্ছিল। প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হচ্ছে বাসটির এসি থেকেই এই বিস্ফোরণ ও আগুনের সূত্রপাত। তবে বিস্তারিত তদন্তের পর এ বিষয়ে আরও তথ্য জানা যাবে।’
চলতি বর্ষায় ব্যাপক বর্ষণ ও তার ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলীয় পার্বত্য এলাকার হিমবাহ গলে নজিরবিহীন বন্যা দেখা দিয়েছে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান, সিন্ধু ও খাইবার পাখতুনওয়া প্রদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। দেশটির মোট ভূমির এক তৃীতিয়াংশেরও বেশি এলাকা দীর্ঘদিন বন্যার পানি নিচে ছিল।
সরকারের হিসেবেই বন্যায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৭ শ’রও বেশি মানুষ। আর ব্যাপক এই বন্যায় গত কয়েকমাসে দেশটির কৃষি, যোগাযোগব্যবস্থাসহ বিভিন্ন খাতে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, আর্থিক হিসেবে তার পরিমাণ অন্তত ২ হাজার ৮০০ কোটি ডলার।
পাকিস্তানে অবশ্য সড়ক দুর্ঘটনারও দীর্ঘ হতাশাজনক ইতিহাস আছে। প্রতি বছরই দেশটিতে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে অনেক মানুষের প্রাণ যায়। মেয়াদোত্তীর্ণ ও আনফিট যানবাহন, বেহাল সড়ক যোগাযোগ ব্যাবস্থা, বেপরোয়া ড্রাইভিং এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মীদের যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাব এসব দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর জন্য দায়ী।