প্রগ্রেসিভ লাইফ যাচ্ছে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে, পর্ষদ হচ্ছে পুনর্গঠন
নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একই সময়ে কোম্পানিটিতে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেছে।
বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি পরপর দুই বছর লভ্যাংশ ঘোষণা করতে না পারায় প্রতিষ্ঠানটিকে বুধবার (১২জুলাই) ‘এ’ ক্যাটাগরি থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরির অধীনে লেনদেন হবে। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বুধবার নির্দেশিত চিঠিতে বলা হয়, কোম্পানিটি সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস কর্পোরেশনের সাবেক চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাকির হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. জামিল শরীফ ও সহযোগী অধ্যাপক ড. তাজরিনা ফারাহ এবং এইচটিসি লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম শোয়েব চৌধুরীকে কোম্পানিটির স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিতে মনোনীত করা হয়েছে।
কোম্পানিটিকে ‘এ’ ক্যাটাগরি থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরের ৪৫ দিনের মধ্যে নতুন পর্ষদ গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২০ সাল থেকে প্রগ্রেসিভ লাইফ বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশ না ঘোষণা করাসহ কোম্পানির বেশকিছু অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে বিএসইসির তদন্তে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটির পর্ষদ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, অন্যান্য নিয়ন্ত্রক কাঠামোর সীমাবদ্ধতা এবং সম্মতি সাপেক্ষে কোম্পানিটি আর্থিক বছর শেষ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে এজিএম করবে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে স্টক মার্কেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের আর্থিক বিবরণী খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। এর দ্বারা বিমা দাবির নিষ্পত্তি না হওয়ার বিষয়ে গ্রাহকদের অভিযোগ জমা হচ্ছে।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনে প্রকৃত আর্থিক অবস্থা তুলে ধরা হয়নি। প্রতিষ্ঠানটি মূল্য সংবেদনশীল তথ্যে (পিএসআই) যে নিট সম্পদ মূল্য (এনএভি) প্রকাশ করেছে সেটিও বিভ্রান্তিকর। একই সঙ্গে সম্পদ ক্রয়ের ক্ষেত্রেও কোম্পানিটি অনিয়ম করেছে বলে বিএসইসির তদন্তে উঠে এসেছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকরা সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করছে বলে মত পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার।
এতে আরও বলা হয়েছে, এ ধরনের অ-সঙ্গতিগুলো ক্ষতিকারক ফলাফলের দিকে পরিচালিত করেছে, যেমন আপস করা স্বচ্ছতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া আপসকরা অখণ্ডতা, স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে বিশ্বাসের ক্ষয় এবং কোম্পানির জন্য সম্ভাব্য আর্থিক ক্ষতি।
বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা বলেছেন, এর আগে হাজার হাজার বিমা পলিসি পরিপক্ক হয়েছে কিন্তু গ্রাহকরা তাদের দাবির বিপরীতে কোনো টাকা পাননি।
তার ২০১৯ বার্ষিক প্রতিবেদনে, একটি সংবিধিবদ্ধ নিরীক্ষক কোম্পানির ব্যবহারকারীদের ফার্মের প্রিমিয়াম আয়ে কিছু অ-স্বচ্ছতা, বিতর্কিত সম্পত্তি কেনা, নেতিবাচক নগদ প্রবাহ এবং বিশাল অবৈতনিক দাবি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
২০২০ সাল থেকে কোম্পানিটি তার শেয়ারহোল্ডারদের কোনো সাধারণ সভা ডাকেনি এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর আর্থিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে।