অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রদূত মুক্তিযোদ্ধা ওয়ালিউর রহমান তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধকালীন কূটনীতিকদের সাহসিকতা এবং দেশের জন্য তাদের অবদান তুলে ধরেন। তিনিও তাঁর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা হতে প্রাপ্ত সমুদয় অর্থও ফরেন অফিস স্পাউস অ্যাসোসিয়েশন এর তহবিলে দান করার ঘোষণা করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বীর বিক্রম এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, বীর বিক্রমকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) খুরশিদ আলম। অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনতসি, ফরেন অফিস স্পাউসেস অ্যাসোসিয়েশন (ফোসা) এর সভাপতি ফাহমিদা জাবিন, মুক্তিযুদ্ধে কূটনৈতিক ফ্রন্টে কর্মরত প্রাক্তণ কূটনীতিকরা অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন। এ সময় বক্তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী ত্যাগী নেতাদের, সব মুক্তিযোদ্ধাদের এবং মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা সকল মহান কূটনৈতিককে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সাবেক ও বর্তমান কূটনীতিক, ঢাকাস্থ বিভিন্ন বিদেশি কূটনীতিক, ফরেন অফিস স্পাউসেস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশি  কূটনীতিকগণের সাহসী ও গৌরবময় অবদানের স্মরণে ২০১২ সাল হতে ১৮ এপ্রিল দিনটি ফরেন সার্ভিস ডে হিসেবে পালন করা হয়। মুজিবনগর সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশপূর্বক এবং দখলদারি পাকিস্তান সরকারকে ত্যাগ করে ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল কলকাতায় তৎকালীন পাকিস্তান ডেপুটি হাইকমিশনের বাংলাদেশি কূটনীতিক ও দূতাবাসকর্মীরা পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রথম দূতাবাস প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তিতে তদানীন্তন বিভিন্ন পাকিস্তানি দূতাবাসসমূহে কর্মরত বাংলাদেশি কূটনীতিকরা পাকিস্তান সরকারের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনপূর্বক মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের কূটনৈতিক ফ্রন্টকে বেগবান করেন। রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধারা যখন সম্মুখ সমরে লিপ্ত, তখন বাংলাদেশি কূটনীতিকরা বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পক্ষে প্রচারনা ও জনমত গঠনের কাজ শুরু করেন এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কর্মকাণ্ড  বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয়ে একটি সার্বভৌম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।