আজ: রবিবার, ০২ এপ্রিল ২০২৩ইং, ১৯শে চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ১০ই রমজান, ১৪৪৪ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৪ ডিসেম্বর ২০২২, বুধবার |


kidarkar

যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার ‘মানবাধিকার’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন


নিজস্ব প্রতিবেদক : বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয় দেওয়া দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মানবাধিকারের মানদণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

তিনি বলেছেন, “এরা যখন মানবাধিকারের কথা বলে তখন আমার প্রশ্ন জাগে। যারা আমার পিতা-মাতা, ভাই ওই ছোট্ট শিশুকে হত্যা করেছে, যারা অন্তঃসত্ত্বা আরজু মণিকে হত্যা করেছে, সেই খুনীদের তারা প্রশ্রয় দেয়, আশ্রয় দেয়, আবার তাদের কাছ থেকে মানবতার কথা শুনতে হয় আমাদের… কি দুর্ভাগ্য!”

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যদের।

দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সে সময় দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির মধ্যে পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করা হলেও ছয়জন এখনও পলাতক। তাদের মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে এবং নূর চৌধুরী কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন।

শুক্রবার ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণ অনুষ্ঠানে এ প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের রায় কার্যকর করে জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। যদিও কোনো কোনো খুনীকে অনেক দেশ আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। যেমন কানাডা, আমেরিকা। ডালিম (শরিফুল হক ডালিম) ও রশীদ (খন্দকার আবদুর রশিদ) পাকিস্তানে রয়েছে। আমরাও এদেরকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।”

দণ্ডপ্রাপ্ত ১২ খুনির মধ্যে সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মহিউদ্দিন আহমদ (আর্টিলারি), বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিনকে (ল্যান্সার) ফাঁসিতে ঝোলানো হয় ২০১০ সালে। আর আব্দুল আজিজ পাশা জিম্বাবুয়েতে মারা যান।

পলাতকদের মধ্যে মোসলেমউদ্দিনও যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন বলে গণমাধ্যমের খবর। আব্দুল মাজেদ অবস্থান পরিবর্তন করে বিভিন্ন দেশে আছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “দুর্ভাগ্য, আমেরিকায় দুই খুনী। তাদের ফেরত ‍দিচ্ছে না। তাদের সেদেশে থাকার সুযোগ করে দিয়েছে। কানাডাও একই কাজ করেছে।”

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে নিজের দেশে ফেরত পাঠানো হয় না বলে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়েছে কানাডা।

এই খুনিদের হাতে ১৯৭৫ সালে যারা নিহত হয়েছিলেন, তাদের ‘কী অপরাধ ছিল’- সেই প্রশ্ন রাখেন বাংলাদশের প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মণির অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণিকেও গুলি করে হত্যার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “পেটে সন্তানসহ গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। কি দুর্ভাগ্য এই দেশের, আমাদের!”

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রাজনৈতিক পালাবদলের এক পর্যায়ে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেন। এরপর ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ১২ সেনা কর্মকর্তাকে বাংলাদেশের বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনে চাকরি দেওয়া হয়।

বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের রক্ষায় জিয়াউর রহমান পরে দায়মুক্তি অধ্যাদেশ জারি করেন, যা ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর বাতিল করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, “জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। তাদের বিচারের রায়ও আমরা কার্যকর করেছি। বাংলাদেশ অভিশাপমুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ অন্তত এই কলঙ্ক থেকে মুক্তি পেয়েছে।”

 

 

 


আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.