আজ: বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৮ অক্টোবর ২০২৩, রবিবার |

kidarkar

ধুঁকতে ধুঁকতে অস্ট্রেলিয়াকে হারালো ভারত

স্পোর্টস ডেস্ক: ২ রানে ৩ উইকেট নেই। বিশ্বকাপে নিজেদের উদ্বোধনী ম্যাচে কে ভেবেছিল এই ভারত অস্ট্রেলিয়াকে ৬ উইকেটে হারাবে? দলতা ভারত বলেই হয়তো সম্ভব হয়েছে। যেখানে বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুলদের মত ক্রিকেটারদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে শুরুতে ধুঁকতে থাকা ভারতকে নিয়ে জয়ের বন্দর পৌঁছে যায় তারা। এ কারণেই হয়তো ভারত বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার।

খুবই স্লো একটি উইকেটে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার হাইভোল্টেজ ম্যাচ। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া যেভাবে ব্যাট করলো, তাতে বোঝাই যাচ্ছে- এই ম্যাচটি লো স্কোরিং।

লো স্কোরিং ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.৩ ওভারে ভারতীয় বোলারদের দাপটের মুখে মাত্র ১৯৯ রানে অলআউট হলো অস্ট্রেলিয়া। স্টিভেন স্মিথ এবং ডেভিড ওয়ার্নার যা একটু লড়াই করলেন বুমরাহ, জাদেজা, অশ্বিন এবং সিরাজদের বিপক্ষে। সর্বোচ্চ ৪৬ রান করলেন স্মিথ। ৪১ রান করলেন ওয়ার্নার।

বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ভারতের মাটিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। ভারতের আবহাওয়া এবং পরিবেশের সঙ্গে এরই মধ্যে নিজেদের অনেকটাই মানিয়ে নিতে পেরেছে প্যাট কামিন্স অ্যান্ড কোং। যার ফলে সবাই আশা করেছিলো, চেন্নাইতে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা হয়তো স্কোরবোর্ডে বড় রান যোগ করতে পারবে।

কিন্তু দর্শকদের হতাশই হতে হলো অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটারদের ব্যাটিং দেখে। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারছিল না অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটাররা।

চেন্নাইয়ের এম চিদাম্বরম স্টেডিয়াম পুরোপুরি স্পিন নির্ভর। ভারত নিজেদের দেশে যে সব স্টেডিয়ামে সবচেয়ে বেশি সফল, এর মধ্যে চেন্নাই একটি। উইকেট পুরোপুরি স্লো। সেখানে টস জিতে শুরুতেই ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া কতটা যুক্তিযুক্ত সেটা এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।

ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই মিচেল মার্শের উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। তৃতীয় ওভারে বুমরাহর বলে কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মার্শ। এরপর স্মিথ এবং ওয়ার্নার মিলে স্লো ব্যাটিং করলেও একটা বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। ৬৯ রানের জুটি গড়ে তোলেন তারা দু’জন। ৫২ বলে ৪১ রান করে আউট হন ওয়ার্নার।

এরপর মার্নাস লাবুশেনকে নিয়ে ৩৬ রানের জুটি গড়ে তোলেন স্মিথ। দলীয় ১১০ রানের মাথায় ফিরে যান স্মিথও। ৭১ বলে ৪৬ রান করেন তিনি। ৪১ বলে ২৭ রান করে আউট হন লাবুশেন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল করেন মাত্র ১৫ রান। অ্যালেক্স ক্যারে রানের দেখাই পেলেন না। ক্যামেরন গ্রিন ৮ রান করে আউট হন। ১৫ রান করেন প্যাট কামিন্স।

মিচেল স্টার্ক ২৮, অ্যাডাম জাম্পা করেন ৬ রান। মিচেল স্টার্ক আউট হওয়ার পরই শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। ভারতীয় স্পিনার রবিন্দ্র জাদেজা নেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন কুলদিপ যাদব এবং জসপ্রিত বুমরাহ, ১টি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ সিরাজ, হার্দিক পান্ডিয়া এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন।

মাত্র ২০০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সবাই ভেবেছিল হয়ত হেসেখেলেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যাবে ভারত। কিন্তু দলতা যখন অস্ট্রেলিয়া তখন লড়াই তাদের রক্তে মিশে আছে। প্রথম দুই ওভারে ভারতের টপ অর্ডার তছনছ করে দেন মিচেল স্টার্ক ও জশ হাজেলউড।

একে একে রোহিত শর্মা, ইশান কিশান ও শ্রেয়াস আয়ারকে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফেরান দুই অজি পেস বোলার। ২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে মুদ্রার উল্টোপিঠ দেখতে শুরু করে ভারত। কিন্তু তখনই ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত হন বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল।

কেন বিরাট কোহলিকে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান বলা হয় সেটা আবারও প্রমাণ করলেন। চাপের মুখে অজি পেসারদের আগুনের গোলা রুখে দিয়ে দলকে ঠিকই জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন লোকেশ রাহুল।

ধীর গতির ব্যাটিংয়ে উইকেট টিকিয়ে রেখে ধীরে খেলতে থাকেন লোকেশ রাহুল ও কোহলি। ৭৫ বলে নিজের হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন এই ব্যাটার। অন্য প্রান্তে রাহুলও পান হাফসেঞ্চুরির দেখা। তিনিও ৭২ বলে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি।

একসময় মনে হচ্ছিল অনবদ্য এক সেঞ্চুরি করে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যাবেন কোহলি। কিন্ত ১১৬ বলে ৮৫ রান করে হাজেলউডের বলে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই ব্যাটার। অন্যপ্রান্তে শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন রাহুল। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৩ রান দূরে থাকতে ৯৭ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন তিনি। শেষ দিকে হার্দিক পান্ডিয়া নেমে ৮ বলে ১১ রান করেন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে হাজেলউড ৩টি ও স্টার্ক ১টি করে উইকেট নেন।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.