টানা ২ বছর লোকসানের পথে স্বর্ণ
নিজস্ব প্রতিবেকদ: আন্তর্জাতিক বাজারে শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) স্বর্ণের দাম বেড়েছে। তবে টানা ২ বছর লোকসানের পথে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ধাতুটি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, ২০২২ সালজুড়ে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতিতে লাগাম টানতে সুদের হার বাড়াতে থেকেছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড)। এর আগে অভিঘাত হানে করোনা মহামারি। এতে দ্বিতীয় বছরের মতো বিনিয়োগকারীদের কাছে স্বর্ণের আবেদন কমেছে।
এদিন আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক স্বর্ণের দর শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি আউন্সের মূল্য স্থির হয়েছে ১৮১৮ ডলার ৬৪ সেন্টে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বেঞ্চমার্ক স্বর্ণের দরপতন হয়েছে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ। আউন্সপ্রতি যার দাম নিষ্পত্তি হয়েছে ১৮২৪ ডলার ৬০ সেন্টে।
টেস্টিলাইভের গ্লোবাল ম্যাক্রো হেড ইলিয়া স্পিভাক বলেন, ফেড সুদের হার বাড়ানোয় চলতি বছরের অধিকাংশ সময় চাপে থেকেছে স্বর্ণের বিশ্ববাজার। যদিও বছরের শেষদিকে মূল্যবান ধাতুটির বাজার একটু ঘুরে দাঁড়ায়। সামনে সুদহার কমাতে পারে ফেড-এ প্রত্যাশায় কিছুটা প্রাণ ফিরে পায় বুলিয়ন মার্কেট।
এ বছর আন্তর্জাতিক বাজারে মোটের ওপর স্বর্ণের দাম শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ কমার পথে রয়েছে। এসময়ের শুরু থেকেই বড় অংকের সুদ হার বাড়িয়েছে ফেড। এতে মার্কিন মুদ্রা ডলারের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। ফলে এতে বিনিয়োগে নিরাপদ বোধ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
বার্ষিক ভিত্তিতে ২০১৫ সালের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে ডলার সূচক। ফলে অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা ধারণকারীদের কাছে স্বর্ণ ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে। গত সেপ্টেম্বরে স্বর্ণের দাম ব্যাপক কমে। বিগত ২ বছরের মধ্যে তা সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে যায়। তবে এরপর থেকে এখন পর্যন্ত প্রতি আউন্সের মূল্য ২০০ ডলার বেড়েছে।
সেই হিসাবে ২০২০ সালের জুনের পর সেরা প্রান্তিক কাটানোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল স্বর্ণ। ইউএস কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমাতে পারে –এ আশায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তবে আশায় গুড়েবালি।
চলতি ডিসেম্বরে আবার সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে ফেড। ফলে ডলারের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী থাকায় স্বর্ণের দাম কমতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। এর আগে টানা ৪বার ৭৫ বেসিস পয়েন্ট সুদহার বাড়ায় মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সাধারণত, সুদের হার বাড়লে স্বর্ণ মজুত রাখার খরচ বেড়ে যায়। অধিকন্তু এতে সুদ পাওয়া যায় না।
স্পিভাক বলেন, ২০২৩ সালে স্বর্ণের দামে অস্থিরতা বিরাজ করতে পারে। তবে সেটা খুব বেশি মাত্রায় নয়। কারণ, শক্তিশালী ডলার ও নিম্নমুখী ট্রেজারি ইল্ডের মধ্যে তা আটকে থাকবে।