আজ: মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৮ মার্চ ২০২৩, মঙ্গলবার |

kidarkar

এটি আমার ক্যারিয়ার ধ্বংসের নীলনকশা

বিনোদন ডেস্ক : ঢালিউডের নায়কোত্তম খ্যাত শীর্ষনায়ক শাকিব খানের জন্মদিন আজ। ঈদেও বড় পর্দায় আসছেন। এ বিষয় ও সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, থানা, পুলিশ, মামলা প্রসঙ্গে শাকিব খানের বলা কথা তুলে ধরেছেন – আলাউদ্দীন মাজিদ

আজ আপনার জন্মদিন, শুভেচ্ছা রইল, দিনটি কীভাবে কাটাবেন

ধন্যবাদ, আসলে এখন সিয়াম সাধনার পবিত্র রমজান মাস চলছে। তাই ঘটা করে কিছু করার ইচ্ছা নেই। আসলে আমি কখনো জন্মদিন নিয়ে খুব একটা উচ্ছ্বসিত হই না। কারণ জন্মদিন মানে জীবন থেকে একটি বছর চলে যাওয়া। তবুও পরিবার আর দর্শক-ভক্তরা আমার জন্মদিনে নানা আয়োজন করে থাকে। আজকের জন্মদিনে আমি সবার দোয়া চাই যাতে আগামীতে দেশ, জাতি ও চলচ্চিত্র জগৎকে আরও সমৃদ্ধ কাজ উপহার দিতে পারি।দীর্ঘ দুই বছর ধরে ছবিঘরে আপনার কোনো নতুন ছবি আসছে না, এবারের ঈদে কী আসছেন?

হ্যাঁ, এই ঈদে আমার অভিনীত ‘লিডার : আমিই বাংলাদেশ’ ছবিটি বড় পর্দায় আসছে। ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়া ও ছবিটির নির্মাতা তপু খানও ঈদে ছবিটির মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এবার জানতে চাইব আপনার বিরুদ্ধে আনীত রহমত উল্লাহর অভিযোগের বিষয়ে কোনো আপডেট কি আছে?

রহমতের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা রুজু করেছি, রহমত আমার থেকে সিনেমার শুটিং শিডিউল ফাঁসানো ও মহিলা প্রযোজককে ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগ তুলে সাড়ে ৫ হাজার ডলার নেন। আমি আসলে ‘হানি ট্র্যাপ’-এর শিকার। আমি বিশ্বাস করি, এই চক্র যত বড়ই হোক না কেন, সুষ্ঠু বিচার আমি পাব। আদালত যাচাই-বাছাই করে আমার মামলাটি গ্রহণ করেছেন। আইনের ওপর আমার বিশ্বাস আছে, শ্রদ্ধা আছে। রহমত উল্লাহর অভিযোগগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট। আদালত আমার জবানবন্দি শুনে বিবাদী রহমত উল্লাহকে আগামী ২৬ এপ্রিল আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে সমন জারি করেছেন। আমি অবশ্যই ন্যায়বিচার পাব। কারণ আমি আবারও জোর দিয়ে বলছি আমি নির্দোষ।

এ ঘটনার আড়ালে কী কারণ রয়েছে বলে আপনার ধারণা?

আমি জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকায় একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট বা অপশক্তি আমার পিছু লেগেছে। এটি একটি ‘হানি ট্র্যাপ’, এটি আমার কথা নয়, অস্ট্রেলিয়ার পুলিশের বক্তব্য। আমার হাতে ‘ধর্ষিতা’ হয়েছেন যে নারী বলে অভিযোগ করা হচ্ছে, তিনি তো ইতোমধ্যেই সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলেছেন। বাংলাদেশ ও কলকাতার সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে আমার প্রসঙ্গ টেনে আমার হয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে, সে সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। সিনেমাটি সম্পূর্ণ করা হবে কি না, তা নিয়েও আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। আর আমার ব্যক্তিগত ঘটনা নিয়ে যে সব কথা হচ্ছে, তার জন্য আমি কাউকে অনুমতি দিইনি। এমনকি এ প্রসঙ্গ নিয়ে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, তা-ও আমি জানতাম না। ২০১৬ সালের অভিযোগটি এখনো তদন্তাধীন। কী করব, তা ভবিষ্যতে বিবেচনা করব। এখন আমি এসব নিয়ে ভাবছি না।’ সত্যি আমি কোনো অপরাধ করলে অস্ট্রেলিয়ার কঠিন নিয়মনীতি থেকে নিজ দেশে ফিরে আসতে পারতাম না। ২০১৬ সালের যে সময়ের কথা বলা হয়েছে তার দুই সপ্তাহ পর পর্যন্ত সেখানে ছবিটির কাজ করেছি। যদি তখন আমি গ্রেফতার হতাম তাহলে দেশে আসলাম কীভাবে? কারণ সেখানে গ্রেফতার হলে মামলার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত থানা বা কোর্ট থেকে জামিন পাওয়া যায় না। তাছাড়া আমি যদি কোনো মামলার আসামি হতাম তাহলে তখন কী সেখানকার মাল্টিকালচার মিনিস্টার আমাকে আমন্ত্রণ জানাতেন, সংবর্ধনা দিতেন। এরপর ২০১৮ সালে ‘সুপার হিরো’ ছবির শুটিংয়ে আবার অস্ট্রেলিয়া গেলাম। আমি যদি কোনো মামলার আসামি হয়ে থাকি তাহলে দুইবার সেখানে গিয়ে আবার ফিরে এলাম, এটি কী সম্ভব? তাছাড়া যে কথিত ঘটনাস্থলের কথা বলা হচ্ছে সেখানে তো সিসিটিভি রয়েছে। কোথায়, কোনো ভিডিও ফুটেজও তো পাওয়া যায়নি। অস্ট্রেলিয়ার ওই মামলা ভিত্তিহীন। সে বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার পুলিশের স্টেটমেন্টই তার প্রমাণ। যেখানে আমাকে দোষী নয়, নির্দোষ বলা হয়েছে। পুলিশ তখন আমাকে বলেছে, ‘ইটস অ্যা হানি ট্র্যাপ’, চিন্তা করিও না কাজ করে যাও।

এ ঘটনায় আপনার ফিল্ম ক্যারিয়ার নিয়ে কি আপনি চিন্তিত?

না, এমন ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনায় আমার ফিল্ম ক্যারিয়ারের কোনোই ক্ষতি হবে না। কারণ সবাই বুঝতে পারছে এটি আমার ক্যারিয়ার ধ্বংসের একটি নীলনকশা মাত্র। তারপরও বলব অভিনেতার বাইরে আমিও একজন মানুষ, আমারও পরিবার আছে। সন্তান আছে। আত্মীয়-স্বজন আছে। তাঁদের কাছে মাথা উঁচু করে এখন বলতে পারছি। কিন্তু শুরুতে যখন অভিযোগগুলো আনা হয়, আমি বারবার বলছিলাম, এটা একটা ট্র্যাপ ছিল। যা অস্ট্রেলিয়ায়ই শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু নানা ধরনের বিভ্রান্তিমূলক সংবাদের কারণে আমার পরিবারও দুশ্চিন্তায় ছিল। তাঁদের মুখ দেখাতে কষ্ট হয়েছে। অন্যায়টা আমি করিনি, অন্যায়টা আমার সঙ্গে হয়েছে। যারা আমার বিরুদ্ধে অসত্য ও ভিত্তিহীন অভিযোগ নিয়ে এসেছিল, তারা পালিয়েছেন। শুধু রিল কিংবা পর্দায় নয়, রিয়েল লাইফেও যারা সত্যের পক্ষে থেকে লড়াই করেন, প্রতিবাদ করেন-তাদেরই জয় হয়। আমি ষড়যন্ত্রকারীর বিরুদ্ধে মামলা করায় আমারই জয় হলো।

অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য পুলিশের ‘ইভেন্ট রেফারেন্স নম্বর ৬২৪৯৪৯৫৯’-এর তথ্যমতে আপনার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ প্রতিবেদনের অস্তিত্ব রয়েছে, এ ব্যাপারে কী বলবেন?

অস্ট্রেলিয়ায় আমার বিরুদ্ধে মামলা হলে আমি সেখান থেকে আসতে পারতাম না। সেটা কোনো কেস নম্বর নয়, ইভেন্ট নম্বর। পরতে পরতে রহমত উল্লাহর সব মিথ্যা কথা। তার একটাই কথা, ‘টাকা দেন’। ‘ইটস অ্যা ট্র্যাপ।’ আমার অস্ট্রেলীয় আইনজীবী উপল আমিন একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। বার্তার শুরুতেই তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় যে কেউ পুলিশ স্টেশনে গিয়ে যে কোনো ব্যাপারে রিপোর্ট করলে তাকে একটা ইভেন্ট নম্বর দেওয়া হয়। বাংলাদেশে জিডি বলা হয়। আর অস্ট্রেলিয়ায় ইভেন্ট নম্বর বলা হয়। দুটি জিনিস কিন্তু একই। এখন একটা ইভেন্ট নম্বর পাওয়া মানে এই নয় যে, কারও নামে কোনো মামলা হয়েছে। বাংলাদেশে শাকিব খানের বিরুদ্ধে যা প্রোপাগান্ডা চলছে, আমি মনে করি, তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক। শাকিব খানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রহমত উল্লাহ এনেছেন, এটা একটা অর্থনৈতিক চক্রান্ত।’

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই এমন অনেক ষড়যন্ত্র মুখ বুঝে সহ্য করেছেন, কেন?

মুখ বুঝে অন্যায় মেনে নেওয়ার দিন শেষ। যেই অন্যায় করুক না কেন তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। শুধু রুপালি জগতের পর্দায় অন্যায়ের প্রতিবাদ দেখালে হবে না, বাস্তবেও তা করে দেখাতে হবে। এই হেসেল, এটা সহ্য করার ক্ষমতা কারও থাকে না। কিন্তু আমার মনে হয়েছে, রিল লাইফে আমি যেমন প্রতিবাদী, অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি-রিয়েল লাইফেও আর মুখ বুজে সহ্য করব না। এ জন্যই সেদিন বলেছি, বোবা সেজে থাকার আর সময় নেই।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.