অলিগলিতে হাঁটু পানি, ঈদ আনন্দে বাগড়া
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রায় এক ঘণ্টা ধরে রাজধানীতে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। এতে ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চলের অলিগলিতে হাঁটু পানি জমে গেছে। এই বেরসিক বৃষ্টি বাগড়া ফেলেছে ঈদ আনন্দে। কারণ বাসার সামনে পানি জমে থাকায় অনেকের পক্ষে ঘর থেকে বের হওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ফলে ঈদের ছুটিতে যারা পরিবার নিয়ে ঘুরতে বের হওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন, তাদের অনেককেই সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে।
ঈদের তৃতীয় দিন শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকার আকাশ ছিল বেশ পরিষ্কার। দিনের শুরুটা আলো ঝলমলে হলেও, বিকেল ৩টার দিকে হঠাৎ মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে মুষলধারে বৃষ্টি। বিকেল ৪টার দিকে বৃষ্টির তীব্রতা কিছুটা কমলেও, এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিকেল সাড়ে ৫টার সময়ও আকাশ থেকে বৃষ্টির পানি ঝরতে দেখা যায়।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ৯১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই বৃষ্টির ফলে রামপুরা অঞ্চলের অধিকাংশ গলিতেই প্রায় হাঁটুসমান পানি জমে রয়েছে। এমনকি বেশকিছু বাসাবাড়িতেও বৃষ্টির পানি ঢুকে যেতে দেখা গেছে। মিরপুর অঞ্চলের বিভিন্ন গলিতেও পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। গলিতে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে বাড্ডা, মালিবাগ, খিলগাঁও, রাজারবাগ অঞ্চলেও।
রামপুরার বাসিন্দা মো. মামুন বলেন, ঈদের ছুটি শেষ হয়ে যাচ্ছে। আগামীকাল থেকে অফিস খুলবে। বৃষ্টির কারণে গত দুদিন বাচ্চাদের নিয়ে বের হতে পারিনি। আজ সকালে আকাশ ভালো ছিল, পরিকল্পনা করেছিলাম সবাই মিলে বিকেলে ঘুরতে যাবো। কিন্তু বৃষ্টির কারণে আজও ঘুরতে বের হওয়া সম্ভব হলো না। বৃষ্টিতে ছেলেমেয়েদের এবারের ঈদ আনন্দই মাটি হয়ে গেলো।
রামপুরা কমিশনার গলির একটি বাসার বাসিন্দা মো. ইমন বলেন, কিছুদিন আগেই এই অঞ্চলের ময়লা পানির লাইন পরিষ্কার করলো। অথচ আজকের এই বৃষ্টিতে রাস্তায় হাঁটুসমান পানি জমে গেছে। ঘর থেকে বের হওয়ার উপায় নেই। এবারের ঈদে পাঁচদিন ছুটি পেলাম। কিন্তু ছেলেমেয়ে নিয়ে একদিনও ঘুরতে যাওয়া হলো না।
তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে ছেলেমেয়েদের আনন্দই সবচেয়ে বড় বিষয়। এবার বৃষ্টির কারণে ছেলেমেয়েরা আনন্দ করার সুযোগ পেলো না। ঘরের মধ্যে বন্দি থেকেই তাদের সময় কাটছে।
মিরপুর পাইকপাড়ার বাসিন্দা মো. মনির হোসেন বলেন, পরিকল্পনা ছিল আজ পরিবারসহ হাতিরঝিলে ঘুরতে যাবো। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে। বাসার সামনের রাস্তায় পানিতে টইটুম্বর। ঘর থেকে বের হওয়ার উপায় নেই।
খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা মো. মিনহাজ বলেন, প্রতি বছর গাদা গাদা টাকা খরচ করে ঢাকার পানি নিষ্কাশন লাইন ঠিক করা হয়। কিন্তু একটু জোরে বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে যায়। তাহলে বারবার কী ঠিক করা হয়?
তিনি বলেন, বিয়ের পর এই প্রথম ঢাকায় ঈদ করছি। আমাদের চার বছরের একটা ছেলে আছে। কত পরিকল্পনা ছিল আজ ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে বের হবো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রমনা পার্ক, হাতিরঝিল যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। ঘোরাঘুরি করে বাইরে খাবার খাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম। বাসা থেকে বের হবো, সেই সময় বৃষ্টি শুরু হলো। এখন বাসার সামনে হাঁটু পানি। ঘুরতে যাওয়া তো দূরের কথা, বাসা থেকে বের হওয়ার সুযোগ পেলাম না।