বিশ্বে ২৬ শতাংশ মানুষ নিরাপদ সুপেয় পানি পাচ্ছেন না : জাতিসংঘ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে পানির অপচয় রোধের আহ্বান জানিয়ে এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ জানিয়েছে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ এখন পর্যন্ত নিরাপদ সুপেয় পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত; আর মৌলিক পয়োনিষ্কাশনের জন্য নিয়মিত পানির নিশ্চয়তা নেই— শতকরা হিসেবে এমন মানুষের হার ৪৬ শতাংশ।
সংখ্যার হিসেবে বর্তমানে বিশ্বে ২০০ কোটিরও বেশি মানুষের নিরাপদ সুপেয় পাানির নিশ্চয়তা নেই, আর পয়োনিষ্কাশনের জন্য নিয়মিত পানির সুবিধা নেই ৩৬০ কোটিরও বেশি মানুষের।
২২ তারিখ আন্তর্জাতিক পানি দিবস। পানির অপচয় রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রায় ৫ দশক আগে এই দিনটিকে ‘পানি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে জাতিসংঘ।
তবে সম্প্রতি এই ইস্যুতে জাতিসংঘ আরও বিশ মনযোগ দিচ্ছে। চলতি বছর পানি দিবসে বিশ্বের বৃহত্তম এই আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংস্থার উদ্যোগে এবং সদস্যরাষ্ট্রগুলোর অংশগ্রহণে বড় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পানি নিয়ে এই প্রথম এত বৃহৎ আকারের সম্মেলনের আয়োজন করেছে জাতিসংঘ।
সম্মেলনে জাতিসংঘের প্রতিবেদনটি পাঠ করা হয়। সেখানে আরও বলা হয়, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের সব মানুষের জন্য নিরাপদ সুপেয় পানি এবং পয়োনিষ্কাশণের জন্য প্রয়োজনীয় পানির নিশ্চিয়তা চায় জাতিসংঘ।
প্রতিবেদনের প্রধান সম্পাদক রিচার্ড ক’নর বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, জাতিসংঘ যে লক্ষ্য নিয়েছে, তা পূরণ করতে হলে এখন থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ব্যয় করতে হবে ৬০ হাজার কোটি থেকে ১ লক্ষ কোটি ডলার।
এই প্রকল্পকে এগিয়ে নিতে এবং জাতিসংঘকে সহায়তা করতে বিনিয়োগকারী, ধনী ব্যক্তিবর্গ ও সদস্য বিভিন্ন রাষ্ট্রের সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রিচার্ড ক’নর।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৪০ বছর ধরে প্রতি বছর বিশ্বে পানি ব্যবহারের পরিমাণ বাড়ছে ১ শতাংশ করে এবং বর্তমানে বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির যে হার, তাতে আগামী ২০৫০ সাল পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে রিচার্ড ক’নর বলেন, পানির ব্যবহার মূলত বাড়ছে উন্নয়নশীল ও উদীয়মান অর্থনীতির বিভিন্ন দেশের কারণে। প্রতি বছর এসব দেশে একদিকে যেমন বাড়ছে কৃষি ও শিল্পোৎপাদন, তেমনি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জনসংখ্যাও।
এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণেও পানির ওপর চাপ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা।
‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে গত কয়েক বছরৈ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনেক কৃষি অঞ্চল খরাপ্রবণ হয়ে উঠছে। ফলে উৎপাদন চালু রাখতে সেচের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে কৃষকদের। এই মুহূর্তে বিশ্বের স্বাদু পানির ৭০ শতাংশই ব্যবহার হচ্ছে কৃষিখাতে,’ সংবাদ সম্মেলনে বলেন রিচার্ড ক’নর।