সংঘাত নয়, শান্তিতে বিশ্বাসী বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্ব শান্তি-নিরাপত্তায় বাংলাদেশ এখন দায়িত্বশীল ও নির্ভরযোগ্য নাম। । শান্তি প্রতিষ্ঠায় সব দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে সরকার।
সোমবার (২৯ মে) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২৩’ উদযাপন এবং বিশ্ব শান্তিরক্ষায় শাহাদত বরণকারী ও আহত সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আত্মসমাজিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের প্রতিটি বাহিনীর, প্রতিটি মানুষের জীবন মান এবং তাদের দায়িত্ব পালনের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা আমরা সৃষ্টি করে দিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর আজকের ২০২৩ সাল একটা শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজমান, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত বলেই আজকে মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত হয়েছে, ভাতের অধিকার নিশ্চিত হয়েছে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের অগ্রগতি স্থিতিশীল পরিবেশের জন্যই সম্ভব হয়েছে। একটা স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ পারে একটি দেশকে উন্নয়নের ধারা গতিশীল করতে এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। ২০২৬ সাল থেকে একটা বাস্তবায়ন করব। ২০৪১ সালের মধ্যে এই বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রযুক্তি ব্যবহার, ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার। আইসিটি ব্যবহারের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশ ওয়াইফাই এর কানেকশন দিতে পেরেছি। আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছি ঘরে ঘরে, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেই বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমরা স্মার্ট জনগোষ্ঠীর গড়ে তুলবো, আমরা স্মার্ট অর্থনীতি গড়ে তুলবো, স্মার্ট সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলবো, আমাদের আত্মসমাজিক সব উন্নয়ন হবে স্মার্ট। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি সংঘাতে নয়। বাংলাদেশ সবসময় শান্তি বিশ্বাস করে, এই শান্তি করার জন্য যা যা করণীয় বাংলাদেশ তা করব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রসার ও অগ্রযাত্রার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে অপশক্তিগুলোর নতুন নতুন হুমকি। ফলে, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে শান্তিরক্ষীদের বহুমাত্রিক জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তাই শান্তিরক্ষা মিশনগুলো উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে সমৃদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা এখন বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা যাতে বিশ্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং এবং বিপজ্জনক অঞ্চলসমূহে সৃষ্ট জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারে সেজন্য আমরা তাদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ দিয়ে সর্বদা প্রস্তুত রেখেছি। মিশন এলাকার পরিবেশ, আবহাওয়া ও ভূমির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নত প্রযুক্তির সামরিক সরঞ্জামাদিসহ পোশাক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২৩’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে আমি শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমি বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গকারী সব শান্তিরক্ষীর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি সব আহত শান্তিরক্ষীসহ বর্তমানে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত শান্তিরক্ষীর প্রতি।
তিনি আরও বলেন, পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা রোধ, সাম্য-মৈত্রী, গণতন্ত্র রক্ষা এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্ব শান্তি পরিষদ বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৩ সালের ২৩ মে ‘জুলিও-কুরি শান্তি পদক’-এ ভূষিত করে। তিনি সেই পদক উৎসর্গ করেছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মদানকারী শহীদদের এবং বীর সেনানীদের।