‘উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের আগে পলিসি দেখতে চায়’
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিদেশি উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের আগে বিনিয়োগযোগ্য পলিসি ও পরিবেশ দেখতে চায় বলে জানিয়েছেন জাতীয় সংসদ সদস্য এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী।
সোমবার (১৩ মার্চ) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এফবিসিসিআই আয়োজিত বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের ‘সার্কুলার ইকোনোমি’ শীর্ষক সেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ আগামী ৫০ বছরে কী করবে এখনই তা ভাবার সময়। বিদেশি উদ্যোক্তারা এখানকার নীতি দেখতে চায়, কারণ তাদের চয়েজ রয়েছে। তারা অন্য দেশেও বিনিয়োগ করতে পারে।
তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের তুলনায় যদি এখানে সুযোগ-সুবিধা বেশি হয়, তাহলে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে। না হলে অন্য দেশে চলে যাবে। আমরা আমাদের উন্নয়নের পর্যালোচনা করতে পারি। নতুন করে আবার কীভাবে উন্নয়ন করা যায় সেটা নিয়ে কাজ করবো।
রিসাইকেলিং অর্থাৎ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে রিসাইকেলিংয়ের অবস্থা কি হবে তা নিয়ে চিন্তা করার এখনই সময়।
বাংলাদেশ বিশ্ব কমিউনিটির সঙ্গে কাজ করতে চায়। তাই উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, বাংলাদেশে বিনিয়োগের এখনই সময়, অন্যরা বিনিয়োগের আগে আপনারা চলে আসুন। এখানে বিনিয়োগ করলে উইনিং উইনিং সিচুয়েশনে থাকবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইইউ রাষ্ট্রদূত সট চার্লস হোয়াইটলি বলেন, ডাবিং চক্রাকার অর্থনীতিতে জোর দিচ্ছে গোটা বিশ্ব। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, শুধু বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের প্রধান বাজারই নয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক বাজার। আলোচনায় ইইউ প্রতিনিধি জানান, কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনাসহ পরিবেশ রক্ষার শর্ত পূরণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, চক্রাকার অর্থনীতির অন্যতম কেন্দ্র হতে পারে বাংলাদেশ। এরইমধ্যে এখাতে বিনিয়োগ বাড়াতে শুরু করেছে বেশকিছু শিল্পগ্রুপ। আছে ছোট ছোট উদ্যোগও।
তারা বলছেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে নীতি নির্ধারণ ও সিইও, বিনিয়োগের মাধ্যমে এখাতে নজর দেওয়ার সময় এসেছে। তারা জানান, চক্রাকার অর্থনীতি যেমন টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে, তেমনি নতুন নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি হবে।
তৈরি পোশাক হোক, আর নির্মাণ সামগ্রী কিংবা ইলেকট্রনিকস সামগ্রী মানুষের নিত্য ব্যবহার্য নানা পণ্যের কাঁচামাল আসে প্রকৃতি থেকে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দিনে দিনে কঠিন হচ্ছে প্রকৃতি থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ। আবার ব্যবহারের পর পণ্যগুলো হয়ে যায় বর্জ্য। যা পরিবেশের জন্য চরম হুমকি। এসব সমস্যার বড় সমাধান, এক পণ্যের বারবার ব্যবহার। যাকে বলা হচ্ছে চক্রাকার অর্থনীতি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের পাশাপাশি অনেক বড় শিল্পগ্রুপও শুরু করেছে চক্রাকার উৎপাদন প্রক্রিয়া। আলোচনায় বেক্সিমকো টেক্সটাইলের সিইও জানান, ২০২৪ সালের মধ্যে বেক্সিমকো হবে শূন্য কার্বন নিঃসরণকারী কোম্পানি। এজন্য টেক্সটাইলসহ নানা খাতে পরিবেশবান্ধব ও রিসাইকেল শিল্পে বিনিয়োগ করছে গ্রুপটি।
বেক্সিমকো টেক্সটাইলের সিইও সৈয়দ নাভিদ হোসেন বলেন, মুনাফার পেছনে নয়, আমরা শুরুতে মানুষ এরপর প্রকৃতির দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। মানুষ অর্থবিত্ত ও শক্তির দিকে এখন ঝুঁকছে। আমরা ২০-২১ সালের দিকে তাকালে দেখতে পাই, মহামারিতে কি সেগুলো কাজে লেগেছিল? এখন এসবকে পিছে ফেলে টেকসই অর্থনীতি বিশেষ পরিবেশ ব্যবস্থা নিয়ে ভাবতে হবে।