আজ: বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ইং, ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৯ অক্টোবর ২০২৩, সোমবার |

kidarkar

বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কোনো শঙ্কা নেই: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা তো দূরের কথা, কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

সোমবার (৯ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা ও বিদেশি বাণিজ্যবিষয়ক স্টেট সেক্রেটারি ডিয়ানা জেনসের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।

মার্কিন প্রতিনিধিদলকে বিএনপি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে এই সরকারের অধীন তারা নির্বাচনে আসবে না- এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর টেলিফোন সত্ত্বেও তারা নির্বাচনে আসেনি। না এসে তার বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সেসময় নিউইয়র্ক টাইমসে এ বিষয়ে প্রচ্ছদ প্রতিবেদনও হয়েছে। আমি বিষয়টি ডিয়ানা জেনসকে জানিয়েছি। বাংলাদেশের নির্বাচন এদেশের সংবিধান অনুসারে হবে। কেউ তা বানচালের চেষ্টা করলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভারতীয় একটি পত্রিকায় বলা হয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আসছে। বাংলাদেশের একজন সাংবাদিকও এ বিষয়ে লিখেছেন। এ বিষয়ে আপনারা কোনো আভাস পাচ্ছেন কি না- জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, নট অ্যাট অল। তারা কোথায় এসব তথ্য পেয়েছেন, আমি জানি না। আমি খুব দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে পারি, এই দপ্তরে ১০ বছর কাজ করে যদি কিছু বুঝে থাকি, এ ধরনের কোনো শঙ্কা নেই। মানুষের মধ্যে ভয় তৈরি করতে এটা করা হয়েছে। সেই ভয়ভীতি কাজে লাগিয়ে একটা গোষ্ঠী ফায়দা লুটতে পারে।

‘আমি অনুরোধ করবো, আপনারা (সাংবাদিক) আপনাদের মেধা দিয়ে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে, সেই সঙ্গে বিদেশি, তা যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়ন হতে পারে, সেসব রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে কাজগুলো করবেন। আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, সামনে জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা তো অনেক দূরের কথা, আর কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার শঙ্কা কিংবা বাস্তবতা বা কোনো প্রেক্ষাপট নেই।’ বলেন শাহরিয়ার আলম।

তিনি বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বাংলাদেশ কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সে সম্পর্কে ডিয়ানা জেনস জানতে চেয়েছেন। আমি তাকে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগের দুবছর তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন ছিল, সেই সময়ের প্রেক্ষাপট, ২০০৮ সালের অভিজ্ঞতা, ২০১৪ সালে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বয়কট ও বানচালের অপচেষ্টার ঘটনাপ্রবাহ, জ্বালাও-পোড়াও, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস, ২০১৮ সালে সেই রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে এলেও নেতৃত্বের সংকটের কারণে তারা সেই নির্বাচনে পুরো সময় থাকেনি, এছাড়াও তাদের অপচেষ্টা এখনো যে অব্যাহত আছে- সেগুলো জানিয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণে আমাদের চেষ্টার কথাও জানিয়েছি।

‘স্বাধীনতার পরপরই সুইডেন আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছিল। বাংলাদেশের খাদ্য ও শিক্ষা নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে সুইডেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা সিডা ও সুইডিশ দূতাবাস বহু বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে। গত এক দশকে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশের অনেক উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশের বাণিজ্য, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণে সুইডেন আমাদের কী সহায়তা করতে পারে, তা নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে।’ যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের টেকনোলজি ট্রান্সফার, ডিজিটালাইজেশন ও স্মার্ট বিজনেস ইনভায়রনমেন্টে তারা কী ধরনের সহযোগিতা করতে পারেন, সে নিয়ে আলাপ হয়েছে। আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তনের বৈরী প্রভাবও উঠে এসেছে। সেখানে অভিযোজন ও প্রশমন নিয়ে কথা হয়েছে। রোহিঙ্গা সংকটও আলোচনায় ছিল। ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক সম্পর্কে তিনি জানতে চেয়েছিলেন, যা আমি তাকে বলেছি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিণতি নিয়ে কথা বলেছি। কারণ এই যুদ্ধ সুইডেনের খাদ্যনিরাপত্তার জন্যও চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। রাশিয়ার সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছি আমরা। সেটা তাকে জানিয়েছি, তিনি বিষয়টিকে স্বাগতও জানিয়েছেন।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.