আজ: শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ইং, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৮ ডিসেম্বর ২০২২, রবিবার |

kidarkar

আবাসন সংকট আরও প্রকট হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক : নতুন ড্যাপে ঘোষিত ফ্লোর এরিয়া রেশিও (ফার) হ্রাসের কারণে ঢাকায় বেশিরভাগ ভবন হবে ৪ থেকে ৫ তলা। ফলে আগামীতে আবাসন সংকট আরও প্রকট হবে। উচ্চহারে বাড়বে ফ্ল্যাটের দাম এবং বাড়ি ভাড়া আকাশচুম্বী হবে বলে দাবি করেছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে রিহ্যাব ফেয়ার উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স) প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, নতুন ড্যাপের কারণে পরিবেশবান্ধব উপায়ে বসবাস করার জন্য মৌলিক চাহিদার অন্যতম আবাসনের স্বপ্ন মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সবার জন্য মানসম্মত আবাসন, আরও কঠিন হয়ে যাবে। এক বছর আগে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আমরা যে শঙ্কার কথা বলেছিলাম সেই শঙ্কা বাস্তবে রূপ নিয়েছে। কারণ ফ্ল্যাটের চাহিদা এবং যোগানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হবে। নতুন ড্যাপের প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর গত প্রায় ৪ মাসে রিহ্যাব সদস্যরা জমির মালিকের সঙ্গে কোন চুক্তি বা সমঝোতায় যেতে পারেননি। কেউ নতুন করে প্ল্যান পাস করেনি।

তিনি বলেন, পুরাতন প্রকল্পগুলো নিয়েই অনেকে কাজ করছেন। ফলে আগামীতে ফ্ল্যাটের সংকট তৈরি হবে এবং দাম বাড়বে। আমরা রাজউকসহ ড্যাপের আহ্বায়ক এলজিআরডি মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আমাদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার কথা তুলে ধরেছি। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যৌক্তিক দাবি বিবেচনা করবেন। আমাদের প্রত্যাশা নতুন ড্যাপে ফার- এর পরিমাণ সংশোধন করা হবে।

প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোহেল রানা আরও বলেন, সবার জানা আছে অর্থনীতিতে আমরা (রিহ্যাব) কীভাবে বড় ধরনের অবদান রাখছি। সরকারের রাজস্ব আয়, কর্মসংস্থান, রড, সিমেন্ট, টাইলসসহ ২৭০ এর অধিক লিংকেজ শিল্প প্রসারের মাধ্যমে সমগ্র নির্মাণ খাত জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নির্মাণ খাতের অবদান প্রায় ১৫ শতাংশ। বাংলাদেশের আবাসন শিল্প শুধু আবাসনই সরবরাহ করছে না, একই সঙ্গে ৪০ লাখ শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল ২ কোটি লোকের অন্নের যোগান দিয়েছে। আমাদের আবাসন সেক্টর থেকে আয় করা অর্থ পুনরায় বিনিয়োগ হয়েছে অন্য উৎপাদনশীল সেক্টরে। দেশের বেশ কয়েকটি বড় শিল্প গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়েছে আবাসন শিল্প দিয়ে। ফলে আবাসন খাত অনেক নতুন নতুন উদ্যোক্তাদের সৃষ্টি করছে। যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছে।

তিনি আরও বলেন, সকল সুযোগ-সুবিধা ঢাকা কেন্দ্রিক হওয়ার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রধান নগরীর মধ্যে ঢাকায় জনসংখ্যা বাড়ছে সবচেয়ে বেশি হারে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী ঢাকায় প্রতিদিন ১৭০০ নতুন নাগরিক যুক্ত হচ্ছে। বছর শেষে এই লোকের সংখ্যা ৭ লাখের কাছাকাছি। বিশ্বের ক্রমবর্ধমান মেগাসিটিগুলোর মধ্যে ঢাকা এখন অন্যতম। এমন বাস্তবতায় চলতি বছরের ২৩ থেকে নতুন ড্যাপ এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০২০ সালে করোনা মহামারিকালীন বড় ধরনের সংকটে পড়তে যাচ্ছিল আবাসন শিল্প। কিন্তু বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী প্রণোদনা প্রদানের সিদ্ধান্তে এ খাত সংকট থেকে রক্ষা পায়। যে অর্থ দেশের বাইরে চলে যাওয়ার শঙ্কা ছিল, সেই অর্থ দেশে করোনার সময়ে আবাসন খাতসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিটি নির্মাণ সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি এবং নতুন ড্যাপ এর কারণে আমরা আবাসন সেক্টর নিয়ে বড় ধরনের সংকটে রয়েছি।

আয়োজকরা জানান, সাধ ও সাধ্যের মধ্যে মনের মতো ফ্ল্যাট বা প্লট খুঁজে নিতে আগামী ২১ ডিসেম্বর থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হচ্ছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) ফেয়ার।

২১- ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতা, দর্শনার্থীদের জন্য মেলায় প্রবেশের সুযোগ থাকবে। এবারের মেলায় টিকিট মূল্য জনপ্রতি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাব ভাইস চেয়ারম্যান (প্রথম) কামাল মাহমুদ, রিহ্যাব পরিচালক মো. সুলতান মাহমুদ, পরিচালক ড. এ. এফ. এম কামাল উদ্দিন, পরিচালক রোটারিয়ান এস. এম ইমদাদ হোসেন, পরিচালক মো. রাগীব আহসান প্রমুখ।

১ টি মতামত “আবাসন সংকট আরও প্রকট হবে”

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.