আজ: শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫ইং, ৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৫ জুন ২০২৩, সোমবার |

kidarkar

ট্রেজারি বন্ড কিনতে পারবেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা অকশনে সর্বনিম্ন এক লাখ টাকার ট্রেজারি বন্ড কিনতে পারবেন।
বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাইমারি অকশনে ট্রেজারি বন্ড কেনার সুযোগ পাচ্ছেন পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

মূলত, স্টক এক্সচেঞ্জের সেকেন্ডারি মার্কেটে ট্রেজারি বন্ডের যোগান বাড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এতে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা অকশনে সর্বনিম্ন এক লাখ টাকার ট্রেজারি বন্ড কিনতে পারবেন।

রোববার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিএসইসি জানায়, শেয়ারবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যাতে স্টক ব্রোকারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ট্রেজারি বন্ডের প্রাইমারি অকশনে অংশ নিতে পারেন সে জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষদের (সেন্ট্রাল ব্যাংক, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এবং সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড) সাথে আলোচনা করে এবং পারষ্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে একটি সিস্টেম এবং নির্দেশনা প্রস্তুত করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক শিগগিরই এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করতে পারে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী-রুবায়েত-উল-ইসলাম বলেন, “লেনদেন বাড়াতে দীর্ঘদিন পর পুঁজিবাজারের ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন শুরু হয়েছে।” “কিন্তু ক্রেতা থাকলেও ট্রেজারি বন্ডের কোনো বিক্রেতা নেই। ফলে যে উদ্দেশ্যে বন্ডের লেনদেন শুরু হয়েছে, সেটা সফল হয়নি” ।

তিনি বলেন, “ইক্যুইটির উপর নির্ভর করে লেনদেন বাড়ানো সম্ভব নয়। এখন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিও হিসাবের মাধ্যমে বন্ড কিনে সেকেন্ডারি মার্কেটে বিক্রি করলে লেনদেন বাড়বে।”

বিএসইসি সূত্র জানায়, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ট্রেজারি বন্ড কিনতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ ফার্মের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠাতে হবে। তারপর ব্রোকারেজ ফার্ম প্রাথমিক ডিলার বা ব্যাংকের মাধ্যমে ট্রেজারি বিল কিনবে। বন্ড সেকেন্ডারি মার্কেটে বিক্রি করা যায়।

দেশের বন্ড বাজারকে চাঙ্গা করতে গত বছরের অক্টোবরে ট্রেজারি বন্ড ট্রেডিং চালু করা হয়। ডিএসই সূত্রে জানা যায়, গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত, ট্রেজারি বন্ডে মাত্র ১৮টি ট্রেড হয়েছে। যার মূল্য ৫ কোটি টাকা।

বর্তমানে ২৪টি ব্যাংক ট্রেজারি বন্ডের প্রাইমারি ডিলার হিসেবে কাজ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ২ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত মেয়াদি ট্রেজারি বন্ড বিক্রি করছে। আর এসব বন্ডের সুদের হার ৮.০৩-৮.৮৩% পর্যন্ত হয়ে থাকে।

বাংলাদেশে, বর্তমানে ২৫১টি বকেয়া ট্রেজারি বন্ড রয়েছে যার মেয়াদ ২ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। ব্যাংক কেন ট্রেজারি বন্ড সেকেন্ডারি মার্কেটে ছাড়ছে না । বর্তমানে, ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোই প্রায় সব ট্রেজারি বন্ড হোল্ড করে। সিকিউরিটিজ নিয়ন্ত্রক স্টক মার্কেট ট্রেডিংয়ে তাদের মূল্যের উপর নির্দিষ্ট সীমা আরোপ করায় ব্যাংকগুলো বর্তমানে ট্রেজারি বন্ড বিক্রি করতে নারাজ।

ব্যাংকাররা বলছেন, বন্ডের মূল্য বাজারে ছেড়ে দেওয়া উচিত; এ মূল্য সাধারণত সরবরাহ এবং চাহিদার উপর নির্ভর করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধান বলেন, “ট্রেজারি বন্ড কেনাবেচার ক্ষেত্রে যদি মূল্য নির্ধারণ করা হয়, তাহল্ব কেউই বন্ড বিক্রি করতে চাইবে না।”

তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো মুনাফাসহ বন্ড বিক্রি করতে আগ্রহী; কিন্তু আরোপিত মূল্যসীমার চেয়ে কম বা বেশি দাম তারা চাইতে পারবেনা। বর্তমানে, ট্রেজারি বন্ড লেনদেনে ২% সার্কিট ব্রেকার রয়েছে। ফলে, রেফারেন্স মূল্যের তুলনায় বন্ডের ইউনিট মূল্য একদিনে সর্বাধিক ২% বাড়তে বা কমতে পারে।

এছাড়া, কোনো ব্যাংক যদি ট্রেজারি বন্ড বিক্রি করতে চায়, তাহলে লেনদেনের জন্য বিও অ্যাকাউন্টে বন্ড স্থানান্তর করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন নিতে হয়। এ প্রক্রিয়ায় বিলম্বের কারণে ব্যাংকগুলো বর্তমানে শেয়ারের মতো বন্ড ইউনিট বিক্রি করতে পারছে না।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.