পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতায় মুদ্রানীতি সহায়ক হবে: গভর্নর
শেয়ারবাজার রিপোর্ট : আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতার পাশাপাশি পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়ক ভূমিকা অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধেও অব্যাহত থাকবে।
পুঁজিবাজারের বিষয়ে এমন বিবৃতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আতিউর রহমান আজ বৃহষ্পতিবার তেমন কোন পরিবর্তন ছাড়াই ২০১৪-২০১৫ অর্থবছর দ্বিতীয়ার্ধের অর্থাৎ জানুয়ারি-জুন সময়ের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছেন।
মুদ্রানীতিতে চলতি অর্থবছরে দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ৬.৮ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৬.১৫ শতাংশ ধরা হয়েছে। এছাড়া কৃষিখাতে সুদের হার ২ শতাংশ কমিয়ে ১১ শতাংশ করা হয়েছে। এর আগে এটি ছিল ১৩ শতাংশ। প্রণীত মুদ্রানীতি প্রোগ্রামে ব্যাপক মুদ্রা যোগানের প্রবৃদ্ধি সমগ্র সমগ্র অর্থবছরে ১৬.৫ শতাংশে পরিমিত রাখা হবে। বেসরকারি খাতে ঋণ যোগানের প্রবৃদ্ধির মাত্রা ধরা হয়েছে ১৫.৫ শতাংশ।
মুদ্রানীতির বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি এখনো ৬.৫০ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার ওপরে থাকা, কোর মূল্যস্ফীতির উর্ধ্বমুখী প্রবণতায় থাকা এবং চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতাজনিত বৈরি প্রভাবের প্রেক্ষাপটে অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে মুদ্রানীতিতে নতুন কোনো শিথিলতা কঠোরতা না এনে আগেকার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হচ্ছে’।
এছাড়া এবারের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বৈদেশিক অর্থায়ন ব্যবহারের সুযোগ থাকছে। অপরদিকে মুদ্রাযোগানে প্রবৃদ্ধির যে পরিসর মুদ্রানীতিতে রাখা হয়েছে তা অনুকূল পরিবেশে জিডিপি’র সরকার নির্ধারিত উচ্চতর প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অর্থায়নের জন্যেও পর্যাপ্ত হবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষার বিষয়ে ঘোষিত মুদ্রানীতির ভূমিকা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, ‘পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে আইনের অনুশাসন পরিপালনে নজরদারির সঙ্গে সঙ্গে এ বাজারের কার্যক্রমে মুদ্রানীতি প্রোগ্রামের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ মাত্রায় তারল্য যোগান বজায় রাখা হয়েছে। পুঁজিবাজারে শেয়ার ইস্যু না হওয়া কোম্পানিগুলোতে বিদেশী প্রাইভেট ইক্যুইটিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রির জন্যে মূল্যায়নে নীট এ্যাসেট ভ্যালুর পরিবর্তে বাস্তব সম্মত বাজারভিত্তিক মূল্যায়ন গ্রহণীয় হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা জারি করেছে’। এসব উদ্যোগ পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে নিয়ামক ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন তিনি।
পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের আন্তরিকতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, ‘ধ্বস পরবর্তী বাজারের উন্নয়ন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের রক্ষায় ৯০০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের বিশেষ স্কীম বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে নেয়া হয়। এছাড়া পুঁজিবাজারি এবং বীমা খাত নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষগুলোর সাথে বাংলাদেশ ব্যাংক তিন মাস পরপর নীতি সমন্বয় সভায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করছে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকগুলোর ক্ষতির বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণেও বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ ছাড় দিয়েছে। অপরদিকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ তিন বছরের মধ্যে নির্ধারিত সীমায় নামিয়ে আনার বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তাছাড়া আগামী দিনগুলোতেও বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মনীতির মধ্য থেকে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সহযোগীতা অব্যাহত রাখবে’।
এ সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টাসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শেয়ারবাজার/ আ হা