তথ্য প্রকাশে ব্যর্থতা, আলহাজ্ব টেক্সটাইল নিয়ে বিএসইসির তদন্ত কমিটি
নিজস্ব প্রতিবেদক : বস্ত্র খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের পর্ষদ সভা ও এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটেছে। ফলে কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীরা যথাযথ তথ্যের অভাবে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা ও পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, বিএসইসির পরিচালক মো. মাহমুদুল হককে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সংস্থাটির অতিরিক্ত পরিচালক মো. এমদাদুল হক ও সহকারী পরিচালক মো. তরিকুল ইসলাম। কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠনের কারণ সম্পর্কে বিএসইসির আদেশে বলা হয়েছে, কমিশন কর্তৃক মনোনীত আলহাজ টেক্সটাইল মিলসের স্বতন্ত্র পরিচালকদের সমন্বয়ে গঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভা এবং সভাসংক্রান্ত বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য তথ্য ডিএসইর নিউজ পোর্টালে যথাসময়ে প্রদর্শনে ব্যর্থতা পরিলক্ষিত হয়েছে।
এছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডিএসই কর্তৃক প্রকাশিত তথ্যের যথার্থতা ও সত্যতা যাচাই করতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিভ্রান্ত তথ্য পেয়ে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ফলে তাদের বিনিয়োগ ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তাই পুঁজিবাজারের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ডিএসইর উল্লিখিত ব্যর্থতার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা প্রয়োজন। গঠিত তদন্ত কমিটি উল্লিখিত বিষয়সহ অন্যান্য বিষয়াদি যথাযথভাবে পরিপালন করা হয়েছে কিনা সেটি অনুসন্ধান করে দেখবে।
সম্প্রতি আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলসে নতুন করে তিনজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করেছে বিএসইসি। এর আগেও বিএসইসি কোম্পানিটিতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করেছিল। যদিও সে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোম্পানিটি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিল। অবসরোত্তর ছুটিতে থাকা লে. কর্নেল একেএম সাইফুল বাহার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাদিয়া নূর খান ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মফিজ উদ্দিন আহমেদকে আলহাজ টেক্সটাইল মিলসের স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। একই সঙ্গে মো. সেলিম ও ফাহমিদ ওয়াসিক আলীর পদত্যাগপত্রের ভিত্তিতে তাদের নিয়োগের বিষয়টি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে, যা গত ১৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৫ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছিল ৩০ পয়সা। আর একই হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১০ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছিল ১৮ পয়সা। গত ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৭ পয়সায়।
প্রসঙ্গত, আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৮৩ সালের। বর্তমানে ‘বি’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ২২ ২৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। সে হিসেবে কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ২ কোটি ২২ লাখ ৯৮ হাজার ৫৪৯টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ২৫.৬৩ শতাংশ, সরকারের হাতে ০.০১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৯.৯৬ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৫৪.৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।