আজ: রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

৩০ এপ্রিল ২০২৩, রবিবার |

kidarkar

ঈদযাত্রায় সড়কে ঝরেছে ৪৫১ প্রাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :এবার এপ্রিলজুড়ে ছিল ঈদের আমেজ। এ মাসের শুরু থেকেই ঈদ ঘিরে অনেকে পরিবার-পরিজন আগেভাগে গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেন। দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পুরোদমে শুরু হয় ঈদযাত্রা। গত ২২ এপ্রিল দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়। এরপর আবার কর্মস্থলে যোগ দিতে গ্রাম ছেড়ে শহরে ফেরেন কর্মজীবী মানুষ।

এ ঈদযাত্রায় ছোট-বড় মিলিয়ে সড়কে দুই হাজার ৫০৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ৪৫১ জন। আহত হয়েছেন অন্তত দুই হাজার ৫২৭ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটেছে বাস দুর্ঘটনা। বাস দুর্ঘটনায় নিহতও সবচেয়ে বেশি ২৮২ জন।

তবে মার্চের তুলনায় এপ্রিলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ৫৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ অর্থাৎ অর্ধেকের বেশি কমেছে। নিহত-আহতের সংখ্যাও আগের মাসের তুলনায় অর্ধেকে নেমেছে।

সেভ দ্য রোড-এর প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থার মহাসচিব শান্তা ফারজানার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। দেশের ২২টি জাতীয় দৈনিক, ২০টি টেলিভিশন চ্যানেল, ৮৮টি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদ এবং স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও সংস্থার স্বেচ্ছাসেবীদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন করেছে সেভ দ্য রোড।

এজন্য তিনি সেভ দ্য রোড-এর প্রতিবেদন-সচেতনতামূলক কর্মসূচির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রশাসনের সক্রিয়তায় চালক-পথচারী ও যাত্রী সাধারণের মধ্যে সচেতনতা-সাবধানতা অবলম্বন করার বিষয়টিকে সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপ্রিলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৩১টি। এতে নিহত হয়েছেন ৩৪ জন এবং আহত হয়েছেন ৪৩৫ জন। ৬৪৫টি ট্রাক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪৩ জন এবং আহত ৩৬৮ জন। সবচেয়ে বেশি ৮০৮টি বাস দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৮২ জন এবং আহত হয়েছেন ৯৪৩ জন। এছাড়া নসিমন-করিমনসহ অন্য তিন চাকার বিভিন্ন যানবাহনের ৬২২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন ৭৮১ জন এবং নিহত হয়েছেন ৮৯ জন।

এতে চালকদের নির্ধারিত গতিসীমা না মানা, বিশ্রাম না নিয়ে টানা ১২-২০ ঘণ্টা গাড়ি চালানোসহ বিভিন্ন অনিয়মকে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে সেভ দ্য রোড। এছাড়া প্রশাসনের দায়িত্বে অবহেলা, পুলিশ ও প্রশাসনের দুর্নীতিকেও দায়ী করেছে সংস্থাটি।

সেভ দ্য রোডের প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, এবার বিভিন্ন স্থানে পরিবহন ভাড়া দুই থেকে তিনগুণ বেশি আদায় করার কারণে যাত্রীরা চরম ভোগান্তির কবলে পড়লেও বিআরটিএ বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কোনো মনিটরিং টিম ছিল না। বগুড়া, বরিশাল, নওগাঁ, ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ দেশের অধিকাংশ সড়ক পরিবহন মালিক কর্তৃপক্ষই ভাড়া নৈরাজ্য করে যাত্রীদের চরম ভোগান্তির মুখে ঠেলে দিয়েছে।

সেভ দ্য রোডের চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী, ভাইস চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, জিয়াউর রহমান জিয়া, আইয়ুব রানা ও লায়ন ইমাম হোসেনের তত্ত্বাবধানে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

সেভ দ্য রোড-এর অঙ্গীকার ‘পথ দুর্ঘটনা থাকবে না আর’ স্লোগান সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে ২০০৭ সালে পথচলা শুরু করে এ সংস্থাটি। এরপর থেকে সড়ক, রেল, নৌ, আকাশপথ দুর্ঘটনামুক্ত করতে সচেতনতা, গবেষণা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে কাজ করছে তারা।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.