আজ: শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ইং, ৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৯শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৫ ডিসেম্বর ২০২২, সোমবার |

kidarkar

ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি আরও কমবে, আশা পরিকল্পনামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি আরও কমেছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। বিবিএসের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাস শেষে মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশে যা গত মাসে ছিল ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে এ হার ছিল ৯ দশমিক ১০ ও আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ।

সবজিসহ নানা খাদ্যপণ্যর দাম কমেছে বলে দাবি করেছে বিবিএস। সংস্থাটি বলছে, নভেম্বর মাসে খাদ্যপণ্যের দাম কমে মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ হয়েছে যা গত মাসে ছিল ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান মূল্যস্ফীতির সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করেন।

এসময় নভেম্বর মাসে খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে বলে তথ্য দেওয়ায় প্রশ্নের মুখে পড়েন মন্ত্রী।

সাংবাদিকরা সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রীর কাছে জানতে চান, বাজার ঘুরে দেখি প্রতিনিয়তই খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তি। বাজারের সঙ্গে বিবিএসের তথ্যের মিল নেই। খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে, কোন কোন বাজারে, সেসব বাজারের তালিকা মন্ত্রীর কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা।

জবাবে মন্ত্রী বলেন, নভেম্বর মাসে অত্যন্ত ভালো খবর পেয়েছি। মূল্যস্ফীতি ডিসেম্বরে আরও কমার সম্ভাবনা আছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান, শাক সবজি হওয়ার পাশাপাশি তেল গ্যাসের দামও বিশ্বব্যাপী কমছে। সার্বিকভাবে প্রবৃদ্ধিও সাত শতাংশে যাবে বলে আশা করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

তিনি বলেন, তেল গ্যাস সরকার নিজে কিনে বিক্রি করে। সরকার কোন মহাজন নয়। এটা নিয়ে লাভ করবে না। বিশ্ববাজারে দাম কমলে অবশ্যই সরকার কমাতে বাধ্য হবে। মূল্যস্ফীতি পরিমাপকের সূচকগুলো পর্যালোচনা করবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। এমন কিছু পণ্য, যা নিত্যপ্রয়োজনীয় না, এ তালিকায় সেগুলো রাখা হবে কি না তা ভাবা হবে। মূল্যস্ফীতির বাড়ন্ত ভাব নিয়ে কেউ কেউ রাজনীতি করতে চেয়েছিলেন। এখানে তা হয়নি।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি আরও কমবে। গত তিন মাসে ধারাবাহিকভাবে মূল্যস্ফীতি হ্যাটট্রিক হয়েছে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ায় আমাদের দেশে অবশ্যই এর প্রভাব পড়বে। আমাদের ধান ও সবজি উৎপাদন ভালো হয়েছে। সরকার জ্বালানি কেনে এবং বিক্রি করে। সামাজিক ও বাস্তব কারণে দাম বাড়াতে হয়। বিশ্ববাজারে দাম কমলে আজ না হয় কাল, আমাদের দেশেও দাম কমবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে ৪২২টি পণ্যের উপর মূল্যস্ফীতি যাচাই করা হয়। এখন সেগুলো আবার পুনর্বিবেচনা করা হবে। কেননা এখানে সোনার দামও ধরা হয়েছে। সোনার দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়ে। এছাড়া মাখন ও কফিসহ এরকম অনেক পণ্যের দামও ধরা হয়। এগুলো সংশোধন করা হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মধ্যবিত্তের দিকে আলাদা কোনো টার্গেট নেই সরকারের। অর্থনৈতিক, মানবিক ও রাজনৈতিক কারণে নজর দেওয়া হচ্ছে নিম্নবিত্তের দিকে।

বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ যা তার আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ যা আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ। খাদ্য-বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৩১ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে কমে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৭০ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। খাদ্যবর্হিভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৫৪ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।

নভেম্বরে মজুরি হার শতকরা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ। কৃষি খাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। শিল্প খাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ। সেবা খাতে মজুরি হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১৭ শতাংশে, যা তার আগের মাসে ছিল ৭ দশমিক ১১ শতাংশ।

গত জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ, আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ছিল ৯ দশমিক ১০ শতাংশ।

গত জুলাইয়ে মজুরি হার ছিল ৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ, আগস্টে ছিল ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং সেপ্টেম্বরে ছিল ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.