আজ: বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৬ ডিসেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার |

kidarkar

জুলাই-সেপ্টেম্বরে প্রকৃত বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ২২%

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) দেশে এফডিআইয়ের নিট প্রবাহ বেড়েছে ২১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এই সময়ে দেশে মোট এফডিআই এসেছে ৪৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার, আগের বছর একই সময়ে যেখানে এসেছিল ৩৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যালান্স অব পেমেন্টের সূত্রে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের (এমসিসিআই) ত্রৈমাসিক অর্থনৈতিক পর্যালোচনায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে দেশে মোট এফডিআই এসেছে প্রায় ১১৬ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেশি। তবে বিশ্লেষকেরা বলেন, সমকক্ষ অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে এফডিআই প্রবাহ কম।

জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে দেশে মোট এফডিআই এসেছে প্রায় ১১৬ কোটি ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৭.৭৮ শতাংশ বেশি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুসারে, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ৪৭০ কোটি ৮০ লাখ (৪.৭১ বিলিয়ন) ডলারের এফডিআই এসেছিল দেশে, যা ছিল আগের বছরের (২০২০-২১) চেয়ে ৩৯ শতাংশ বেশি। নিট এফডিআই বেড়েছিল আরও বেশি, ৬১ শতাংশ। গত অর্থবছরে নিট এফডিআইয়ের পরিমাণ ছিল ২১৮ কোটি ডলার।

২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩২৩ কোটি ৩০ লাখ ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। নিট বিনিয়োগের অঙ্ক ছিল ১২৭ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রায় ৫০০ কোটি ডলার বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল দেশে। এর মধ্যে নিট এফডিআইয়ের পরিমাণ ছিল ২৬৩ কোটি ডলার। বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আসে ওই বছর। এর মধ্যে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করে জাপানের কোম্পানি জাপান টোব্যাকো। আকিজ গ্রুপের তামাক ব্যবসা কেনা বাবদ প্রায় ১৫০ কোটি (১.৫ বিলিয়ন) ডলার বিনিয়োগ করেছিল তারা। বিভিন্ন খাতে মোট যে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আসে, তা থেকে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মুনাফার অর্থ দেশে নিয়ে যাওয়ার পর অবশিষ্ট অঙ্ককে নিট এফডিআই বলা হয়।

২০২০ ও ২০২১ সালে করোনা মহামারির ধাক্কা কাটতে না কাটতেই চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এ যুদ্ধের কারণে মূল্যস্ফীতি আরও এক দফা বেড়েছে, বেড়েছে ডলারের বিনিময় হার। সেই সঙ্গে কমতে শুরু করেছে প্রবাসী আয়। আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়া এবং প্রবাসী আয় কমে যাওয়া—এই জোড়া ধাক্কায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত অনেকটা কমে গেছে। এ পরিস্থিতিতে স্বস্তির ইঙ্গিত দিচ্ছে এফডিআইয়ের তথ্য। তবে এ অবস্থা কত দিন থাকবে, তা নিয়ে শঙ্কা থেকে যায় বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

এমসিসিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে শ্রমিকের মজুরি কম। মূলত বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশে তেমন একটা এফডিআই আকর্ষণ করতে পারছে না। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ঘাটতি, দুর্বল সঞ্চালন অবকাঠামো, শিল্পের জন্য জমির অভাব, দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা ও নিয়মকানুন সব ক্ষেত্রে সমানভাবে প্রয়োগ না হওয়া—এসব কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেশে বিনিয়োগের বিষয়ে আগ্রহী হচ্ছে না। প্রতিবেদনে এসব বাধা দূর করার বিষয়ে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি চাপের মুখে আছে বলে মনে করছে এমসিসিআই। মার্কিন ডলারের উচ্চ বিনিময় মূল্য, উচ্চ আমদানি ব্যয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া—এসব কারণে চাপ বাড়ছে। এমসিসিআই মনে করছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.