আজ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ইং, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সর্বশেষ আপডেট:

০৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৫, শনিবার |

kidarkar

হরতাল-অবরোধে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে

muhitশেয়ারবাজার রিপোর্ট : চলমান হরতাল ও অবরোধের প্রভাব রাজধানী ঢাকায় তেমন না পড়লেও দেশের অন্য জেলাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর এ কারণে সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই অর্থনীতির স্বার্থে ‘জেলাগুলোকে সচল রাখতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।

সচিবালয়ে শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান সরকারের গত মেয়াদের প্রথম ৫ বছরে ও চলতি মেয়াদের প্রথম বছরে ‘বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অগ্রযাত্রা এবং সামষ্টিক অর্থনীতির সাম্প্রতিক অবস্থান’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেন মন্ত্রী।

আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘অন্যান্য সময়ে হরতাল-অবরোধে কোনো কোনো খাতকে বিশেষ ছাড় দেওয়া হতো, কিন্তু এবার তা হচ্ছে না।’ হরতাল-অবরোধে কী পরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষতি নিরূপণে সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আগামী মার্চে এ সব হিসাব-নিকাশ করা হবে।’ ‘ব্যবসায়ীরা যেসব ক্ষতির পরিসংখ্যান তুলে ধরছেন’—এগুলোর যথার্থতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

‘এ অবস্থা কতদিন চলবে’ জানতে চাইলে মুহিত বলেন, ‘আমি জানি না।’ সংকট কাটাতে সংলাপের বিষয়েও তিনি কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

‘চলমান পরিস্থিতিতে সরকার পরিচালনায় বাজেট থেকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে কিনা’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতির কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। তাদের জন্য অতিরিক্ত অর্থ দিতে হচ্ছে।’

‘বাংলাদেশ অনেক ভাল করছে’ এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া দেশ ধ্বংসের পাঁয়তারা করছেন। এটা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এর একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করা।’

দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘শুরুতে বর্তমান সরকারের কৌশল ছিল, বাজেটের আকার বাড়ানো। কারণ বাজেটের আকার বাড়ানো না গেলে সরকারি কার্যক্রম ব্যাপক হতে পারে না। আর বাজেটের আকার বাড়ানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সঞ্চয়। তখন অভ্যন্তরীণ সঞ্চয় যা ছিল তা আমাদের পছন্দ হয়নি। একই সঙ্গে বৈদেশিক সাহায্যও কমে গিয়েছিল। বৈদেশিক সাহায্য আমরা তেমন বাড়াতে পারিনি। তবে সাহায্য প্রাপ্তির অঙ্গীকার অনেক বেড়েছে। অর্থছাড় আগের মতই কম। এছাড়া মানব সম্পদ উন্নয়নেও বর্তমান সরকার বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কারণে দারিদ্র ও বৈষম্য কমেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকারের পাঁচ বছরে মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ হয়েছে, আমদানি-রফতানি. রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রিজার্ভ অনেক বেড়েছে।’ বিদ্যুৎ খাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি বলি না যে, দেশে বিদ্যুতের সংকট নেই। তবে চাহিদা ও সরবরাহের পার্থক্য এখন কমে এসেছে। আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে সক্ষমতা আছে, এর চেয়ে ৩০ শতাংশ কম বিদ্যুৎ আমরা উৎপাদন করতে পারি।’

চলমান পরিস্থিতিতে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে গভীর সংশয় প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৮ সাল নাগাদ জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ১০ শতাংশে উন্নীত করতে হলে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হবে। এক কেন্দ্রীভূত পরিকল্পনা দিয়ে হবে না।’

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ড. আসলাম আলম বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় খেলাপী ঋণ বেড়েছে।’ নিম্নমানের ঋণ প্রদানের কারণেই এটা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অর্থসচিব, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিবসহ বিভিন্ন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মতামত দিন

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.