নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্ব মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে দেশের অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। ক্ষুদ্র ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সরকার এই খাতের উদ্যোক্তাদের কয়েক দফায় স্বল্প সুদে প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ দিয়েছে। এতে ধারাবাহিকভাবে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ বাড়ছে। ব্যাংকগুলো ২০২২ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিকে খাতটিতে ৬০ হাজার ৬১২ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করে। তবে নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি ব্যাংক খাত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সাল শেষে ব্যাংক খাতের মাধ্যমে বিতরণকৃত মোট ঋণস্থিতি ছিল ১৩ লাখ ৮৭ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে এসএমই খাতে ঋণ বিতরণের করা হয় ২ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকা। যা ব্যাংক খাতের মোট ঋণের ২০ শতাংশ
করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এ ব্যবসায়ীরা যেনো ক্ষতি সামলিয়ে টিকে থাকতে পারেন, সেজন্য সরকার তাদেরকে কয়েক দফায় স্বল্প সুদে প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ দিয়েছে। তারপরও অনেক ছোট ব্যবসায়ী কম বিনিয়োগ করেছেন। করোনার প্রভাব এখন আর নেই, তাই নতুন বিনিয়োগের কারণে ঋণের পরিমাণও বেড়েছে। একইসঙ্গে আমদানি-রপ্তানিও বেড়েছে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এসএমই ঋণের উপখাতে মাইক্রো ক্রেডিটে ৩৩ হাজার ৮৭৯ কোটি, ক্ষুদ্র উপখাতে এক লাখ ২৬ হাজার ৪৩৬ কোটি এবং মাঝারি উপখাতে ৫৫ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকা বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো।
জানা যায়, এসএমই খাতে দেওয়া ঋণ পেয়েছেন ১১ লাখ ২৪ হাজার ১৯৩ জন উদ্যোক্তা। আলোচ্য সময়ে এসমএই ঋণ বিতরণের স্থিতি ২,৮২,৮৯৭ কোটি টাকা। ২০২১ সালে এসএমই ঋণের এই স্থিতি ছিল ২,৫২,০৮২ কোটি টাকা।
চলতি বছরের ১৬ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংক এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ বাড়ানোর এক নির্দেশনায় বলা হয়, ২০২৪ সালে সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণের ৫০ শতাংশ দিতে হবে কুটির, অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোগে। আর নারী উদ্যোগে দিতে হবে ১৫ শতাংশ ঋণ। এছাড়া খাতটির মোট ঋণের ৪০ শতাংশ যাবে উৎপাদনশীল খাতে, সেবা খাতে ২৫ শতাংশ ও ব্যবসা খাতে ৩৫ শতাংশ।
এছাড়া এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের কম সুদে ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য চালু করা হয়েছে একাধিক পুনঃ অর্থায়ন তহবিল। আবার এসএমই ঋণে গ্যারান্টি সুবিধাও দিচ্ছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর সময়ে এসএমই খাতে নতুন উদ্যোক্তাদের মধ্যে ৭ হাজার ৭২২ কোটি টাকা ঋণ দেয় ব্যাংকগুলো। পল্লী এলাকার এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিতরণ করা হয় ১৭ হাজার ৪২২ কোটি টাকার ঋণ। আলোচিত সময়ে জামানতবিহীন ঋণ ৮ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়।