আজ: সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ইং, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৯শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

১৬ জুন ২০২৩, শুক্রবার |

kidarkar

যে কারণে চীনা মুদ্রায় পাকিস্তানে তেল বিক্রি করছে রাশিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি পাকিস্তান রাশিয়া থেকে ছাড়ে কেনা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের প্রথম চালানের মূল্য চীনা মুদ্রা ইউয়ানে পরিশোধ করেছে। দেশটির জ্বালানি মন্ত্রী মোসাদ্দেক মালিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রাশিয়া থেকে হ্রাসকৃত মূল্যে জ্বালানি ক্রয় পাকিস্তানের জন্য স্বস্তি বয়ে এনেছে।

চলতি বছরের প্রথম দিকে মস্কো ও ইসলামাবাদের মধ্যে হ্রাসকৃত দামে তেল কেনা নিয়ে চুক্তি হয়। সেই চুক্তির আওতায় রোববার তেলের প্রথম কার্গো করাচিতে পৌঁছায়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে টেলিফোনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের জ্বালানি মন্ত্রী মোসাদ্দেক মালিক চুক্তির বিস্তারিত জানিয়েছেন। তবে তেলের দাম কিংবা কী পরিমাণ ছাড় পাকিস্তান পেয়েছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।

তিনি শুধু বলেছেন, “তেলের মূল্য চীনা ইউয়ানে পরিশোধ করা হয়েছে।”

পাকিস্তান ও রাশিয়ার মধ্যে প্রথম সরকারি পর্যায়ের এই চুক্তির আওতায় মোট এক লাখ টন অপরিশোধিত তেল কেনা হয়েছে। এই চুক্তিটি পাকিস্তান এপ্রিলে করেছে। এপ্রিলে দেওয়া এই ক্রয়াদেশের মধ্যে ৪৫ হাজার টন তেল করাচি বন্দরে পৌঁছে। বাকিটা আসছে বলে জানান মালিক।

পাকিস্তান’স রিফাইনারি লিমিটেড (পিআরএল) প্রাথমিকভাবে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল পরিশোধন করবে।

পাকিস্তানের বেশির ভাগ অপরিশোধিত তেল সৌদি আরব এবং পরে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আমদানি করা হয়।

এদিকে পাকিস্তানই একমাত্র দেশ নয় যারা চীনা মুদ্রায় বাণিজ্য করছে। বাংলাদেশও সম্প্রতি একটি রুশ প্রকল্পের জন্য ডলারের পরিবর্তে চীনা ইউয়ানে অর্থ প্রদান করা যায় কিনা সেই বিষয়ে ভাবছে।

নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য রাশিয়াকে চীনা মুদ্রায় ১১০ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার পরিকল্পনার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো ডলারের আধিপত্যের অবসান ঘটিয়ে অন্য মুদ্রায় লেনদেন শুরু করার চেষ্টা করছে। ভারতও রুপী ব্যবহার করে রাশিয়ান অশোধিত তেল কেনার আপ্রাণ চেষ্টা করছিল, কিন্তু তারা সফল হতে পারেনি। বর্তমানে, রাশিয়া ভারতের অস্ত্র এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জামের বৃহত্তম সরবরাহকারী। কিন্তু এই সরবরাহ এখন বন্ধ হয়ে গেছে।

ভারতকে অস্ত্র ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য রাশিয়াকে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার দিতে হবে। কিন্তু মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে গত এক বছর ধরে এ অর্থ পরিশোধ করা যাচ্ছে না।

ভারত আশঙ্কা করছে, তারা যদি অর্থ পরিশোধ করে তাতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হতে পারে। অন্যদিকে রাশিয়া রুপিতে পেমেন্ট নিতে প্রস্তুত নয়। তবে ইউয়ান নিয়ে কোনো সমস্যা নেই কারণ রাশিয়া ক্রমাগত চীনের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছে।

অপরদিকে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়া এখন তার তেলের গন্তব্য ইউরোপ-আমেরিকা থেকে সরিয়ে অন্য দিকে নেওয়ার চেষ্টা করছে। গত কিছুদিন ধরে চীন ও ভারতই দেশটির তেলের প্রধান ক্রেতা, এবার তার সঙ্গে পাকিস্তানও যুক্ত হলো।

অপরিশোধিত তেলের এই চুক্তি তুমুল অর্থনৈতিক সংকটে পড়া পাকিস্তানের জন্য একটি নতুন পথ খুলে দিতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ অতুল ভারতদ্বোয়াজ বলছেন, ডি-ডলারাইজেশন যে ক্যাম্পেইন শুরু করেছে রাশিয়া ও চীন এটা সফলও হতে পারে। চীনের সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। সুতরাং এই মুদ্রা ব্যবহৃতও হবে। সূত্র- বিবিসি বাংলা

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.