আজ: মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৮ ডিসেম্বর ২০২২, রবিবার |

kidarkar

কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর-লুটপাটে ৫১ লাখ টাকার ক্ষতি : বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান চলাকালে ‘ভাঙচুর’ ও পরে পুলিশের ছত্রছায়ায় ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা ‘লুটপাট’ চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। এতে প্রায় ৫১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গত ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও আশপাশে অনির্বাচিত গণবিরোধী সরকারের নির্দেশে বিভিন্ন বাহিনীর যে নির্মম নিষ্ঠুরতা ও বর্বর আচরণ দেশবাসী তা প্রত্যক্ষ করেছেন। কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে ল্যাপটপ, কম্পিউটার, হার্ডডিস্ক, নথিপত্র, ব্যাংকের কাগজপত্র, নগদ অর্থ লুট করা প্রকৃতপক্ষে একটি ডাকাতির ঘটনা। এ ঘটনা শুধু বিজয়ের মাসকে কলঙ্কিত করেনি, গণতন্ত্র হত্যাকারী ও বারবার গণতন্ত্র হত্যায় সহায়তাকারী ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকারের অগণতান্ত্রিক, কর্তৃত্ববাদী ও গণবিরোধী পরিচয় উৎকটভাবে পুনরায় প্রকাশ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘৭ ডিসেম্বর বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশি হামলার পর পুলিশের ছত্রছায়ায় ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকে বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর ও মালামাল লুটে অংশ নেয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা আমাদের জানিয়েছেন। এতে নগদ অর্থসহ ক্ষতি ও লুট হওয়া সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ৫০ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা। পুলিশ নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে চাল উদ্ধারের কথা বলেছে। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মামলার এজাহারেও চালের কথা নেই।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ঘটনায় জড়িত পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার দাবি করছি। একইসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ দলের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’

মোশাররফ বলেন, ‘নির্যাতন, বর্বর অত্যাচার, জেল-জুলুম সত্ত্বেও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে দুর্বল করা যায়নি। বরং তা আরও বেগবান হয়েছে। ৭ ডিসেম্বরের পর ঢাকা বিভাগের সর্বত্র সরকারি দল ও পুলিশ বাহিনীর নানা বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে জনগণ ১০ ডিসেম্বরের জনসমাবেশ সফল করেছে। এর পরেও সব কর্মসূচি সফল করেছে। আমরা সংগ্রামী দেশবাসী ও সাহসী নেতাকর্মীদের অভিনন্দন জানাচ্ছি।’

বিএনপির গণমিছিলের তারিখ পেছানোর সিদ্ধান্ত কারও প্রতি নমনীয়তা নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি মধ্যপন্থি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। অতীতেও ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপি তার গণতান্ত্রিক চরিত্র দেখিয়েছে। ভবিষ্যতেও দেখাবে। আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি।’

বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তাদের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে আমাদের অনুরোধ করেছে বা আহবান জানিয়েছে মিডিয়ার মাধ্যমে। বিএনপিও কোনো সংঘাত চায় না। বিএনপির গণতান্ত্রিক চরিত্র হিসেবে গণমিছিলের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। এটা কারও প্রতি নমনীয়তা নয়।’

বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী রয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা কতিপয় দাবি নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে নামার জন্য সব গণতান্ত্রিক দল, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো আমাদের যুগপৎ আন্দোলন শুরু হয়নি। কাজেই এখন বলা যাবে না কে আছে বা কে নেই।’

বিএনপির সাবেক নেতা নাজমুল হুদাকে ‘তৃণমূল বিএনপি’ নামে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দিতে সুপ্রিম কোর্টে আপিল বিভাগ থেকে যে আদেশ এসেছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সংবাদ সম্মেলনের অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.