আজ: বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বৃহস্পতিবার |

kidarkar

মেসির সঙ্গে দ্বৈরথের সমাপ্তি ঘোষণা রোনালদোর

স্পোর্টস ডেস্ক : খেলাধুলার ইতিহাসে কিংবদন্তিতূল্য প্রতিদ্বন্দ্বীতার ইতিহাস খুবই কম। বক্সিংয়ে মোহাম্মদ আলি, জো ফ্রেজারের প্রতিদ্বন্দ্বীতা ছিল সবচেয়ে বেশি কিংবদন্তিতূল্য। স্প্রিন্টে উসাইন বোল্টের প্রতিদ্বন্দ্বীতা ছিল জাস্টিন গ্যাটলিনের সঙ্গে। তবে, মোহাম্মদ আলি-জো ফ্রেজারের মত একটি কিংবদন্তিতূল্য প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়ে ওঠে টেনিসে, রজার ফেদেরার এবং রাফায়েল নাদালের মধ্যে।

ফুটবল ইতিহাসে এমন প্রতিদ্বন্দ্বীতা অহরহ হয়। কিন্তু কিংবদন্তিতূল্য প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়ে উঠেছিলো শুধু লিওনেল মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মধ্যে। পরস্পর মুখোমুখি হওয়া ম্যাচগুলো তো বটেই, অন্য সময়ও অকে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার নিরন্তর প্রচেষ্টা, দু’জনকেই খ্যাতির উচ্চ শিখরে পৌঁছে দিয়েছিলো।

এই ‘স্বাস্থ্যকর’ প্রতিদ্বন্দ্বীতা যে ফুটবলের উপকার করেছে, তাদের দু’জনের ক্যারিয়ারে উপকারে এসেছে তা অকপটে স্বীকার করেছিলেন মেসি-রোনালদো দু’জনই। এবারও সেই স্বীকারোক্তি মিললো ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর কাছ থেকে। শুধু তাই নয়, রোনালদো এটাও জানিয়েছেন যে, মেসির সঙ্গে তার প্রতিদ্বন্দ্বীতা ফুটবলের ইতিহাসই বদলে দিয়েছিলো। কিন্তু সেই প্রতিদ্বন্দ্বীতা এখন আর নেই। সেটা শেষ হয়ে গেছে।

১০ বছরের বেশি সময় এই দুই ফুটবলার সমানভাবে ফুটবল বিশ্বকে শাসন করে গেছেন। দু’জন মিলে জয় করেছেন সব মিলিয়ে ৭৯টি ট্রফি। আর দু’জনই আলাদা আলাদাভাবে ৮০০’র বেশি করে গোল করেছেন।

রোনালদোর কাছে জানতে চাওয়া হয়, তাদের দু’জনের প্রতিদ্বন্দ্বীতা এখন আছে কি না। জবাবে তিনি জানিয়ে দেন, ‘আমি এখন আর দেখি না সেই প্রতিদ্বন্দ্বীতা আমাদের মধ্যে আছে। এটা এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে।’ বিষয়টা যে খুবই ভালো ছিল সেটা জানিয়ে দেন রোনালদো। তিনি বলেন, ‘এটা ছিল খুবই ভালো এবং দর্শক-সমর্থকরা এটা পছন্দ করতো।’

পর্তুগিজ এই সুপারস্টার তাদের দেশের পত্রিকা রেকর্ডকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, ‘যারা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে পছন্দ করতো, তাদের মেসিকে ঘৃণা করতে হবে না। কিংবা ঠিক এর উল্টোটাও- আমরা সত্যিই অনেক ভালো ফুটবল খেলে এসেছি। ফুটবলের ইতিহাসটা বদলে দিতে পেরেছি এবং আমাদের দু’জনকে সারা বিশ্বে সম্মান করা হয়। এটাই আমাদের জন্য ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’

দু’জনই এখন খেলছেন ইউরোপের বাইরে। অর্থ্যাৎ, ফুটবলের মূল ট্র্যাক থেকে দু’জনই সরে গিয়েছেন। ক্যারিয়ারের শেষ এখানেই বলা যায়। রোনালদো বলেন, ‘ইউরোপে খেলার বাইরে সে (মেসি) তার নিজের পথ বেছে নিয়েছে। আমি আমার পথ বেছে নিয়েছি। এখন যা আমি দেখছি, তাতে মনে হচ্ছে সে দারুণ খেলছে। আমিও ভালো খেলার চেষ্টা করছি। দু’জনের খেলাই চলছে। তবে, আমি মনে করছি না, আগের মত সেই প্রতিদ্বন্দ্বীতা আমাদের মধ্যে আছে।’

রোনালদো আরও বলেন, ‘আমরা অনেকবারই মঞ্চ ভাগ করেছি। সেটা প্রায় ১৫ বছরের। আমরা বন্ধু তা বলছি না। কখনো তার সঙ্গে ডিনার করতে বসিনি। পেশাদার দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা সহকর্মী এবং একে অপরকে সম্মান করি।’

চলতি বছরের শুরুতেই ম্যানইউ ছেড়ে সৌদি প্রো লিগে আল নাসরে যোগ দেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। বছরের মাঝে এসে, মৌসুম শেষে পিএসজির সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়ে যায় মেসির। তিনি হয়ে যান ফ্রি এজেন্ট। বিপুল অংকের অর্থের বিনিময়ে রোনালদোর লিগের ক্লাব আল হিলাল চেষ্টা করেছিলো মেসিকে কিনতে। কিন্তু মেসি চলে যান যুক্তরাষ্টের ইন্টার মিয়ামিতে।

গত বছর বিশ্বকাপ জয় করেন মেসি। সম্প্রতি ইন্টার মিয়ামি হয়ে জিতেছেন লিগ কাপ। সে সঙ্গে তিনি ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি শিরোপা জয়ে দানি আলভেজের সঙ্গে ভাগ বসান। অন্যদিকে আল নাসরের হয়েও আরব কাপের শিরোপা জিতেছেন রোনালদো। একই সঙ্গে গত শনিবার আল হাজেমের বিপক্ষে গোল করে ইতিহাসে একমাত্র ফুটবলার হিসেবে ৮৫০ গোল করার কৃতিত্ব দেখান সিআর সেভেন।

এ নিয়ে রোনালদো বলেন, ‘এটা ঐতিহাসিক মাইলফলক। যেসব রেকর্ড গড়েছি, সবই আমার গর্বের উৎস এবং কখনো ভাবিনি যে এসব অর্জন করতে পারব না। কিন্তু আমি আরও অর্জন করতে চাই। যেহেতু খেলার মধ্যেই আছি তাই মানদণ্ডটা আরও উঁচুতে স্থাপন করতে হবে। আমাকে আরও বড় কিছু ভাবতে হবে।’

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.