আজ: শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ইং, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

৩১ জানুয়ারী ২০১৫, শনিবার |

kidarkar

৫০ টাকার দুধ এখন মাএ ১৫ টাকা

imagesশেয়ারবাজার রিপোর্ট : টানা হরতাল-অবরোধের কারণে দৈনিক প্রায় ১০ হাজার লিটার দুধ নিয়ে বিপাকে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জেয়ালা দুগ্ধপল্লীর খামারিরা। এই গ্রামে প্রতিদিন দুধ বিক্রি করে প্রায় ১৫০টি পরিবারের সংসার চলে। কিন্তু বাইরে দুধ পাঠাতে না পেরে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরের দুধ বাধ্য হয়ে এলাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়।

জেয়ালা ঘোষপাড়া প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি প্রশান্ত ঘোষ বলেন, তাদের খামারে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার লিটার দুধ উৎপাদন হয়। উৎপাদিত দুধ সাতক্ষীরা, খুলনা ও যশোর জেলা শহরে অবস্থিত বিভিন্ন কোম্পানিসহ দোকানে বিক্রি করে থাকেন।

হরতাল-অবরোধের কারনে বিক্রি তুলনা মূলক হওয়ায় একদিন দুধ নিলে চারদিন নেওয়া বন্ধ রাখছে বিভিন্ন কোম্পানি ও দোকানীরা। আর যেটা নিচ্ছে তার টাকাও বকেয়া থাকছে। এ জন্য স্থানীয় বাজারসহ বিভিন্ন গ্রামে দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন খামারিরা।

খামারি বিপ্লব ঘোষ জানান, প্রতিদিন সকালে-বিকেলে সাতক্ষীরার বিনেরপোতা, খুলনার ব্রাক আড়ং, আঠার মাইল, কাছিঘাটা ও জাতপুর প্রাণসহ বিভিন্ন কারখানায় তারা দুধ বিক্রি করতেন। কিন্তু এখন নিয়োমিত দুধ নিচ্ছে না তারা। আর যা নিচ্ছে তার টাকাও বকেয়া।

আরেক খামারি সুজন ঘোষ জানান, তিনি গ্রামে দুধ সংগ্রহ করেন। কিন্তু গত দুইদিন দুধ বিক্রি করতে পারেননি। হরতাল-অবরোধ না গেলে তিনি আর দুধ সংগ্রহ করবেন না।

সাতক্ষীরার তালা উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার উত্তরে (তালা ও ডুমুরিয়া) সীমানায় জেয়ালা গ্রাম। এ গ্রামের ঘোষপাড়ায় ১৫০টি পরিবারের প্রায় এক হাজার লোকের বসবাস। এ পাড়ায় মানুষের প্রধান কাজ কৃষি ও গরু পালন। এখানে রয়েছে ছোট-বড় ১৩৭টি দুগ্ধ খামার। এ দুগ্ধ খামারের আয়ে চলে তাদের সংসার।

ঘোষপাড়া খামারে বাঁধা ছোট বড় দেশি-বিদেশি গাভী। কেউ দুধ সংগ্রহ করছেন। কেউ খাবার দিচ্ছেন।আবার কেউ কেউ কিভাবে কোথায় দুধ বিক্রি করা যায়, তা নিয়ে আলাপ করছেন তারা।

এসব খামারে বিভিন্ন জাতের গরু রয়েছে। এদের মধ্যে জার্সি, ফ্রিজিয়ান, শাহীওয়াল জাতের গরুর সংখ্যাই বেশি। এখানে যত গরীব পরিবারই থাকুক না কেন, তাদের কমপক্ষে ৫টি গরু রয়েছে।আর যাদের অবস্থা মোটামুটি ভালো তাদের ৫ থেকে ৫০টি গরু আছে।

দুগ্ধ খামারিরা বলেন,‘দুধ তো আর নষ্ট করা যাবে না। যেভাবে হোক কম দামে হলেও বিক্রি করতে হবে। দুধ নেওয়ার কোম্পানিগুলো দুধ নিচ্ছে না। দুধ নিলেও টাকা দিচ্ছে না। কিভাবে চলবে খামার ও সংসার।’

খামারি বিপ্লব ঘোষ জানান, তার খামারে ৭টি গরু রয়েছে। প্রতিদিন একটি গরুর পেছনে তার ২০০ থেকে ২৫০ টাকার মতো খরচ হয়। দুধ বিক্রি করে তার খরচের টাকা উঠতো। বর্তমানে দুধ বিক্রি না হওয়ায় খরচের টাকা উঠছে না। এতে তিনি বিপাকে পড়েছে।

দুধ বহনকারী চালক জুয়েল গাজী জানান, দুধ বহন করে তার সংসার চলতো। কিন্তু দুধ কোম্পানিগুলো দুধ না নেওয়ায় তিনি বাইরে যান না। বেকার সময় কাটছে বাড়িতে।

 

শেয়ারবাজার/মু

 

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.