আজ: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৩ ডিসেম্বর ২০২২, শনিবার |

kidarkar

ব্রাজিলকে হারিয়ে চমকে দিলো ক্যামেরুন

স্পোর্টস ডেস্ক: ক্যামেরুনের রক্ষণভাগে একের পর এক আক্রমণ করে গেছে ব্রাজিল। কিন্তু বলটি কিভাবে প্রতিপক্ষের জালে প্রবেশ করাতে হবে, সেটাই যেন জানে না তারা। সব মিলিয়ে অন্তত ২৯বার ক্যামেরুনের জালে গোল দেয়ার চেষ্টা করেছে সেলেসাওরা। কিন্তু একবারও পারলো না আফ্রিকান দেশটির জালে বল প্রবেশ করাতে।

উল্টো ইনজুরি সময়ে ভিনসেন্ট আবু বকরের গোলে ১-০ ব্যবধানে ক্যামেরুনের কাছে হেরেই গেলো ৫ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। যদিও ব্রাজিলকে হারিয়ে ক্যামেরুনের কোনোই লাভ হলো না। অন্য ম্যাচে সার্বিয়াকে ৩-২ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করেছে সুইজারল্যান্ড।

৮৬তম মিনিটে মাঠে নেমেছিলেন এনগোম এমবেকেলি। ৯২তম মিনিটে (৯০+২ ইনজুরি সময়) তিনি ডান প্রান্ত থেকে বল নিয়ে এগিয়ে আসেন এবং অসাধারণ একটি ক্রস করেন ব্রাজিলের গোলমুখে। ভিনসেন্ট আবুবকর দৌড়ে এসে সেই ক্রসে অসাধারণ এক হেড নেন। পোস্টের ডান পাশ দিয়ে বলটি জড়িয়ে গেলো ব্রাজিলের জালে।

গোল করেই আনন্দের আতিশয্যে নিজের শরীরে জার্সি খুলে ফেলেন আবু বকর। যা হলুদ কার্ডযোগ্য অপরাধ। যে কারণে, তাকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। আগেই একটি হলুদ কার্ড দেখার কারণে গোল দিয়েই লাল কার্ড দেখে মাঠ থেকে বের হতে হলো গোলদাতাকে।

অথচ, এতগুলো আক্রমণ সাজালো ব্রাজিল। মুহূর্তের ব্যবধানে ক্যামেরুনের বক্সে বল নিয়ে যাচ্ছে, মুহূর্তের ব্যবধানে গোলের সুযোগ তৈরি করছে, কিন্তু ক্যামেরুনের পোস্টের সামনে গেলেই খেই হারিয়ে ফেলে। হয় গোলরক্ষক বরাবর শট, নয়তো উপরে মেরে দিচ্ছে, নয়তো দুর্বল শট নিচ্ছে।

ম্যাচের শুরু থেকে লেফট উইংয়ে খেলেছেন মার্টিনেল্লি। অসংখ্য বল পেয়েছেন। অসংখ্য সুযোগ তৈরি করেছেন। অসংখ্যবার পোস্টে শট নিয়েছেন। কিন্তু শট নিতে গেলেই যেন মনে হচ্ছে তাতে কোনো ধার নেই। দ্বিতীয়ার্ধে ফ্রেডের পরিবর্তে মাঠে নামা ব্রুনো গুইমারেস যেন গোল মিসের মহড়া দিমে নেমেছিলো। এতগুলো সহজ সুযোগ তিনি পেয়েছিলেন! অথচ, সবগুলোই মেরেছেন পোস্টের ওপর দিয়ে।

ক্যামেরুন গোলরক্ষক ডেভিস পাসিও প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। অসাধারণ দক্ষণ ব্রাজিলের অনেকগুলো শট ঠেকিয়েছেন তিনি। যদিও সবগুলো বলই এসেছে তার বরাবর। কঠিন কোনো পরীক্ষাই দিতে হয়নি তাকে।

আগেই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত হয়ে বসে আছে ব্রাজিলের। তারওপর, দলে বেশ কয়েকটি ইনজুরি এবং বেশ কয়েকজন ফ্লু জ্বরে আক্রান্ত। এ কারণে কোচ তিতে ক্যামেরুনের বিপক্ষে পুরো পরিবর্তিত একাদশ মাঠে নামান।

ক্যামেরুনেরও ছিল দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার সুযোগ। সে ক্ষেত্রে প্রথমে হারাতে হবে ব্রাজিলকে। এরপর দেখতে হবে অন্য ম্যাচে কী হয়। ব্রাজিলকে হারানোর কাজটি করতে পারলেও অন্য ম্যাচে সুইজারল্যান্ড জিতে যাওয়ায় আর তাদরে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়া হলো না।

অন্যদিকে সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে পয়েন্ট সমান হলেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ব্রাজিলেই হলো গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন এবং সুইজারল্যান্ড হলো রানারআপ।

পরিবর্তিত একাদশ খেলেছে নাকি মূল একাদশ খেলেছে বোঝা গেলো না। অনেক আক্রমণ করার পরও ক্যামেরুনের জালে বল প্রবশে করাতে পারলো না ব্রাজিল।

বরং, শেষ মুহূর্তে উল্টো ব্রাজিলের জালেই বল প্রবেশ করিয়ে দিয়েছিলো প্রায় ক্যামেরুন। গোলরক্ষক এডারসনের দৃঢ়তায় রক্ষা পেয়েছে সেলেসাওরা।

ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের পসরা সাজায় ব্রাজিল। একপাশে মার্টিনেল্লি, অন্যপাশে গ্যাব্রিয়েল হেসুস এবং অ্যান্টোনি। মাঝে ফ্রেড এবং ফ্যাবিনহো। প্রথম একাদশের অভাব বুঝতেই দিচ্ছিলেন না তারা। ক্যামেরুনের রক্ষণ ভেঙে বার বার ভেতরে বল নিয়ে প্রবেশ করছিলেন।

বাম পাশে ভিনিসিয়ুসের জায়গায় আর্সেনাল তারকা মার্টিনেল্লি অসাধারণ ফুটবল খেলেন। বারবার আক্রমণ শানিয়ে দেন তিনি। কখনো নিজে শট করে গোল করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কাঙ্খিত গোলটাই বের করতে পারেননি তারা।

১৪তম মিনিটেই মার্টিনেল্লি দুর্দান্ত এক হেড নেন; কিন্তু ক্যামেরুন গোলরক্ষক ডেভিস পাসি কোনোমতে পাঞ্চ করে কর্নারের বিনিময়ে গোল রক্ষা করেন।

৩৭তম মিনিটে ফ্রেডের কাছ থেকে বল পেয়ে ডান পাশ থেকে অসাধারণ এক শট নিয়েছিলেন অ্যান্টোনি; কিন্তু বল চলে যায় সোজা ক্যামেরুন গোলরক্ষকের কাছে।

প্রথমার্ধের স্টপেজ টাইমে (৪৫+১ মিনিটে) মার্টিনেল্লির অসাধারণ শট কর্নারের বিনিময়ে কোনোমতে রক্ষা করেন ক্যামেরুন গোলরক্ষক।

একই সময়ে কর্নার কিক থেকে ভেসে আসা বলেও গোলের সুযোগ পেয়েছিলো ব্রাজিল। কিন্তু রদ্রিগো শটটি বাইরে মেরে দেন।

৪৫+৩ মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলো ক্যামেরুন। ২০ নম্বর জার্সিধারি ব্রায়ান এমবেউমোর অসাধারণ হেড নিশ্চিত প্রবেশ করতো ব্রাজিলের জালে; কিন্তু ক্যামেরুনের দুর্ভাগ্য। গোলরক্ষক এডারসন অসাধারণ দক্ষতায় শেষ মুহূর্তে পাঞ্চ করে বলটিকে গোলে প্রবেশ করা থেকে বাঁচান।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.