আজ: শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৬ ডিসেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার |

kidarkar

কঙ্গোতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হামলায় নিহত ২৭২ বেসামরিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে (ডিআর কঙ্গো) ২৭২ জন বেসামরিক ব্যক্তিকে হত্যা করেছে একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। গত সপ্তাহে আফ্রিকার এই দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কিশিশে শহরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো এই তথ্য জানিয়েছে। অবশ্য কিশিশে শহরে বিদ্রোহীদের হামলায় নিহত বেসামরিক মানুষের সংখ্যা এর আগে ৫০ বলে জানানো হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের হালনাগাদ তথ্যে সেই সংখ্যাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭০ জনেরও বেশিতে। সোমবার (৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আর জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে ডিআর কঙ্গোর শিল্পমন্ত্রী জুলিয়েন পালুকু বিদ্রোহীদের হামলায় নিহত বেসামরিক মানুষের নতুন সংখ্যা ঘোষণা করেন। এসময় তার সঙ্গে আফ্রিকার এই দেশটির সরকারের মুখপাত্র প্যাট্রিক মুয়ায়াও উপস্থিত ছিলেন।

এদিন সংবাদ সম্মেলনে প্যাট্রিক মুয়ায়া বলেন, ‘আমি হামলার বিস্তারিত জানাতে পারছি না। অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে একটি তদন্ত শুরু হয়েছে এবং আমরা তদন্তকারীদের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যা জানি তা হলো, একটি অ্যাডভেন্টিস্ট চার্চ এবং হাসপাতালে শিশুদের হত্যা করা হয়েছিল।’

আল জাজিরা বলছে, বেসামরিক হত্যাকাণ্ডের এই ঘটনায় এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও তাদের সহযোগীদের অভিযুক্ত করেছে কঙ্গোর সরকার। তবে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এমনকি বেসামরিক লোকদের লক্ষ্য করে হামলা চালানোর অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলেও দাবি করেছে গোষ্ঠীটি।

জাতিসংঘ এবং মার্কিন এক কূটনীতিকও গত সপ্তাহে বলেছিলেন, তাদের কাছে গত মঙ্গলবার উত্তর কিভু প্রদেশের কিশিশে শহরে বেসামরিক হত্যাকাণ্ডের তথ্য রয়েছে, তবে সেসময় বিস্তারিত কিছু জানাননি তারা। তারা দু’জনেই এ বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানান।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘ জানায়, তারা গত ২৯ নভেম্বর কিশিশে অঞ্চলে এম২৩ এবং স্থানীয় মিলিশিয়াদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় ব্যাপক বেসামরিক হতাহতের রিপোর্ট পেয়েছে। কিন্তু হতাহতের কোনো পরিসংখ্যান সংস্থাটি দেয়নি।

ডিআর কঙ্গোতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন গত সপ্তাহে নৃশংসতার প্রতিবেদনের নিন্দা করে বলেছে, বেসাসরিক হত্যাকাণ্ডের এই ঘটনা সত্যি হলে তা ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অধীনে অপরাধী’ হতে পারে।

জাতিসংঘ মিশন টুইটারে লিখেছে, ‘আমরা এই ভয়ঙ্কর কর্মকাণ্ডের নিন্দা করছি এবং অবিলম্বে তদন্ত করে অপরাধীদের বিচারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, কঙ্গোর সেনাবাহিনী এবং জাতিগত টুটসি গোষ্ঠীর নেতৃত্বাধীন মিলিশিয়া বাহিনী এম২৩ মধ্য আফ্রিকার এই দেশটির পূর্বাঞ্চলে কয়েক মাস ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে ওই এলাকাটি বেশ অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে এবং সেখানে হওয়া বিভিন্ন হামলার জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে অভিযুক্ত করেছে।

গত সেপ্টেম্বরে এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা জানিয়েছিল, এম২৩ বিদ্রোহীরা বছরের পর বছর নিষ্ক্রিয় থাকার পর ২০২১ সালের শেষের দিকে আবারও যুদ্ধ শুরু করে। তখন থেকে তারা উগান্ডা সীমান্তের কৌশলগত শহর বুনাগানাসহ উত্তর কিভুজুড়ে বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে নেয়।

কঙ্গো বারবার মধ্য আফ্রিকান প্রতিবেশী রুয়ান্ডাকে এম২৩ বিদ্রোহীদের সমর্থন করার জন্য অভিযুক্ত করেছে, যদিও কিগালি এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.