গ্রামীণফোনের ধারাবাহিক রাজস্ব প্রবৃদ্ধি অর্জন
নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২২ সালের প্রথম নয় মাসে ১১,২৮৬.৭৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে গ্রামীণফোন, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় তুলনায় ৫.৭ শতাংশ বেশি। তৃতীয় প্রান্তিকে, সেবার মান সংক্রান্ত কারণ দেখিয়ে সিম বিক্রির ওপর নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিষেধাজ্ঞার কারণে তৃতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোনের গ্রাহক কমেছে ২৯ লাখ। তৃতীয় প্রান্তিকের শেষে গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহক সংখ্যা দাড়িয়েছে ৮.১৮ কোটি, এর মধ্যে ৫৫.৬ শতাংশ অর্থাৎ ৪.৫৫ কোটি গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, “বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও শক্তিশালী বাজার কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি উচ্চ রাজস্ব ও সেবা ব্যবহারের কারণে গ্রামীণফোন এর প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে পেরেছে। উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগের চাহিদা মেটাতে এবং গ্রাহক অভিজ্ঞতার উন্নয়নে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারন এবং তরঙ্গ ব্যবহারে আমরা আমাদের নেটওয়ার্কে ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ করেছি। এর ফলে আমাদের ফোরজি সাইট সংখ্যা ১৯,১০০ উন্নীত হয়েছে। ফলশ্রুতিতে, আমাদের গ্রাহকরা যোগাযোগের ক্ষেত্রে তাদের পছন্দের পার্টনার হিসেবে গ্রামীণফোনকে বেছে নেয়া অব্যাহত রেখেছেন। গত বছরের থেকে ডেটা ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে ৫২.১ শতাংশ এবং বছরপ্রতি ফোরজি গ্রাহক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫.৯ শতাংশ এবং ফোরজি গ্রাহক সংখ্যা পৌঁছেছে ৩.২ কোটিতে।”
তিনি আরও বলেন, “জুনের শেষ থেকে সিম বিক্রির ওপর নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিষেধাজ্ঞার কারণে তৃতীয় প্রান্তিকে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে – প্রান্তিকের হিসাবে তুলনামূলকভাবে গ্রাহক সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ৩.৪ শতাংশ। এ নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে উঠতে আমরা নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রেখেছি। সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে এ নিষেধাজ্ঞার আংশিক প্রত্যাহার করা হয়। যার ফলে, আমরা সাথে সাথে আবার সিম বিক্রি শুরু করেছি। এছাড়াও, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি মূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বাংলাদেশ সামষ্টিক অর্থনীতি এবং জ্বালানি ব্যবহার হ্রাসে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ সহ নানা বিবিধ কারণে আমরা বাংলাদেশে সামষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে অস্থির অবস্থা প্রত্যক্ষ করেছি। আমরা এই বাহ্যিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার পাশাপাশি গ্রামীণফোন নেটওয়ার্কে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে যাবে; পাশাপাশি, গ্রামীণফোন বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে উদ্ভাবনেও জোর দেবে।”
গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা ইয়েন্স বেকার বলেন, “ভয়েস, ডেটা ও বান্ডল সেগমেন্টে কারণে টানা ছয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোন সামগ্রিক আয়ে প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে। তৃতীয় প্রান্তিকে মোট রাজস্বে ৬.৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যার ফলে এ প্রান্তিকে রাজস্ব আয় হয়েছে ৩,৮৬৪.৯৩ কোটি এবং গত বছরের চেয়ে গ্রাহক ও ট্র্যাফিক রাজস্ব বেড়েছে ৬.৯ শতাংশ। নেটওয়ার্ক বিস্তৃতি ও তরঙ্গ ব্যবহারে আমাদের বিনিয়োগের কারণে বছরপ্রতি হিসেবে ডেটা ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে ৫২.১ শতাংশ। এক্ষেত্রে, সক্রিয় ফোরজি গ্রাহকরা উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তিনি আরও বলেন, “এ প্রান্তিকে রাজস্বে প্রবৃদ্ধির কারণে ইবিআইটিডিএ বছরপ্রতি হিসেবে ৫ শতাংশ বেড়েছে এবং ইবিআইটিডিএ মার্জিন ছিলো ৬২.২ শতাংশ। তৃতীয় প্রান্তিকে ২৩.৫ শতাংশ মার্জিন নিয়ে কর পরবর্তী নিট আয় দাঁড়িয়েছে ৯০৭.৬৬ কোটি।“
২০২২ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে গ্রামীণফোন লিমিটেড ২৭৮.১৫ কোটি টাকা নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নে ও সম্প্রসারনে বিনিয়োগ করেছে। এ প্রান্তিক শেষে গ্রামীফোনের মোট নেটওয়ার্ক সাইটের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৯,৭১৯। প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালের প্রথম নয় মাসে কর, ভ্যাট, শুল্ক, ফি, ফোরজি লাইসেন্স এবং তরঙ্গ বরাদ্দ বাবদ ৭,৮৫০ কোটি টাকা সরকারি কোষগারে জমা দিয়েছে, যা এর মোট রাজস্বের ৬৯.৫ শতাংশ।