আজ: বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৩ ডিসেম্বর ২০২২, মঙ্গলবার |

kidarkar

মন্দার ঝুঁকি বেশি ইউরোপে, ভালো করবে উপসাগরীয় দেশগুলো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ২০২২ সালে কলিনস ইংলিশ ডিকশনারির সম্পাদক ‘পারমাক্রাইসিস’ নামের একটি নতুন শব্দ যুক্ত করেছেন। অস্থিরতা ও অনিরাপত্তার বর্ধিত সময়কে নির্দেশ করতে এই শব্দটি বেছে নেওয়া হয়েছে।

ভ্লাদিমির পুতিনের ইউক্রেনে হামলার ফলে ১৯৪৫ সালের পর সর্বোচ্চ যুদ্ধ চলছে ইউরোপের মাটিতে। এ কারণে কিউবান মিসাইল ক্রাইসিসের পর পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি বেড়েছে। তাছাড়া ১৯৩০ সালের পর নিষেধাজ্ঞার কার্যক্রমও বেড়েছে। খাদ্য ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে দেশে ১৯৮০ সালের পর উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখা যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং সামষ্টিক অর্থনীতিও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। কয়েক দশক ধরেই ধারণা করা হয়, সীমান্ত থাকবে নিরাপদ, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হবে না, মূল্যস্ফীতি থাকবে কম। কিন্তু সব সূচকই এক সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছে।

মূলত তিনটি চ্যালেঞ্জ সম্মিলিতভাবে অস্থিরতা তৈরিতে অবদান রাখছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো ভূ-রাজনীতি। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যুদ্ধ পরবর্তী বিশ্ব বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। এর জন্য দায়ি মূলত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে ধারাবাহিক সম্পর্কের অবনতি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো দৃঢ়তার সঙ্গে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তবে তা হয়তো পশ্চিমা ধারণাকে পুনরুজ্জীবিত করেছে। বিশেষ করে ট্রান্স আটলান্টিক জোটে। কিন্তু এতে পশ্চিম ও বাকিদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে।

যেসব দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় সমর্থন করেনি সেসব দেশে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষের বসবাস। পশ্চিমাদের আদর্শকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন শি জিনপিং। শীর্ষ অর্থনীতির দুইটি দেশের মধ্যে বিভাজন বর্তমানে বাস্তবতা। তাইওয়ানে চীনের আগ্রাসন এখন আর অকল্পনীয় কিছু নয়। যেসব দেশের মধ্যে দীর্ঘ সম্পর্ক রয়েছে তাদের মধ্যেও এখন ভাঙন দেখা যাচ্ছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব।

ইউক্রেন যুদ্ধে ফলে পণ্যের দাম বেড়ে আকাশচুম্বী হয়েছে। বৈশ্বিক জ্বালানি ব্যবস্থায় এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। কৃষিপণ্য রপ্তানিতে ইউক্রেনের গুরুত্ব অপরিসীম। ওডেসার বন্দর যদি খোলা না থাকে তাহলে ক্ষুধার হুমকিতে থাকবে বিশ্ব। এখনই সংকটে পড়েছে বহু দেশ। জ্বালানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন পুতিন। এমন পরিস্থিতিতে আরও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন। যেমন পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা ও ইউরোপে তাপপ্রবাহ। তাই সংকট মেটাতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হচ্ছে ইউরোপের দেশগুলোকে। খুঁজতে হচ্ছে বিকল্প উৎস। তাছাড়া বাধ্য হয়ে অনেক দেশকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ব্যবহার করতে হচ্ছে।

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ক্ষতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। করোনা মহামারির পর চাহিদা বাড়ায় ২০২২ সালের শুরুর দিকেই ভোক্তা সূচক মূলত বেড়ে যায়। তবে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার পর মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছায়। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদের হার বা মুদ্রানীতিতে কঠোর অবস্থানে যায়। সামষ্টিক অর্থনীতিতে সমস্যা এখনো রয়ে গেছে। কমছে না মূল্যস্ফীতিও।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে আগামীতে কী হবে। এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করছে ভূ-রাজনীতি, জ্বালানি ও অর্থনীতির ওপর। এরা একে অপরের ওপর কতটুকু প্রভাব ফেলে সেটাও দেখার বিষয়। তবে পরিসংখ্যান দেখে বোঝা যাচ্ছে, পরিস্থিতি খুব একটা স্বস্তিদায়ক হবে না। ২০২৩ সালে বিশ্বের অধিকাংশ দেশই মন্দারকবলে পড়বে। তাছাড়া অর্থনৈতিক দুর্বলতার কারণে কিছু কিছু জায়গায় ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি বাড়বে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে ইউরোপে। চলতি বছরের মতো আগামী শীতেও অঞ্চলটি বেশ বেকায়দায় পড়বে। ইউরোপের বহু দেশ এখনই মন্দার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়ানোয় একদিকে যেমন ভোক্তাদের ব্যয় বাড়ছে অন্যদিকে বেকারত্ব দেখা দিচ্ছে।

শীতের সময় গ্যাসের দাম আরও বেড়ে যেতে পারে, দেখা যেতে পারে লোডশেডিং। যদিও ভোক্তাদের রক্ষায় ইউরোপের সরকারগুলো এরই মধ্যে জ্বালানিখাতে ভর্তুকি দেওয়া শুরু করেছে। যদিও তা অনির্দিষ্টকাল ধরে অব্যাহত থাকবে না। অঞ্চলটিতে সবচেয়ে বেশি সংগ্রাম করছে যুক্তরাজ্য ও ইতালি।

ভূ-রাজনীতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি পুতিন। কারণ ইউরোপকে বেকায়দায় ফেলতে তিনি চেষ্টায় কোনো কমতি রাখছেন না। তার এই কৌশল এরই মধ্যে ইউক্রেনে ফুটে ওঠেছে, কারণ তিনি দেশটির জ্বালানি কেন্দ্রগুলোতে হামলা দ্বিগুণ করেছেন।

২০২৩ সাল কেন ভয়াবহ হতে যাচ্ছে তার অনেক কারণই রয়েছে। তবে আশার কথা হলো প্রত্যেক সংকট থেকেই নতুন সম্ভাবনার জন্ম হয়। এতো নেতিবাচকের মধ্যে আশার খবর রয়েছে। কারণ অনেক দেশই এ সময় অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে। যেমন উপসাগরীয় দেশের অর্থনীতি বাড়ছে। এটি শুধু জ্বালানি বিক্রি করে নয়। সেখানে অর্থনৈতিক অন্যান্য কার্যক্রমও বেড়েছে। ২০২৩ সালে চীনকে টপকে বিশ্বের শীর্ষ জনবহুল দেশ হবে ভারত। তাছাড়া বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা চীনকে বাদ দিয়ে ভারতের দিকে ঝুঁকছে, বেড়েছে অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগও। সর্বপরি উদীয়মান অর্থনীতিগুলো ভালো করবে।

১ টি মতামত “মন্দার ঝুঁকি বেশি ইউরোপে, ভালো করবে উপসাগরীয় দেশগুলো”

  • Aashish says:

    Above all, Undoubtedly RUSSIA as a second power obviously need and want security , safety from NATO alliances. Try to understand the future of ASIA, deeply take breathing and rethink continuously the future of RIC RUSSIA, INDIA CHINA. If NATO can divide RUSSINA then India. China and Middle East that is total ASIAN COUNTRIES must face unbelievable problems. Any way , to solve these criticals, RIC, BRICS STRONGLY AND URGENTLY NEED TO CONTROL NORTH ATLANTIC OCEAN

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.