আজ: বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩ইং, ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৬ অগাস্ট ২০২৩, শনিবার |


kidarkar

প্রিগোজিনের মৃত্যুতে আরও শক্ত হতে পারে পুতিনের ক্ষমতা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ওয়াগনার প্রধান ইভেগেনি প্রিগোজিনের ভাগ্যে কি ঘটতে যাচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করছিলেন সিআইএ’র পরিচালক বিল বার্নস। কারণ গত জুনে রুশ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের পরই প্রিগোজিনের পরিণতি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়।

বিল বার্নস বলেন, পুতিন হচ্ছেন এমন একজন প্রেসিডেন্ট যিনি ঠাণ্ডা মাথায় প্রতিশোধ নিতে পছন্দ করেন। অর্থাৎ তাড়াহুড়া করে কেনো সিদ্ধান্ত তিনি নেন না। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি পুতিন একজন প্রতিশোধ পরায়ণ ব্যক্তি। প্রিগোজিন যদি পালিয়ে যেতে সক্ষম হতো, তাহলে আমি অবাক হতাম। ২৩ আগস্ট প্রিগোজিনকে বহনকারী প্লেনটি বিধ্বস্ত হয়।

পাবলিক ট্র্যাকিং ডাটা অনুযায়ী, ওয়াগনার প্রধানকে বহনকারী প্লেনটি প্রায় ৩০ হাজার ফুট ওপর দিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু উড্ডয়নের ঠিক ৩০ মিনিট পরে মস্কোর কাছে টেভার অঞ্চলে বিধ্বস্ত হয়। এতে প্লেনে থাকা ১০ জনই প্রাণ হারায়। ওয়াগনার গ্রুপের সিনিয়র ব্যক্তিত্ব দিমিত্রি উটকিন ও জুনে মস্কোর দিকে যাত্রা করা এক কমান্ডারকেও ওই প্লেনের যাত্রী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

প্লেনটি ঠিক কি কারণে বিধ্বস্ত হয়েছে তার কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার আগে তারা একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন। জল্পনা ছড়িয়েছে প্লেনটিকে আকাশ প্রতিরক্ষার মাধ্যমে গুলি করে ভূ-পাতিত করা হয়েছে। আবার অনেকে বলছেন, এটি একটি দুর্ঘটনা।

এদিকে চলতি বছরের মে মাস থেকে মস্কোর বিরুদ্ধে অন্তত ১৫টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। এর মধ্যে কিছু ছিল সফল হামলা। এতে স্থানীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ভুলভাবে পরিচালিত হতে পারে। তবে তার সম্ভাবনা খুবই কম। যদিও সর্বোচ্চ সতর্ক থাকাকালীন ২০২০ সালে ইরান নিজেদের নাগরিকদের বহনকারী একটি প্লেন গুলি করে ভূ-পাতিত করে।

ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার এক ঊর্ধ্বতন সূত্র জানিয়েছে, রাশিয়ার বেশ কিছু ব্যক্তি প্রিগোজিনের ওপর বেশ ক্ষুব্ধ ছিল। এর মধ্যে রয়েছে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। বিশেষ করে ওয়াগনার প্রধানের ভিডিও বার্তা নিয়ে যথেষ্ট বিরক্ত ছিলেন তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের অনুমোদন ছাড়া কোনো অভিযান পরিচালনা হয় না। আমি জানি না এ বিষয়ে কি ঘটেছে। তবে আমি অবাক নই।

প্রিগোজিনের মৃত্যু ইউক্রেনের সামনের সারিতে সামান্য প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ গত বছর যে বিশৃঙ্খল দেখা গিয়েছিল সেখানে কিছু শৃঙ্খলা ফিরিয়েছেন রাশিয়ার চিফ অব জেনারেল স্টাফ। আফ্রিকায় ওয়াগনার বাহিনী যথেষ্ট সক্রিয়। ফলে প্রিগোজিনের মৃত্যুতে সেখানে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।

এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসবে রাশিয়ার অভ্যন্তরে। যদি পুতিনের নির্দেশেই তাকে হত্যা করা হয়ে থাকে তাহলে আরও শক্তিশালী চেহারায় ফিরবেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

মনে করা হচ্ছে প্রিগোজিনের মৃত্যুতে ক্ষমতা আরও দৃঢ় হবে রুশ প্রেসিডেন্টের। তবে সত্যবাদী দেশপ্রেমিক নেতা বনে যেতে পারেন ওয়াগনার প্রধান।

ওয়াগনার প্রধান সম্পর্কে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি জটিল ভাগ্যের মানুষ ছিলেন ও জীবনে গুরুতর ভুল করেছিলেন। কিন্তু তিনি সঠিক ফলাফল অর্জন করেছিলেন। প্রিগোজিন একজন মেধাবী মানুষ ও মেধাবী ব্যবসায়ী ছিলেন।

রুশ প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, আমি যতদূর জানি তা হলো একদিন আগে সে আফ্রিকা থেকে ফিরেছিলেন। কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে দেখাও করেছেন। তবে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

রাশিয়ার লোকদের শেখানো হতে পারে এটি পাইলটের ভুল অথবা যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্লেনটি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং প্রিগোজিনের মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যুর বিষয়ে সত্যটা প্রচার করা হবে তা রাশিয়ার মানুষও বিশ্বাস করে না।


আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.