স্বেচ্ছাসেবী ছাড়া সুন্দর বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়: প্রথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেছেন, যারা স্বেচ্ছসেবক হিসেবে কাজ করছে তারাই প্রকৃত সমাজসেবক। এটা আদিকাল থেকে চলে আসছে। স্বেচ্ছসেবকরা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ায় প্রত্যাশায় এগিয়ে চলছে। বর্তমানে দেশে ১০ লাখ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করে যাচ্ছে। তরুণরাই স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে রাষ্ট্র ভাষার জন্য আন্দোলন করেছে। তারাই যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীনতা করেছে। স্বেচ্ছাসেবী ছাড়া সুন্দর বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী দিবস উপলক্ষ্যে ভিএসও বাংলাদেশ আয়োজিত ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের নবাব আলী চৌধুরী হলে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্বদ্যায়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আাখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ভিএসও বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর খাবিরুল হক কামাল।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মোশাররফ তানসেন, কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ, মালালা ফান্ড। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ডেভিড নক্স ডিরেক্টর প্রোগ্রামস বাংলাদেশ, ব্রিটিস কাউন্সিল; মোহাম্মাদ গোলাম কিবরিয়া, শিক্ষা উপদেষ্টা, ব্রিটিস হাইকমিশন বাংলাদেশ; শাহীন সিরাজ, প্রোগ্রাম ডেভেলোপমেন্ট স্পেশালিস্ট, ই্উএসআইডি, বাংলাদেশ; মোহাম্মাদ শাহ আলম, নির্বাহী পরিচালক, সিসেম, বাংলাদেশ, প্রফেসর ড: মাহবুবা নাসরীন প্রো-ভিসি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার উন্নত বাংলাদেশ করার জন্য নানাভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার কেবিনেটে স্বেচ্ছাসেবী নীতিমালা পাশ করেছে। আগে সবাই পড়াশুনা শেষ করে চাকরি করার চিন্তা করতো। কিন্তু অনেকেই এখন স্বেচ্ছাবক হিসেবে পেশা বেছে নিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ভেদাভেদ ভুলে যেতে হবে। এটা করতে হলে স্বেচ্ছাসেবক ছাড়া হবে না। তিনি দেশে যেকোনো দুর্যোগে স্বেচ্ছাসেবকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বাড়িয়েছে। আড়াই কোটি ছাত্রকে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। গৃহহীনদের বাড়ি করে দিচ্ছে। তরুণরাই উন্নত দেশ গড়ার কারিগড়। বাল্যবিবাহ রোধ করতে স্বেচ্ছাসেবকদের এগিয়ে আসতে হবে।
ঢাবি ভিসি বলেন, করোনাকালীন সময়ে বাংলাদেশের স্বেচ্ছোসেবকরা নানাভাবে কাজ করেছে। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওইসময় কাজ করেছেন। করোনাকালীন সময়ে অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এগিয়ে এসছে।
তিনি বলেন, স্বেচ্ছাসেবী হলো বিনা পারিশ্রমিককে কাজ করা। সবাই এটা করতে পারে না। স্বেচ্ছাসেবী হতে হলে উদার মানসিকতার হতে হবে। এই সেমিনার স্বেচ্ছাসেবী দের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।
ভিএসও এর ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর খারিরুল হক কামাল বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ৫০ হাজার স্বেচ্ছাবকদের সাথে কাজ করছে। ভবিষ্যত একটি সুন্দও দেশ গড়তে হলে স্বেচ্ছাসেবীদেরএগিয়ে আসতে হবে। সব স্বেচ্ছাসেবক একত্রে কাজ করতে পারলে আমরা দেশকে একটি সমৃদ্ধিও জায়গায় নিতে পারবো।
তিনি বলেন, সরকার স্বেচ্ছাসেবকদের নানাভাবে সহযোগিতা করছে। আমরা আশাবাদী স্বেচ্ছাসেবীরা আরো কাজের সুবিধা পাবে।
ভিএসও বাংলাদেশ, ইনস্টিটিউট অফ ডিজাস্টার ম্যানেজম্যান্ট এন্ড ভালনারেবল স্ট্যাডিজ (আইডিএমভ্এিস), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভলান্টিয়ার অপর্চুনিটির সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী দিবস উদযাপন করেছে। দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমে সংহতি। টেকস্ই উন্নয়নের জন্য, আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে এবং এটাই কাজ করার উপযুক্ত সময়। একসাথে একে অপরের প্রতি সংহতি প্রকাশের যুগে সবাইকে নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে সরকারী প্রতিনিধি, দাতা সংস্থা, এনজিও, আর্ন্তজাতিক এনজিও, সিএসও, জাতিসংঘ, যুবসংগঠন, স্বেচ্ছাসেবক, সুশীল সমাজ এবং সাংবাদিকগণ যোগ দিয়েছিলেন। দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য জাতি গঠনের জন্য নৈতিক স্বেচ্ছাসেবা এবং সংহতি।
দিবসটি উৎযাপনের জন্য স্বেচ্ছাসেবা সম্পকৃত চারটি উন্নয়নমূলক বিষয় উপস্থাপন করে হয়, সেগুলো হলো: জাতি পুর্নগঠনে স্বেচ্ছাসেবা, জলবায়ু পরিবর্তন ও যুব কর্মকান্ড, জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা (জিবিভি) ও নারীর ক্ষমতায়ন এবং যুব ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন বিসয় নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে ৬৪ টি জেলার ১২০ জন স্বেচ্ছাছাসেবী সংস্থাকে তাদের স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের জন্য সম্মাননা প্রদান করা হয়। ড: খন্দকার মোকাদ্দম হোসেন, প্রো-ভিসি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, মোহাইমিন পল্লভ, হেড অব নিউ ইনেসিয়েঠিভ, দৈনিক প্রথম আলো; ড: মোহাম্মাদ মুনির হোসাইন, প্রোগ্রাম এনালিস্ট-এএন্ডঅই, ইউএনএফপিএ স্বেচ্ছাকদের মধ্যে সনদপত্র হস্তান্তর করেন।
পরিশেষে, ইনস্টিটিউট অফ ডিজাস্টার ম্যানেজম্যান্ট এন্ড ভালনারেবল স্ট্যাডিজ (আইডিএমভ্এিস), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর পরিচালক দিলারা জাহিদ, সহযোগী অধ্যাপক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে অনুষ্ঠান শেষ করেন।