সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল, উপকূলে জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক: গভীর নিম্নচাপটি বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশের খেপুপাড়া দিয়ে স্থলভাগে উঠে খুলনা দিয়ে এখন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্য বিরাজ করছে। ফলে বুধবারও (২ আগস্ট) দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।
একই সঙ্গে উপকূলীয় জেলাগুলোতে সর্বোচ্চ ৩ ফুট উচ্চতার জালোচ্ছ্বাসের আশঙ্কার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
মৌসুমি বায়ুও এখন সক্রিয় বাংলাদেশে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে উপকূলীয় তিন বিভাগে বৃষ্টি হচ্ছে। সঙ্গে বইছে দমকা হাওয়া। বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ায় বুধবার দিনের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩ ডিগ্রি সেলাসিয়াস পর্যন্ত কমে যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
মঙ্গলবার দিনের বেশিরভাগ সময়ই ঢাকার আকাশ মেঘে ঢাকা ছিল। বুধবার সকাল থেকে ঢাকার আকাশ মেঘে ঢেকে আছে, থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেল থেকেই ঢাকায়ও ঝোড়ো হাওয়া বইছিল। প্রবল বাতাসে ঢাকায় গাছ ভেঙে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে।
বুধবার দুপুরে সর্বশেষ সামুদ্রিক আবহাওয়ার পরিস্থিতিতে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, খুলনা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ-বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় স্থল নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে।
এতে আরও জানানো হয়, স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
পূর্ণিমা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে সতর্কবার্তায়।
বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস তুলে ধরে আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান জানান, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
এছাড়া ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, কিশেরাগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, চূয়াডাঙ্গা এবং কুষ্টিয়া জেলাসহ রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা প্রশমিত হতে পারে। একই সঙ্গে আগামী তিনদিন বৃষ্টির প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানান এ আবহাওয়াবিদ।
মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল বগুড়ায়। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।