আজ: শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, রবিবার |

kidarkar

ক্ষতিগ্রস্ত আখের ফলন, বিশ্ববাজারে চিনির দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতে উৎপাদন কমার আশঙ্কায় বিশ্ববাজারে চিনির দাম বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ব্যবসায়িক গ্রুপ সুকডেন। প্রতিষ্ঠানটির পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ১২ মাসে পণ্যটির দাম প্রতি পাউন্ডে বেড়ে দাঁড়াতে পারে ২২ থেকে ৩০ সেন্টের মধ্যে।

সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেন সুকডেন ব্রাজিলের জেনারেল ডিরেক্টর জেরেমি অস্টিন। সেখানে সাইডলাইনে রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‌সম্ভবত চিনির দাম আরো বাড়তে চলেছে।’

ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ চিনি রফতানিকারক। চলতি মৌসুমে দেশটিতে বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিগত বছরের তুলনায় আখের ফলন কমে গেছে। ইন্ডিয়ান সুগার মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (আইএসএমএ) প্রাক্কলন অনুযায়ী, দেশটিতে চলতি মৌসুমে উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৩ কোটি ১৭ লাখ টনে। তবে শিল্পসংশ্লিষ্ট অনেক প্রতিষ্ঠান মনে করছে, উৎপাদনের পরিমাণ তিন কোটি টনে নামতে পারে।

ভারতের শীর্ষ চিনি উৎপাদনকারী রাজ্য উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটক। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ রাজ্যগুলোয় আখের ফলন ব্যাহত হয়েছে। আইএসএমএ জানায়, আখ বেড়ে ওঠার সবচেয়ে উপযুক্ত সময়ে বৃষ্টিপাত ছিল না। কিন্তু পরে আবার অতিবৃষ্টি হয়েছে। মূলত এ কারণেই আখ উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, উৎপাদন কমলে দেশটির রফতানি সক্ষমতাও সীমিত হয়ে পড়বে। এদিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে চিনি রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে দেশটি। সেক্ষেত্রে তা আগামী অক্টোবর মৌসুম থেকে কার্যকর হতে পারে। বিগত সাত বছরের মধ্যে এবারই প্রথম চিনি রফতানিতে নিষেধাজ্ঞার কথা ভাবছে নয়াদিল্লি। এর আগে ২০১৬ সালে চিনি রফতানিতে ২০ শতাংশ কর আরোপ করেছিল ভারত, যার মাধ্যমে সরবরাহ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছিল দেশটি।

রফতানি সংক্রান্ত ভারতের সাম্প্রতিক এই খবর প্রকাশের পর পণ্যটির আন্তজাতিক সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভারত রফতানি বন্ধ করলে নিউইয়র্ক ও লন্ডনসহ বিশ্ববাজারে দাম আরো বাড়বে। ইন্টারন্যাশনাল সুগার অর্গানাইজেশন (আইএসও) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ মৌসুমে চিনির বৈশ্বিক উৎপাদন ১ দশমিক ২১ শতাংশ কমার আশঙ্কা রয়েছে। এ সময় বাজার বড় ধরনের সরবরাহ ঘাটতির মুখে পড়তে পারে। সংস্থাটির প্রাক্কলন অনুযায়ী, অক্টোবরে শুরু হতে যাওয়া ২০২৩-২৪ বিপণন মৌসুমে বৈশ্বিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২১ লাখ ১৮ হাজার টনে।

বৈশ্বিক উৎপাদন কমে যাওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা রাখবে ভারতের উৎপাদন পরিস্থিতি।

তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ মৌসুমে ভারতের মিলগুলোকে প্রথম ধাপে ৬১ লাখ টন চিনি রফতানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। গত মৌসুমে দেশটি সব মিলিয়ে রফতানি করেছিল ১ কোটি ১২ লাখ টন। দেশটি মূলত ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, সুদান, সোমালিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে চিনি রফতানি করে।

এদিকে শীর্ষ উৎপাদক দেশ ব্রাজিলে এখনো চিনির মজুদ নিম্নমুখী। মূলত বৃষ্টির কারণে দেরিতে আখ সংগ্রহ শুরু করায় চিনি উৎপাদনেও বিলম্ব হয়েছে, যা মজুদে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অন্যদিকে ইউরোপ, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, চীন ও মেক্সিকোয়ও উৎপাদনে নানা চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.