আজ: সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩ইং, ১৭ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৪ অগাস্ট ২০২৩, বৃহস্পতিবার |


kidarkar

ব্রিকসের সদস্য ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকবে চীন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী


নিজস্ব প্রতিবেদক : আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসের নতুন সদস্য ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন দেয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এছাড়া দুইদেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার বিষয়ে তার সমর্থন রয়েছে।

গতকাল বুধবার (২৩ আগস্ট) দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের হোটেল হিলটন স্যান্ডটনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন আপনারা যাতে ব্রিকসে যুক্ত হতে পারেন সেজন্য আমাদের সবসময় সমর্থন থাকবে। আর যে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক করা হয়েছে সেটা যাতে সত্যিকার অর্থে টাকা পয়সা আরো দিতে পারে সেই চিন্তা ভাবনা করছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি আপনাদের ইন্টারেস্টটা একটু বেশি, প্রায় দুই শতাংশ এটা যদি কমান; তখন উনি (চীনা প্রেসিডেন্ট) বলেছেন নিশ্চয়ই সেটা এক শতাংশে নিয়ে আসব। সুতরাং এটি একটি বড় অর্জন।’

‘চীনা প্রেসিডেন্ট যেগুলো বলেছেন সেগুলো খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। উনি বললেন যেহেতু আমাদের বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা একটু বেশি; তাদের থেকে আমরা ২০ বিলিয়ন ডলারের জিনিস কিনি আর তারা শুধু ৭০০ মিলিয়ন আমদানি করেন। তখন প্রধানমন্ত্রী বললেন আমি ইতিমধ্যে আপনার কাছে এটা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানিয়েছি- আমাদের ফ্রেশ ফ্রুট বা ভেজিটেবল, ক্যাটেল ফুড, পোল্ট্রি এগুলোর জন্য। উনি (চীনা প্রেসিডেন্ট)  বললেন, এগুলো আমরা অবশ্যই বিবেচনা করব। ফল বিশেষ করে আম আমরা নিব। আমরা আম কাঁঠাল পেয়ারার জন্য অনুরোধ করেছি। আমরা আশা করছি তারা এগুলোর জন্য ছাড় দেবে। প্রায় ৯৮ শতাংশ বাংলাদেশী পণ্যকে ডিউটি ফ্রি করার বিষয়ও প্রেসিডেন্ট উল্লেখ করেছেন। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমাদের কিছু ইনভেস্টমেন্ট প্রয়োজন। তাহলে আমাদের এই বাণিজ্য ঘাটতিটা কমবে।’

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে চীনা প্রেসিডেন্টকে উদ্ধৃতি করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গার ব্যাপারে আমরা সবসময় আপনাদেরকে সহায়তা করব। চীন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আমরা যৌথভাবে এটার স্থায়ী একটা সমাধান চাই। অত্র এলাকায় আমরা অশান্তি চাই না।’

শি জিনপিংকে উদ্ধৃত করে ড. মোমেন বলেন, ‘কওমিন কনসেনসাস অনুযায়ী পাইলট প্রজেক্ট যাতে তাড়াতাড়ি হয় সেজন্য আমরা এক পায়ে দাঁড়িয়ে। আর এ বিষয়ে  মিয়ানমারের মন-মানসিকতায় পরিবর্তন হয়েছে। তারাও চায় এগুলো (রোহিঙ্গা) নিয়ে যাওয়ার জন্য। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমার দেশে এগুলো রাখার মত অবস্থা নাই। আমি এজন্য চাই ওরা নিজের দেশে ফিরে যাক। সম্প্রতি সময়ে তাদের অনেকেই মাদকপাচার, মানবপাচারসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। তাতে আমাদের সমস্যা হচ্ছে। এ সময় চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন এ ব্যাপারে আমি আপনার সঙ্গে একমত। ওদের যাতে একটা স্থায়ী সমাধান হয় সেজন্য চীন আপনাদের সাহায্য করবে।’

চীনা প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের অংশীদারিত্বকে সম্মান জানায় বলে উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

শি জিনপিংকে উদ্ধৃত করে এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা (চীন) আপনাদের কৌশলগত অংশীদার। এ ব্যাপারে আপনাদের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিভিন্ন রকমের যে উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে, এসব ব্যাপারে চীন সবসময় সাহায্য করতে প্রস্তুত। আমাদের অংশীদারিত্ব সবসময় সম্মানের সাথে গ্রহণ করে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উনাকে (চীনা প্রেসিডেন্টকে) বললেন আমরা আপনাদের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)- এ যুক্ত হয়েছি। আপনারা আমাদেরকে সুযোগও দিয়েছেন।  কিন্তু আমাদের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। আমরা পায়রা বন্দর করছি। এখানে অবকাঠামো উন্নয়ন চলছে। সে কারণে আমি বিআরআই সদস্য হতে চাই এই কারণে যেন ওখান থেকে আমাদের বিনিয়োগের দরজা খোলে। সেজন্য ভবিষ্যতে আপনাদের সহায়তা আমি আশা করব। অবশ্যই আপনাদের প্রতি আমাদের সহায়তা থাকবে।’


আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.