খুলেছে উড়ালসড়ক, যান চলাচল শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক : অবশেষে সবার জন্য উন্মুক্ত হলো বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (ঢাকা উড়ালসড়ক)। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে টোল দিয়ে এর ওপর দিয়ে সাধারণ যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
প্রথম দফায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারছে। এই অংশের দূরত্ব ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার। এই সড়ক দিয়ে বিমানবন্দরের পাশে কাওলা থেকে ফার্মগেট আসতে সময় লাগছে মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিট।
এ উড়ালসড়কে কাওলা, কুড়িল, মহাখালী, বনানী, তেজগাঁও ও ফার্মগেটে রয়েছে টোল প্লাজা। উড়ালসড়ক দিয়ে চলাচল করতে হলে দিতে হবে টোল। এজন্য টোল নির্ধারণ করা হয়েছে যানবাহনকে চার শ্রেণিতে ভাগ করে। এতে সর্বনিম্ন টোল ৮০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চার শ্রেণির যানবাহনের মধ্যে গাড়ি, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম), হালকা ট্রাকের (তিন টনের কম) টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ টাকা, সব ধরনের বাসের (১৬ সিট বা এর বেশি) ক্ষেত্রে ১৬০ টাকা, মাঝারি ধরনের ট্রাকের (ছয় চাকা পর্যন্ত) ৩২০ টাকা, আর বড় ট্রাকের (ছয় চাকার বেশি) ক্ষেত্রে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ টাকা।
তবে ঢাকা উড়ালসড়কের ওপর দিয়ে থ্রি হুইলার, সাইকেল এবং পথচারীরা চলাচল করতে পারবেন না। পাশাপাশি এখনই চলতে দেওয়া হবে না মোটরসাইকেল। এ ছাড়া গাড়ি নিয়ে উড়ালসড়কে দাঁড়ানো ও ছবি তোলা নিষেধ করা হয়েছে। আর এক্সপ্রেসওয়ের মূল সড়কে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা হবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। মেট্রোরেলের পর উদ্বোধন হওয়া এটি দ্বিতীয় প্রকল্প, যা ব্যবহার করে যানজট এড়িয়ে স্বস্তিতে গন্তব্যে যেতে পারবেন নগরবাসী।
এর আগে শনিবার বিকেল ৩টা ৪২ মিনিটে রাজধানীর বিমানবন্দরসংলগ্ন কাওলা প্রান্তে ফলক উন্মোচন করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যাত্রী হিসেবেই তিনি প্রথম এই উড়ালসড়কে ওঠেন।
কাওলা প্রান্তের টোল প্লাজায় বহরে থাকা ২৫টি গাড়ির জন্য ৮০ টাকা হারে দুই হাজার টাকা টোল পরিশোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তার সঙ্গে ছোট বোন শেখ রেহানা এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, উড়াল মহাসড়কটি প্রথম ধাপে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত চালু হলো। তেজগাঁও থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত বাকি অংশ আগামী বছরের জুনে চালু করার লক্ষ্য ঠিক করছে সরকার। দ্রুতগতির এই উড়ালসড়কের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে রেললাইন ধরে তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর হয়ে যাত্রাবাড়ীর কাছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হবে।
পুরো উড়ালসড়কে ৩১টি স্থান দিয়ে যানবাহন উঠানামা (র্যাম্প) করার ব্যবস্থা থাকছে। র্যাম্পসহ উড়ালসড়কের দৈর্ঘ্য হবে ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। উড়ালসড়কে ১১টি টোল প্লাজা থাকছে। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত প্রকল্পের বাকি কাজ শেষ হলে উড়াল সড়কের পূর্ণ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন যাত্রীরা।