অনিয়মের আখড়া এসআইবিএল, পর্ষদ পুনর্গঠনের দাবি ব্যাংকের সাবেক পরিচালকেরা
নিজস্ব প্রতিবেদক: অনিয়ম–দুর্নীতি বন্ধ ও পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের দাবিতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে বিক্ষোভ করেছেন উদ্যোক্তা ও সাবেক পরিচালকদের কয়েকজন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে ব্যাংকের কর্মকর্তারাও যোগ দেন। এতে বাধা দেন ব্যাংকের বর্তমান মালিকপক্ষের কয়েকজন। এ সময় একজন কর্মকর্তাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, ২০১৭ সালে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা নেয় চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ। ব্যাংকটির বর্তমান চেয়ারম্যান বেলাল আহমেদ, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের জামাতা। মালিকানা পরিবর্তনের সময় বাদ দেওয়া হয় ব্যাংকটির কয়েকজন উদ্যোক্তা ও পরিচালককে। এরপর ব্যাংকটি থেকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ টাকা বের করা ও চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে ব্যাংকটি ইতিমধ্যে আর্থিক সংকটে পড়েছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত চলতি হিসাবেও ঘাটতিতে রয়েছে।
ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, সরকার পরিবর্তিত হওয়ায় পর আজ বৃহস্পতিবার ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল হকের নেতৃত্বে সাবেক পরিচালক আনিসুল হক, সুলতান মাহমুদ চৌধুরী, রাব্বান আলীসহ কয়েকজন শেয়ারধারী ব্যাংকটিতে যান। ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় মতিঝিলের সিটি সেন্টারে। এ সময় তাঁরা ব্যাংকটির পর্ষদ পুনর্গঠন করে দ্রুত তাঁদের যুক্ত করার দাবি জানান। পাশাপাশি ব্যাংকটির অনিয়ম দূর করার দাবি জানান। এ সময় তাঁদের সঙ্গে ব্যাংকটির কর্মকর্তারাও যোগ দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একপর্যায়ে ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তাসহ আরও অনেকে সেখানে জড়ো হন এবং শেয়ারধারীদের বাধা দেন। যাঁরা বাধা দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই ইউনিগ্যাস লেখা পোশাক পরিধান করে ছিলেন। এ সময় আহত হন ব্যাংকটির নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ মিঞা। তাঁকে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে মাথায় প্রায় ৩০টি সেলাই দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁর চোখ নষ্ট হতে পারে বলে ব্যাংকটির কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন। এ বিষয়ে জানতে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর আলমকে ফোন করা হলে তিনি সাড়া দেননি।
ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জোর করে মালিকানা নিয়ে ব্যাংকটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নেওয়া হয়েছে। এখন সময় এসেছে পর্ষদ পুনরুদ্ধার করে ব্যাংকটিকে আগের মতো ভালো অবস্থায় নেওয়ার। এতে বাধা দিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। আমরা চাই, ব্যাংকটি প্রকৃত উদ্যোক্তা হাতে ফিরিয়ে এনে আমানতকারীদের অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। তবে এ জন্য সরকারের সহায়তা প্রয়োজন।’