আজ: শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৫ মার্চ ২০২৩, বুধবার |

kidarkar

উচ্চ প্রভিশনিং এবং সুদ স্থগিতে বিডি ফাইন্যান্সের মুনাফা কমেছে ৮.২ শতাংশ

শাহ আলম নূর : বাংলাদেশ (বিডি) ফাইন্যান্স লিমিটেড’র ২০২২ সালের নিট মুনাফা কমেছে ৮.২ শতাংশ। উচ্চতর প্রভিশনিং, সুদ স্থগিতকরণের কারণে বিডি ফাইন্যান্সের মুনাফা কমেছে বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ (শেয়ার প্রতি ১ টাকা ) লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেড। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ।
ডিএসইর তথ্য মতে, বিদায়ী বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ২৫ পয়সা। সেখান থেকে ১৮ কোটি ২৩ লাখ ৩৬ হাজার ২৬৭টি শেয়ারহোল্ডারদের এক টাকা করে লভ্যাংশ দেবে প্রতিষ্ঠানটি। বাকি অর্থ কোম্পানির রিজার্ভ ফান্ডে জমা হবে।
এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ১ টাকা ৩৬ পয়সা। সেখান থেকে ৬ শতাংশ নগদ আর বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেওয়া হয় ৬ শতাংশ। সেই হিসাবে আগের বছরের চেয়ে মুনাফা কমেছে ২ শতাংশ।
পর্ষদ ঘোষিত এই লভ্যাংশ শেয়ারহোল্ডারদের সর্বসম্মতিতে অনুমোদনের জন্য কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) দিন নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৩০ এপ্রিল। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ এপ্রিল।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানির এনএভি হয়েছে ১৭ টাকা ৪১ পয়সা। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল কোম্পানিটি। তার আগের বছরও ১২ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।
২০০৭ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির বর্তমান ঋণ রয়েছে ২৮৪ কোটি ৭৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা। আজ (মঙ্গলবার) দিনের শুরুতে শেয়ারটির বাজার মূল্য ছিল ৪৪ টাকা ১০ পয়সা।
তথ্যে দেখা যায় অতিরিক্ত সুদের সাসপেন্স, চাপযুক্ত ঋণ, ইজারা এবং অগ্রিমের বিপরীতে উচ্চতর বিধান এবং সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ থেকে কম আয়ের কারণে এর মুনাফা কমেছে।
বিডি ফাইন্যান্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও কায়সার হামিদ বলেন যে কোম্পানিটি গত এক বছরে আমানতের গড় খরচ ৬৬ বেসিস পয়েন্ট কমাতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও মুনাফা কমেছে। তবে আমানত ৪.৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি একটি বিরল ঘটনা।
তিনি বলেন ২০২২ সাল প্রতিষ্ঠানটির জন্য একটি কঠিন সময় পার করেছে। কারণ তাদের গ্রাহকদের ব্যবসা বেশ মন্তদার সম্মুখিন হয়েচে। এতে তারা নির্ধারিত সময়ে ঋণ পরিশোধ করতে ব্যার্থ হয়েছে। এক বছরে বিডি ফাইন্যান্সের নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল) কিছুটা বেড়েছে। এতে উচ্চ প্রভিশনের প্রয়োজন ছিল। যা তাদের মুনাফার উপর প্রভাব ফেলেছে।
ব্যাংকিং নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি ঋণদাতাকে তার আয়ের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ এনপিএলের অনুপাতে আলাদা করে রাখতে হয় এবং সেই পরিমাণকে তাদের প্রভিশন বলা হয়।
এদিকে মন্দ ঋণের বিপরীতে কিছু সুদের আয় কাগজে-কলমে জমা হয়। কিন্তু বাস্তবে অর্জিত হয় না। যা লাভ-ক্ষতির হিসাব থেকে বাদ দেওয়া প্রয়োজন এতে সাসপেন্স অ্যাকাউন্টে এর পরিমাণ বাড়তে থাকে।

তিনি বলেন রিটেইল এবং এসএমই আমানতের উপর ফোকাস দেয়ার কারনে এনবিএফআই এক বছরে তার ধার নেওয়ার খরচ কমাতে সাহায্য করেছে। যখন সমগ্র আর্থিক বাজারে ঋণের খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২২ সালে পুঁজিবাজার বিনিয়োগ বিডি ফাইন্যান্সের জন্য লাভজনক ছিল যখন ডিএসইএক্স, ডিএসইর প্রধান ইক্যুইটি সূচক ৮.১% কমে যায় এবং বিডি ফাইন্যান্সের বিনিয়োগ আয় তার একীভূত পুঁজিবাজার পোর্টফোলিওর ২৭%-এ নেমে আসে, যা ২০২১ সালে ৪৩% ছিল।
হামিদ বলেন, “আমাদের পুঁজিবাজারের রিটার্ন আগের বছরের তুলনায় কম ছিল, তবে সামগ্রিক বাজারের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।” বিডি ফাইন্যান্সের ব্রোকারেজ সাবসিডিয়ারি সামান্য বেশি মুনাফা করেছে যখন এর মার্চেন্ট ব্যাংকিং সাবসিডিয়ারি ২০২২ সালে আয় হ্রাসের সম্মুখীন হয়েছে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.