আজ: বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৯ অক্টোবর ২০২৩, সোমবার |

kidarkar

সিদ্দিকুর রহমান একসময়ের লুণ্ঠনকারীরা এখন আমাদের মানবাধিকার শেখাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও স্টার্লিং গ্রুপের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, ‘আজ যারা মানবাধিকারের কথা বলে, যারা আমাদের মানবাধিকার শিক্ষা দিতে চায়- তারা একসময় কী ছিল? আমাদের দেশকে লুণ্ঠন করে নিয়ে গেছে। তারা আমাদের এখন মানবাধিকার শেখাচ্ছে।’

রোববার (৮ অক্টোবর) গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি আয়োজিত ‘গার্মেন্টস খাতে ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ: পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

সম্প্রতি ইউরোপ-আমেরিকায় গিয়ে সেখানে উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেখেছেন জানিয়ে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমি কয়েকদিন আগে আমেরিকা, ইউরোপ ঘুরে আসলাম। সেখানে দেখলাম খাদ্যপণ্যের দাম অন্তত ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ বেড়েছে।’

ইউরোপ-আমেরিকা এখন মানবাধিকারের কথা বললেও সেখানে শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘অথচ তাদের দেশে মানবাধিকার আছে কি না আমার একটু সন্দেহ আছে। সেখানে আমি দেখেছি আমাদের থেকেও মানবেতর জীবনযাপন করে, যারা এই ধরনের শ্রমিক তারা। আমেরিকার মতো যায়গায়ও।’

অনুষ্ঠানে পোশাক শ্রমিকের ন্যূনতম বেতন নির্ধারণ নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে সিপিডি। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রামের ৭৬ পোশাক কারখানার ২২৮ জন শ্রমিকের ওপর জরিপ করে এই গবেষণা করা হয়েছে বলা জানানো হয়।

সিপিডির গবেষণা প্রতিবেদনে কিছু তথ্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমার কারখানায় ২৫ হাজার শ্রমিক আছে। আমি তাদের ব্যাপারটা জানি। আপনারা যে স্যাম্পল নিয়েছেন, তার থেকে আমার নিজের স্যাম্পল অনেক বড়। আমি জানি আমার শ্রমিকরা কী করে, কোথায় থাকে, কী খায়, তাদের কী ব্যথা- এই জিনিসটা আমরা জানি। কারণ আমরা প্রতিনিয়ত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলি। শ্রমিকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও কথা বলি। শ্রমিকদের মধ্যে একেবারে এরকম কিছু পাই না যে তারা খুব অসুবিধার মধ্যে আছে।’

বাংলাদেশ পোশাকশিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘সিপিডির প্রস্তাবনাকে স্বাগত জানাই, আবার বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা এরই মধ্যে ৫টি শ্রমিক জোট ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা প্রস্তাবনা করে মজুরি বোর্ডে দিয়েছি।’

বিকেএমইএর এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর আমরা ঘুরে দাড়াতে পারিনি। মালিকরা বেঁচে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত। বিগত দিনে অনেক কারখানা বন্ধ হয়েছে। আগামী এক বছরে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে।’

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘বেতন না বাড়ানোর কোনো কারণই নেই। সিপিডির এই প্রস্তাবনা ন্যূনতম মজুরি বোর্ড দেখবে। তবে পোশাক শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা আগের চেয়ে বেড়েছে। তাদের ছুটি বেড়েছে।’

ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা বলেন, ‘নভেম্বরের মধ্যে গ্রহণযোগ্য বেতন কাঠামো ঘোষণা করতে পারবো বলে আশা করি। আগে গার্মেন্টসে চাকরি করলে অনেকে নাক সিটকাতো। এখন পরিবেশ ও বেতন ভালো। এখন গার্মেন্টসে চাকরি করে এমন মানুষদের অবহেলার চোখে কেউ দেখে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘মালিক-শ্রমিক দুজনই তাদের সমস্যার কথা বলেন। আমাদেরও সমস্যা আমরা কোন দিকে যাবো? আমাদের মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে হয়। সবার কথা বিবেচনা করে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়।’

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক তামিম আহমেদ।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.